Advertisement
E-Paper

রায়ের পরেও ঠিকানা পাননি বিধবা

নির্যাতিতা বিধবা রুমাদেবীর অভিযোগ, স্বামীর অকাল মৃত্যুর পর তাঁকে ও তাঁর মেয়েকে সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করতে সক্রিয় হয় শ্বশুরবাড়ির লোকজন। বাড়ি ও দোকান কোনওটিরই ভাগ তাঁদের দিতে নারাজ তাঁরা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০২:৪০

আদালতের রায় তাঁর পক্ষে গেলেও ঘরে ফিরতে পারছেন না নির্যাতনের শিকার এক বিধবা।

দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাটের খিদিরপুর এলাকার বাসিন্দা রুমা শূরকে তাঁর শ্বশুরবাড়ির লোকেরা গত ১২ অগস্ট জোর করে বাড়ি থেকে বার করে দেয় বলে অভিযোগ। সেই থেকে এক মাস ধরে তিনি আত্মীয়দের বাড়ি ঘুরে ঘুরে কাটাচ্ছেন। থানা পুলিশ, সমাজকল্যাণ দফতর, প্রোটেকশন অফিসারের দফতরে ঘুরেও বিচার পাননি বলে অভিযোগ।

নির্যাতিতা বিধবা রুমাদেবীর অভিযোগ, স্বামীর অকাল মৃত্যুর পর তাঁকে ও তাঁর মেয়েকে সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করতে সক্রিয় হয় শ্বশুরবাড়ির লোকজন। বাড়ি ও দোকান কোনওটিরই ভাগ তাঁদের দিতে নারাজ তাঁরা। এর বিরুদ্ধে তিনি ২০১২ সালে ভাসুর, ভাসুরের ছেলে ও তাদের স্ত্রীদের বিরুদ্ধে বালুরঘাট আদালতে পারিবারিক নির্যাতনের (ডোমেস্টিক ভায়োলেন্স) মামলা দায়ের করেন। ৫ বছর মামলা চলার পর ২০১৭ সালের ৩ মে নির্যাতিতা রুমাদেবীর পক্ষে রায় দেয় আদালত। জেলা পুলিশ সুপার এবং প্রোটেকশন অফিসারকে তাঁকে ঘরে ফেরানোর ব্যবস্থা করার নির্দেশ দেন। রুমাদেবীর উপর যাতে কোনও অত্যাচার না হয় তা নিশ্চিত করার জন্যও পুলিশকে নির্দেশ দেওয়া হয়।

এ দিন রুমাদেবী বলেন, ‘‘আদালতের রায়ের পর ওরা চুপচাপই ছিল। শহরের সাধনা মোড়ে আমার স্বামীর তৈরি সিটিগোল্ডের গয়নার দোকান চালিয়ে কোনও মতে চলছিলাম। বছর চব্বিশের একমাত্র মেয়ে কলকাতায় থেকে পড়াশোনা করে। ১২ অগস্ট বিকেলে অভিযুক্তরা আমাকে গালিগালাজ করে মারতে মারতে জোর করে বাড়ি থেকে বের করে ঘরে তালা ঝুলিয়ে দেয়।’’ রুমাদেবী আদালতের রায়ের কপি নিয়ে ফের প্রশাসনের দ্বারস্থ হন। কিন্তু গত ৬ সেপ্টেম্বর আদালতের রায় কার্যকর করতে গিয়েও ফিরে আসে পুলিশ। কারণ তাঁর শ্বশুরবাড়ির লোকজন দাবি করেন, বাড়ির যে অংশে রুমাদেবী থাকেন, সেই জায়গা তাদের নামে দলিলে নথিভুক্ত রয়েছে। ফলে ওই ঘরে বসবাসের কোনও অধিকার রুমাদেবীর নেই। রুমাদেবীর আইনজীবী প্রদীপ মিত্রের বক্তব্য, ‘‘বাড়ির জায়গা রেকর্ডের বিষয়টি এই ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। আদালত ওই বিধবা মহিলাকে বাড়িতে বসবাস করতে দেওয়ার পক্ষে রায় দিয়েছেন। প্রশাসনের উচিত আদালতের রায় কার্যকর করা।’’

জেলা সমাজকল্যাণ আধিকারিক শৈলেন্দ্রকুমার তিওয়ারি বলেন, ‘‘মহিলার অসহায় অবস্থার প্রতি আমি সহানুভূতিশীল। প্রোটেকশন অফিসার তরুণকুমার সামন্ত বিষয়টি দেখছেন।’’ জেলা পুলিশ সুপার প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, পুলিশ ওই মহিলাকে ঘরে ঢুকিয়ে দিতে গিয়েছিল। কিন্তু তালা ভাঙার অধিকার পুলিশের নেই বলে ফিরে আসতে হয়েছে। পুলিশ সুপার বলেন, ‘‘আজ, শুক্রবারের মধ্যে বালুরঘাট থানার আইসি এবং মহিলা থানার ওসিকে একজন ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে তালা ভেঙে রুমাদেবীকে ফেরানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’’

Widow Adress Court Verdict
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy