অজয় এডওয়ার্ড। —ফাইল চিত্র।
ভোটের আগে, দার্জিলিং শহরে নতুন করে বেআইনি নির্মাণের অভিযোগ উঠল৷ পুরসভার নাকের ডগায় কী করে পাঁচ তলা, ছ’তলা বহুতল তৈরি হচ্ছে প্রশ্ন তুললেন হামরো পার্টির সভাপতি তথা ‘গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন’ (জিটিএ) সদস্য অজয় এডওয়ার্ড৷ সোমবার তিনি নিজে দার্জিলিঙের ১০ নম্বর ওয়ার্ডের একটি নির্মীয়মাণ বহুতল এলাকা ঘুরে দেখে সামাজিক মাধ্যমে ভিডিয়ো (সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার) ‘পোস্ট’ও করেন। সন্ধ্যায় অজয় দার্জিলিঙের পুর প্রধান দীপেন্দ্র ঠাকুরিকে চিঠি লিখে বেআইনি নির্মাণ নিয়ে অভিযোগ জানিয়ে পুরসভা কী ব্যবস্থা নিচ্ছে তা আগামীতে যাতে জানানো হয়, তা বলেছেন। ‘বন্ধু’ তথা জিটিএ প্রধান অনীত থাপাকেও প্রশ্ন করেছেন। দার্জিলিঙের জেলাশাসক, পুলিশ সুপার এবং রাজ্য সরকারের পুর ও নগরোয়ন্নয় দফতরের মন্ত্রীকেও অজয় রাতে চিঠি পাঠান।
হামরো পার্টির সভাপতির কথায়, ‘‘দার্জিলিং অত্যন্ত ভূমিকম্পপ্রবণ এলাকা। যোশীমঠের প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের পরে আমাদের সতর্ক হওয়ার কথা বলা হয়। সে সময় হামরো পার্টির পুরবোর্ড বেআইনি নির্মাণের বিরুদ্ধে অভিযানে যায়। বোর্ডের ক্ষমতা বদল হতেই পরিস্থিতি বদল হচ্ছে।’’ অজয়ের প্রশ্ন, ‘‘অনীত দাজু এটাই কি পাহাড়ের উন্নয়ন!’’ বিষয়টি নিয়ে মন্তব্য না করলেও, অনীত থাপা বা পুরসভার চেয়ারম্যান দীপেন্দ্র ঠাকুরি অভিযোগগুলি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন।
পুরসভা সূত্রের খবর, রাজ্যের পুর আইন অনুসারে, দার্জিলিং শহরে ১১.৫ মিটার উচ্চতার মধ্যে বাড়ি তৈরি করার নিয়ম রয়েছে। কালিম্পং, মিরিক বা কার্শিয়াংয়েও সে নীতি মেনে চলার কথা। শুধু বিশেষ অনুমতিক্রমে, পুরসভা এবং সরকারি কয়েকটি ভবন ১৩ মিটার উচ্চতার আশেপাশে রয়েছে। অভিযোগ, গত তিন দশক ধরে দার্জিলিং-সহ পাহাড়ের শহরগুলিতে শহরে একের পরে এক বেআইনি নির্মাণ, বহুতল তৈরি হয়েছে। শুধু উচ্চতার নিরিখে নয়, ‘বিল্ডিং প্ল্যান’ পুরসভা থেকে অনুমোদন বা পাশ না করে বহু কাজ হয়েছে বলে অভিযোগ। পাহাড়ের ঢাল কেটে বহু তল তৈরি করা হয়েছে। নিকাশি, পার্কিং ঠিক করা হয়নি। একটি ভবনের গায়ে আর একটি ভবন তৈরি করা হয়েছে।
শুধু বাজার, দোকান, হোটেল, রেস্তরাঁ বা অফিস এলাকা নয়, ব্যক্তিগত বাড়ির ক্ষেত্রেও বেনিয়ম হচ্ছে বলে অভিযোগ। পাহাড়ের ঢালে এই পরিস্থিতি অত্যন্ত ভয়ানক বলেই বিশেষজ্ঞেরা মনে করেন। গত বছরে হামরো পার্টির বোর্ড থাকার সময় ৪২টি বেআইনি নির্মাণ দার্জিলিঙে চিহ্নিত হয়েছিল। পরে, সংশ্লিষ্ট মালিক পক্ষকে নোটিসও করা হয়। যদিও তার পর থেকে কাজ কিছু হয়নি বলে হামরো পার্টির অভিযোগ।
বিশেষজ্ঞেরা জানাচ্ছেন, হিমালয়ের অন্য এলাকার মতো দার্জিলিং, কার্শিয়াং এবং কালিম্পং পাহাড় এখনও গড়ে ওঠার প্রক্রিয়ায় রয়েছে। এই অঞ্চল অসংখ্য খণ্ডিত শিলার উপরে দাঁড়িয়ে, যার ধারণ ক্ষমতা এমনিতেই কম। সেই শিলার সঙ্গে সংযুক্ত মাটিও একেবারেই ভঙ্গুর। তাই পর্যটন বা বাণিজ্যিক কারণে পাহাড়ে নির্মাণ করতে হলে, যথাযথ পরিকল্পনা দরকার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy