মিড-ডে মিলের টাকা তছরুপের অভিযোগে গ্রেফতার হলেন খোদ প্রধানশিক্ষক। বুধবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে মালদহের গাজলে। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতের নাম নয়নচন্দ্র রায়। তিনি গাজলের মশালদিঘি শিবব্রতী বিদ্যাপীঠ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। ব্লক প্রশাসনের অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত করে গ্রেফতার করা হয় নয়নবাবুকে। বৃহস্পতিবার তাঁকে মালদহ জেলা আদালতে পেশ করা হলে জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। দুর্নীতির অভিযোগে খোদ প্রধানশিক্ষক গ্রেফতার হওয়ার ঘটনায় শোরগোল পড়েছে জেলার শিক্ষা মহলে।
ইংরেজবাজার শহরে ২৯ নম্বর ওয়ার্ডের কৃষ্ণপল্লির বাসিন্দা নয়নবাবু দীর্ঘদিনই ওই স্কুলের প্রধানশিক্ষক। অভিযোগ, ২০১২ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১৫ সালের জুলাই পর্যন্ত স্কুলের পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়াদের মিড-ডে মিল খাওয়ানোয় ব্যাপক গরমিল হয়েছে। পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত ১২ হাজার ৩৫২ জন ছাত্রছাত্রীকে খাওয়ানো হয়েছে। তবে খাতায় কলমে পড়ুয়ার উপস্থিতি ৫ হাজার ১১৫ জন। তাই দ্বিগুণ ছাত্র-ছাত্রীদের উপস্থিতি দেখিয়ে বছরের পর বছর অনিয়ম করা হয়েছে বলে অভিযোগ নয়নবাবুর বিরুদ্ধে। এ ছাড়া গড়ে ক্লাস ১৮ দিন হলেও প্রধান শিক্ষক ২১ দিন ক্লাস হয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন বলেও অভিযোগ।
এই সব অভিযোগ তুলে গত ৮ এপ্রিল নয়নবাবুর বিরুদ্ধে ব্লক প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ওই স্কুলেরই পরিচালন সমিতির সভাপতি জ্যোতিষচন্দ্র মণ্ডল-সহ অন্য সদস্যেরা। অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত কমিটি গড়েন গাজলের বিডিও বিষ্ণুপদ চক্রবতী। তদন্তে প্রধানশিক্ষকের বিরুদ্ধে গাফিলতি প্রমাণিত হওয়ায় ১অগস্ট গাজল থানায় লিখিত অভিযোগ করেন বিডিও।
তদন্তে নেমে প্রথমে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নয়নবাবুকে আটক করে পুলিশ। জেরার সময় কথায় অসঙ্গতি থাকায় গ্রেফতার করা হয় তাঁকে। পরিচালন সমিতির সভাপতি বলেন, ‘‘প্রধানশিক্ষকের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরেই অভিযোগ আসছিল। বিভিন্ন নথি হাতে পেয়ে আমরা ব্লক প্রশাসনের কাছে পুরো বিষয়টি জানিয়ে লিখিত অভিযোগ করেছিলাম। ছেলে-মেয়েদের খাবার নিয়ে দুর্নীতি মেনে নেওয়া যায় না।’’ বিডিও বিষ্ণুপদ চক্রবতী বলেন, ‘‘তদন্তে গাফিলতি প্রমাণিত হওয়ায় থানাতে অভিযোগ জানানো হয়েছিল। পুলিশকে পুরো ঘটনাটি খতিয়ে দেখতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy