Advertisement
E-Paper

জম্মুতে গিয়ে খোঁজ নেই ১৭ জনের, চিন্তায় বাড়ি

কারও সঙ্গে ৭ দিন, কারও সঙ্গে ১০ দিন আগে ফোনে কথা হয়েছিল। তার পর থেকে যোগাযোগ পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন। জম্মু-কাশ্মীরে কাজে যাওয়া ঘরের ছেলেদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে না পেরে চিন্তায় খাওয়া-ঘুম উড়ে গিয়েছে পরিবারের। ছেলেদের ফিরে পেতে নলহাটি থানা এলাকার ওই সব বাসিন্দারা প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০২:১৬
ঘরের ছেলেদের পথ চেয়ে বসে পরিবার। নলহাটিতে তোলা নিজস্ব চিত্র।

ঘরের ছেলেদের পথ চেয়ে বসে পরিবার। নলহাটিতে তোলা নিজস্ব চিত্র।

কারও সঙ্গে ৭ দিন, কারও সঙ্গে ১০ দিন আগে ফোনে কথা হয়েছিল। তার পর থেকে যোগাযোগ পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন। জম্মু-কাশ্মীরে কাজে যাওয়া ঘরের ছেলেদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে না পেরে চিন্তায় খাওয়া-ঘুম উড়ে গিয়েছে পরিবারের। ছেলেদের ফিরে পেতে নলহাটি থানা এলাকার ওই সব বাসিন্দারা প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছেন। নলহাটির পুরপ্রধান রাজেন্দ্রপ্রসাদ সিংহ বলেন, “বিষয়টি মহকুমাশাসক এবং জেলাশাসককে জানানো হয়েছে।”

প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, নলহাটি এলাকার ১৭ জন যুবক ঈদের পরে পরে জম্মু-কাশ্মীরে কাজে গিয়েছেন। ওই ১৭ জনের জন্য ১৫ জনের বাড়ি নলহাটির ১২ নম্বর ওয়ার্ডে। বাকি দু’জন নলহাটি থানার জ্যেষ্ঠা গ্রামের বাসিন্দা। কিন্তু সেখানে সাম্প্রতিক বন্যা পরিস্থিতির জন্য তাঁদের সঙ্গে কোনও ভাবে যোগাযোগ করতে পারছেন না পরিবারের লোকজন। ওই ওয়ার্ডের পাহাড়ি এলাকার ঝর্না পাড়ার বাসিন্দা মিলন শেখ বললেন, “ভাই রিপন ঈদের পর এলাকার ৮ জন ছেলের সঙ্গে জম্মুতে কাজের জন্য গিয়েছে। ওখানে পৌঁছে সে জানিয়েছিল, শ্রীনগরের কাছে এয়ারপুর থানা এলাকার এঙ্গেরপুর বাটপুরাতে আছে। আপেল বাগানে কাজ করছে বলে জানিয়েছিল। কিন্তু সাত দিন আগে কথা হওয়ার পর আর কোনও কথা হয়নি। এ দিকে সেখানে বন্যা পরিস্থিতির খবর টিভিতে দেখার পর থেকেই চিন্তা বেড়ে গিয়েছে।” মা রিজিয়া বিবি বলেন, “সাত দিন আগে ছেলে বলেছিল ওখানে খুব বৃষ্টি হচ্ছে। বৃষ্টির জন্য কাজ হচ্ছে না। অসুস্থ বাবার শরীর কেমন আছে জানতে চেয়েছিল। কিন্তু এখন ছেলেই বা কেমন আছে কিছুই বুঝতে পারছি না।” বছর তেইশের রিপনের সঙ্গে সমবয়সী পাড়ার ছেলে আশরাফুলও এ বার প্রথম জম্মুতে কাজে গিয়েছে। বাবা আলাউদ্দিন শেখ বললেন, “দশ দিন আগে আমরা ফোন করেছিলাম। ছেলে আপেল বাগানে কাজ পাওয়ার কথা জানিয়েছিল। ভাল আছে বলে সে বলেছিল। কিন্তু এখন আর যোগাযোগ করা যাচ্ছে না।”

রিপন কিংবা আশরাফুল বন্যা পরিস্থিতির মধ্যে পড়লেও এ ধরনের কোনও বিপদের মুখে পড়তে হয়নি পাহাড়ি গ্রামের যুবক ওয়াসিমুদ্দিন শেখকে। শরীর খারাপের কারণে তিনি আগেই ফিরে এসেছেন। ওয়াসিমুদ্দিন জানালেন, এলাকায় পাথর খাদানে তেমন আর কাজ পাওয়া যায় না। সে জন্য দু’মাস আগে মুর্শিদাবাদের সাগরদিঘি থানার বাহালনগর গ্রামের একজনের মাধ্যমে কাশ্মীরে আপেল বাগান দেখভাল করার কাজ করতে যান। গ্রাম থেকে প্রথমে ৫ জন গিয়েছিলেন। কাশ্মীরের হাঙ্গেলপুর বাটপুরা এলাকায় ছিলেন তাঁরা। ওখানে আপেল বাগানে সকাল ৮টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত কাজ করার জন্য মাসে সাড়ে ৯ হাজার টাকা করে পেতেন। তিনি বলেন, “আমাদের যাওয়ার পরে গ্রাম থেকে আরও ছ’জন ছেলে ওখানে গিয়েছে। দু’জন ঈদের জন্য বাড়ি চলে এসেছিল। পরে আরও ১৭ জন ওখানে কাজ করতে যায়। আমার শরীর খারাপ হওয়ার জন্য বাড়ি চলে আসি। আমার সঙ্গে আরও দশ জন চলে আসে। পরে আরও তিন জন বন্যার আগে বাড়ি ফিরে আসে।”

এখন ওখানে পাহাড়ি এলাকার ১৫ জন কাজ করছেন বলে ওয়াসিমুদ্দিন জানিয়েছেন। এ দিকে তাঁদের সঙ্গে ফোনে কোনও যোগাযোগ করতে না পেরে পরিবারের লোকজন প্রশাসনের দ্বারস্থ হন। রামপুরহাট মহকুমাশাসক উমাশঙ্কর এস বলেন, “এলাকাবাসী ঠিকমতো যোগাযোগের ঠিকানা দিতে পারছেন না। ফোন নম্বর থাকলেও যোগাযোগ হচ্ছে না। আমাদের তরফ থেকে চেষ্টা চালানো হচ্ছে। দেখা যাক কী করা যায়।”

nalhati kashmir flood
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy