Advertisement
E-Paper

বই লেনদেন সহজ করতে নিজস্ব অ্যাপ

মাস দেড়েকের মধ্যেই সেমেস্টার। তার আগে গ্রন্থাগারের যাবতীয় বই নিয়ে পড়ুয়াদের চিন্তামুক্ত করতে বিশ্বভারতী লাইব্রেরি নেটওয়ার্কের নিজস্ব মোবাইল অ্যাপ-এর উদ্বোধন হল।

দেবস্মিতা চট্টোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২৫ মার্চ ২০১৮ ০২:৩৫

মাস দেড়েকের মধ্যেই সেমেস্টার। তার আগে গ্রন্থাগারের যাবতীয় বই নিয়ে পড়ুয়াদের চিন্তামুক্ত করতে বিশ্বভারতী লাইব্রেরি নেটওয়ার্কের নিজস্ব মোবাইল অ্যাপ-এর উদ্বোধন হল।

শনিবার, কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের কনফারেন্স হলে এই অ্যাপ-এর উদ্বোধন করেন বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য সবুজকলি সেন। উপস্থিত ছিলেন জীবনব্যাপী শিক্ষা ও সম্প্রসারণ বিভাগের বিভাগীয় প্রধান সুজিতকুমার পাল, বিশ্বভারতী কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের উপ-গ্রন্থাগারিক নিমাইচাঁদ সাহা সহ অন্য আধিকারিকেরা।

বিশ্বভারতী গ্রন্থাগারের এই মোবাইল অ্যাপটির নাম ‘এলসার্চ’। গুগল প্লে-স্টোর থেকে ডাউনলোড করে মোবাইলে ইন্সটল করে নিলেই কাজ করবে এই অ্যাপটি। এমনিতে মোবাইলের যে কোনও সংস্থার ইন্টারনেট সংযোগ থেকেই খোলা যাবে অ্যাপ।
যদি পড়ুয়ারা ওয়াই-ফাই ব্যবহার করে অ্যাপটি খুলতে চান, সেক্ষেত্রে আপাতত বিশ্বভারতীর নিজস্ব ওয়াই-ফাই ছাড়া খোলা যাবে না। অ্যাপ ডাউনলোড করতে যে কোনও রকমের সমস্যা হলে গ্রন্থাগারের আধিকারিকেরা সহায়তা করবেন। ব্যবহারকারীর পরিচয়পত্র হিসেবে পড়ুয়াদের লাইব্রেরি কার্ড নম্বরটি দিতে হবে। আর সাধারণ ভাবে পাসওয়ার্ড দেওয়া হয়েছে তা হল, ক্যাপিটাল লেটারে ভিবিইউ লিখে তার পরে ইংরেজি সংখ্যায় এক, দুই, তিন। এই পাসওয়ার্ড ছাত্রছাত্রীরা নিজেদের ইচ্ছে মতো পরিবর্তন করতে পারবেন।

কী কী সুবিধা পাবেন পড়ুয়ারা?

এই মুহূর্তে বিশ্বভারতীর প্রত্যেকটা গ্রন্থাগার মিলে বই আছে ৮ লক্ষ ৫৪ হাজার। এর মধ্যে কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারেই রয়েছে ৪ লক্ষ ৪০ হাজার বই। বিশ্বভারতীর পড়ুয়া, গবেষক, অধ্যাপক-অধ্যাপিকা থেকে কর্মী— যাঁদেরই লাইব্রেরি কার্ড রয়েছে তাঁরা বই তুলে নিয়ে যেতে পারেন। এই ‘এলসার্চ’ অ্যাপ-এর মাধ্যমে কোন বই কবে তোলা হল, কবে জমা দিতে হবে কিংবা জমা দেওয়ার দিন থেকে কত দিন পেরিয়ে গিয়েছে সব কিছুই বাড়ি বসে জানা যাবে। এমনকি গ্রন্থাগারে কোন বই আছে কি নেই, সে ব্যাপারেও চকিতে জানা যাবে।

আগে বিশ্বভারতীর গ্রন্থাগার যাঁরা ব্যবহার করতেন, তাঁদের যে লাইব্রেরি কার্ড দেওয়া হত সেখানে বই তোলার দিন, কবে জমা করতে হবে, কবে জমা হল এই সব লেখার জন্য আলাদা আলাদা ঘর থাকত। দেখতে ছিল ঠিক একটি বই এর মতো। বর্তমানে তৈরি হয়েছে ডিজিটালাইজড্ কার্ড। যেখানে এই সব লিখে রাখার কোনও উপায় নেই। বারকোডের মাধ্যমে দেখে নিয়ে বই তোলা কিংবা জমা দেওয়ার কাজ হয়। বই তোলার ক্ষেত্রে নিয়ম হল, এক মাসের মধ্যে বই জমা দিতে হবে। আর জমা যদি না-ও দেওয়া হয়, সেক্ষেত্রে এক মাসের মধ্যে একবার ফের ইস্যু করিয়ে নিয়ে যেতে হবে বইটি। সমস্যাটা হচ্ছিল, কবে বই তোলা হচ্ছে, সেই দিনটাকেই অনেক পড়ুয়া মনে রাখতে পারছিলেন না। তার জন্যই এক মাসের মধ্যে বই জমা দেওয়া কিংবা আবার বই ইস্যু করানো এই পদ্ধতিতে সমস্যা হচ্ছিল।

এ সবের সমাধান হিসেবেই উদ্বোধন করা হল নিজস্ব অ্যাপটির। উপ গ্রন্থাগারিক নিমাইচাঁদ সাহা বলেন, ‘‘আরও এক ধাপ এগিয়ে গেল বিশ্বভারতীর লাইব্রেরি পরিষেবা।’’ হাঁফ ছেড়ে বাঁচলেন বিশ্বভারতীর সাধারণ ছাত্রছাত্রীরাও। তাঁদের কথায়, ‘‘বই যে কবে তুলে নিয়ে এলাম, সেটা মনে রাখার জন্য কত কি না করতে হয়েছে। এ বার সে সব ঝামেলা থেকে মুক্তি।’’

শনিবার যেমন অ্যাপ-এর উদ্বোধন হল, তেমনই একই সঙ্গে হল বই বিতরণের কাজ। বিশ্বভারতীর প্রাক্তনী কল্যাণী চক্রবর্তী ও তাপসকুমার চক্রবর্তী তাঁদের লেখা বিভিন্ন বইয়ের ২৭০টি কপি তুলে দেন বিশ্বভারতীর হাতে। বইগুলির মধ্যে কিছু থাকবে বিশ্বভারতীর কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারে। কিছু থাকবে ১২টি বিভাগীয় গ্রন্থাগারে। এ ছাড়াও বিশ্বভারতীর জীবনব্যাপী শিক্ষা ও সম্প্রসারণ বিভাগের তত্ত্বাবধানে খোসকদমপুর, তালতোড়, রায়পুর, কামারপাড়া সহ যে ৩৪টি গ্রামীণ গ্রন্থাগার রয়েছে, সেখানকার প্রতিনিধিদের হাতেও বই তুলে দেওয়া হয়। লেখক ও লেখিকা স্বয়ং উপস্থিত ছিলেন শনিবারের অনুষ্ঠানে। তাঁদের কথায় উঠে আসে লাইব্রেরি নিয়েই অনেক পুরোনো স্মৃতি।

বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য সবুজকলি সেন অনুষ্ঠান শেষে বলেন, ‘‘শান্তিনিকেতনের রাস্তায় যেমন নুড়ি-পাথর রয়েছে, তেমনই পরশপাথরও রয়েছে। ছাত্রছাত্রীরা কোনটাকে নেবে, সেটা তাঁদের উপরে নির্ভর করছে। অ্যাপ আর বই, দুই’ই পড়ুয়াদের কাজে লাগবে। তাদের জন্যই এই উদ্যোগ।’’

Visva Bharati University Mobile Application Library Network
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy