‘স্মার্ট সিটি’র চূড়ান্ত তালিকায় শিলিগুড়ি নাম না থাকায় শহরে ক্ষোভ দানা বাঁধছে। বৃহস্পতিবার বিকেলে ওই তালিকা ঘোষণা করেছে কেন্দ্র। এর পরেই শিলিগুড়ির নানা মহলের ক্ষোভের সঞ্চার হয়। কারণ, গোটা শিলিগুড়ি আশা করেছিল, ওই প্রকল্পের সুবিধা মিলবে। কিন্তু তা হল না। এবং তা নিয়ে রাজনৈতিক চাপানউতোরও শুরু হয়ে গিয়েছে।
যেমন, কংগ্রেস থেকে আরএসপি, ফরওয়ার্ড ব্লকের মত দলগুলি অভিযোগ তুলেছে কেন্দ্রে ক্ষমতায় থাকা বিজেপির দিকেই। তেমনিই, একে রাজ্যের ব্যর্থতা বলেও তাঁরা দাবি করেছেন। দলগুলির নেতাদের অভিযোগ, রাজ্যের বিজেপির দুই সাংসদের মধ্যে একজন দার্জিলিঙের। শিলিগুড়ি তাঁর নির্বাচনী ক্ষেত্রের মধ্যেই রয়েছে। তার পরে এই তালিকা থেকে বোঝা গেল, সাংসদ দিল্লিতে কেন্দ্রীয় সরকারের নীতি নির্ধারণে কোনও ভূমিকাই নিতে পারছেন না। আবার, রাজ্যের শাসক তৃণমূল সরকারও দিল্লি থেকে কোনও কিছু আদায় করতে পারছে না।
জেলা কংগ্রেস সভাপতি তথা বিধায়ক শঙ্কর মালাকার বলেন, ‘‘বিজেপি সরকার তো বটেই এটা রাজ্যের ব্যর্থতা। শিলিগুড়ি তো বটেই আবার উত্তরবঙ্গকে বঞ্চিত করা হল।’’ বাম শরিকদের অন্যতম আরএসপি’র জেলা সম্পাদক বিনয় চক্রবর্তী বলেন, ‘‘শিলিগুড়ির অবমাননা করা হল। এলাকায় সাংসদ বিজেপি’র। তিনি কি করলেন তাই তো বুঝতে পারলাম না। আধুনিক নগরান্নয়নের একটি প্রকল্প থেকে শহর বঞ্চিত হল।’’
আর ফরওয়ার্ড ব্লকের জেলা সম্পাদক অনিরুদ্ধ বসু গোটাটাকেই ভোটের রাজনীতি বলে অভিযোগ করেছেন। তাঁর কথায়, ‘‘লোকসভা ভোটের আগে থেকে বিজেপি শিলিগুড়িকে স্মার্ট সিটি’তে অন্তর্ভুক্ত করার প্রচার করেছিল। সেটা যে আদতে ভোটের চমক, মিথ্যা প্রতিশ্রুতি তা প্রমাণ হল। আবার তৃণমূল সরকারও যে কোনও রকম প্রচেষ্টা শিলিগুড়ির জন্য নেয়নি তাও বোঝা গেল।’’
উত্তরবঙ্গে একমাত্র শিলিগুড়িতেই ‘পুর কর্পোরেশন’ রয়েছে। রয়েছে শিলিগুড়ি মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারেটও। সে হিসেবে শিলিগুড়ি ইতিমধ্যেই ‘সিটি’ পর্যায়ে অর্ন্তভুক্ত হওয়ার পথে। সেই সঙ্গে উত্তরপূর্ব ভারতের সঙ্গে যোগাযোগের অন্যতম কেন্দ্রস্থল শিলিগুড়ি। স্মার্ট সিটি প্রকল্পে আওতাভুক্ত হলে যোগাযোগ থেকে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, নিকাশি, যানবাহন এবং এমনকী তথ্য প্রযুক্তি ক্ষেত্রেও কেন্দ্রীয় সরকারের বিপুল বরাদ্দ পাবে সংশ্লিষ্ট শহর। সে করাণেই প্রস্তাবে শিলিগুড়ি অর্ন্তভুক্ত হয়েছিল। যদিও, শিলিগুড়ির ভাগ্যে সেই শিকে না ছেড়ায় ক্ষুব্ধ শহরের বাসিন্দারা। ক্ষোভ দানা বেঁধেছে বিশিষ্টজনেদের মধ্যে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোরও।
উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী গৌতম দেবের কথায়, ‘‘দার্জিলিং তথা শিলিগুড়ির সাংসদ কেন্দ্রের শাসক দলের তিনি সংসদের নানা কমিটিতেও আছেন বলে শোনা যায়। তিনি বিশেষ ভাবে শিলিগুড়ির জন্য এই বরাদ্দ আনতে পারেলন না কেন তা মানুষ জানতে চাইছে।’’ যদিও বিজেপির দার্জিলিং জেলা সভাপতি রথীন বসুর পাল্টা দাবি, ‘‘আমরা যতদূর জানি রাজ্য সরকার স্মার্ট সিটির প্রস্তাবে শিলিগুড়ির নাম রাখেনি। তার খেসারত শহরবাসীকে দিতে হল। রাজ্য সরকার নাম না পাঠালে কারও কিছু করার নেই। এখন তৃণমূল উল্টে আমাদের ঘাড়ে দোষ চাপাতে চাইছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy