Advertisement
E-Paper

দুর্গাপুজোয় নজরমিনার চালু বক্সায়

তিন তলা বাড়ির সমান উঁচু নজরমিনারের চার দিক জঙ্গলে ঘেরা। এক পাশ দিয়ে তিরতির করে বয়ে যাচ্ছে বালা নদী। মিনারে উঠলে স্পষ্ট দেখা যায়, নদীর এক পাশের কাশ বাগান এখন ফুলে ভরে গিয়েছে। বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের জঙ্গলে ‘সম্বর’ নজর মিনারে এত দিন শুধুমাত্র বনকর্মীরাই উঠতে পারতেন। মিনার থেকে নজরদারির কাজ করা হত। পুজোর আগে এই নজরমিনার খুলে দেওয়া হচ্ছে পর্যটকদের জন্য।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০১:৪২
এই সেই নজর মিনার। ছবি: নারায়ণ দে।

এই সেই নজর মিনার। ছবি: নারায়ণ দে।

তিন তলা বাড়ির সমান উঁচু নজরমিনারের চার দিক জঙ্গলে ঘেরা। এক পাশ দিয়ে তিরতির করে বয়ে যাচ্ছে বালা নদী। মিনারে উঠলে স্পষ্ট দেখা যায়, নদীর এক পাশের কাশ বাগান এখন ফুলে ভরে গিয়েছে। বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের জঙ্গলে ‘সম্বর’ নজর মিনারে এত দিন শুধুমাত্র বনকর্মীরাই উঠতে পারতেন। মিনার থেকে নজরদারির কাজ করা হত। পুজোর আগে এই নজরমিনার খুলে দেওয়া হচ্ছে পর্যটকদের জন্য। শুধু ২২ মাইলের সম্বর নয়, এবার থেকে পর্যটকরা যেতে পারবেন ২৫ মাইল এলাকার নজরমিনার ‘হাতি’তেও। পুজোয় পর্যটকদের জন্য ২টি নজরমিনার ছাড়াও জঙ্গলের কোর এলাকার বেশ কিছু পথে সাফারির সুযোগ থাকছে। জলদাপাড়া গরুমারার মতন বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পেও জিপসি গাড়ি করে জঙ্গল ঘুরে বন্যপ্রাণীদের দেখার সুযোগ মিলবে।

বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের দুই বিভাগের দুই ডিএফডি এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন। পশ্চিম বিভাগের ডিএফডি অপুর্ব সেন বলেন, “পুজোর আগেই নতুন জঙ্গল পথ এবং নজর মিনার খুলে দেওয়া হবে। পর্যটকদের নতুন অভিজ্ঞতা হবে।” অন্য দিকে, পূর্ব বিভাগের ডিএফডি জে ভি ভাস্কর বলেন, “আশা করছি পর্যটকদের সংখ্যা বাড়বে। গাড়ির ক্ষেত্রে কিছু বিধিনিষেধ রাখা হচ্ছে। তাতে অবশ্য পর্যটকদের কোনও সমস্যা হবে না।”

বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ফি বছর ১৫ জুন থেকে থেকে তিন মাস পর্যটকদের জন্য জঙ্গল বন্ধ থাকে। আগামী ১৬ সেপ্টেম্বর জঙ্গল খোলার দিন থেকে বক্সার নতুন মিনার এবং পথ খুলে দেওয়া হচ্ছে বলে জানানো হয়েছে।” রাজাভাত খাওয়া থেকে সকাল ৬টা ও দুপুর সাড়ে তিনটের সময় দু’বার জঙ্গলে বাণিজ্যিক নম্বরের পেট্রল চালিত জিপসিকে পর্যটকদের নিয়ে ঢুকতে দেওয়া হবে। প্রতিটির জন্য প্রবেশ মূল্য দিতে হবে। তবে নজরদারিতে নিয়ন্ত্রণ রাখার জন্য শুধুমাত্র বনবস্তির বাসিন্দাদের জিপসিকেই জঙ্গলে ঢোকার অনুমোদন দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে। ২২ মাইলের নজরমিনার হয়ে ২৫ মাইল যাওয়া যাবে। তার পরে কোর এলাকার শিকারি রোড, চুনিয়া, পুখরি এলাকায় পর্যটকরা যেতে পারবেন। ভুটান ঘাট এলাকা প্রায় দশ বছর পর্যটকদের জন্য বন্ধ ছিল। পূর্ব দমনপুর রেঞ্জের রেঞ্জ অফিসার ভবেন ঋষি বলেন, “নতুন নজরমিনারের তিন তলায় পর্যটকরা বসতে পারবেন। প্রতিদিন হাতির পাল বাইনস ও হরিন নজরমিনারের কাছে আসে। বন্যপ্রাণীদের আরও বেশি সংখ্যায় আকর্ষণ করার জন্য। ডাঢা, পুরুন্ডি, চেপটি, মালসা ঘাস লাগানো হচ্ছে।”

বসার ব্যবস্থা।

২০১০ সালে বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের জয়ন্তী সহ বেশ কয়েকটি রুটে বন দফতর ‘কার সাফারি’ বন্ধ করে দিয়েছিল। ঘটনার জের পর্যটকদের সংখ্যাও কমে আসে বলে জানা যায়। পরে বনবস্তিবাসী ও ট্যুর গাইডের দাবি মেনে ২০১২ সালে মহাকাল, চুনিয়া, পুখরি ও শিকারী রোডে পর্যটকদের যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়। বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের আকর্ষণের কেন্দ্রে ভুটান ঘাট, ২২ মাইল. ২৫ মাইল টাওয়ারের পর্যটকদের ঢোকার অনুমতি ছিল না। জয়ন্তী এলাকার টুরিস্ট গাইড সংগঠনের তরফে শেখর ভট্টাচার্য বলেন, “জঙ্গলে পুখরি, মহাকাল ও চুনিয়া নজরমিনারে পর্যটকরা যেতে পারতেন। তবে এবার বেশ কয়েকটি নতুন নজরমিনারে যাওয়ার ছাড়পত্র মেলায় বক্সা জঙ্গলে পুজোর সময়ে পর্যটকদের ভিড় বাড়বে বলেই আশা করছি।’ জঙ্গল সাফারির গাড়িগুলিকে বাণিজ্যিক নম্বর ব্যবহার করতে নির্দেশ দিয়েছেন বন দফতর। বাণিজ্যিক নম্বরের গাড়ি জোগাড়ে কিছু সমস্যা হচ্ছে বলে গাইডগের তরফে জানানো হয়েছে। ইতিমধ্যে জয়ন্তীতে কয়েকটি গাড়ি জোগাড় হয়েছে বলেও জানা গিয়েছে। বাণিজ্যিক নম্বর পেতে বন দফতরকেও সাহায্যের আর্জি করা হয়েছে বলে সংগঠনের তরফে জানানো হয়েছে। পর্যটন ব্যবসায়ী নিতু ভট্টাচার্য বলেন, “রাজাভাতখাওয়ায় ৩টি জিপসি রয়েছে। পর্যটক বাড়লেও গাড়িও বাড়বে। সমস্যা হবে না”

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy