Advertisement
Back to
Presents
Associate Partners
Lok Sabha Election 2024

ভান্ডারেই কি নির্বাচনে লক্ষ্মী-লাভ

একুশের বিধানসভা ভোটেই এই প্রকল্পের সুফল ঘরে তুলেছে তৃণমূল। তা বুঝেই এ বার বাজেটে লক্ষ্মীর ভান্ডারের টাকা দ্বিগুণ করা হয়েছে।

প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ০৭:৪৩
Share: Save:

লোকসভার লড়াইয়ে ভোট-ভান্ডার ভরতে ঘরের লক্ষ্মীদের সমর্থন যে কতটা জরুরি, তা বুঝেছে সব দলই। তাই প্রার্থী তালিকায় মহিলাদের সংখ্যা বাড়ানোর পাশাপাশি বিভিন্ন প্রকল্প, প্রতিশ্রুতি দিয়ে মহিলা ভোটব্যাঙ্ককে কাছে টানার চেষ্টা চলছে। এই উদ্যোগে তৃণমূলের সহায় ‘লক্ষ্মীর ভান্ডার’। আর বিজেপির ভরসা উজ্জ্বলা যোজনা, লাখপতি দিদি-র মতো কেন্দ্রীয় প্রকল্প।

একুশের বিধানসভা ভোটেই এই প্রকল্পের সুফল ঘরে তুলেছে তৃণমূল। তা বুঝেই এ বার বাজেটে লক্ষ্মীর ভান্ডারের টাকা দ্বিগুণ করা হয়েছে। পয়লা এপ্রিল থেকেই সাধারণ মহিলাদের ভাতা ৫০০ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে এক হাজার। তফসিলি জাতি ও জনজাতির মহিলাদের ক্ষেত্রে তা হাজার থেকে বাড়িয়ে ১২০০ টাকা করা হয়েছে। এই ভাতা বৃদ্ধির কথা ভোটের প্রচারে তুলে ধরার নির্দেশও দিয়ে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় মনে করিয়েছেন, রাজ্যে পুরুষ ও মহিলা ভোটারের অনুপাত প্রায় সমান। সে ক্ষেত্রে লক্ষ্মীর ভান্ডার মোট ভোটারদের অন্তত ৫০ শতাংশ পেয়েছেন।

২০২৪ লোকসভা নির্বাচনের সমস্ত খবর জানতে চোখ রাখুন আমাদের 'দিল্লিবাড়ির লড়াই' -এর পাতায়।

চোখ রাখুন

রাজ্যে ক্ষমতায় এলে মাসে ৩ হাজার টাকা করে মহিলাদের দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে বিজেপি। কংগ্রেস ঘোষণা করেছে, ক্ষমতায় এলে প্রত্যেক পরিবারের এক জন মহিলা বছরে পাবেন ১ লক্ষ টাকা। শুধু বামেরা বলেছেন, ‘‘তৃণমূলকে হটালে কাটমানি বন্ধ হবে, আপনাদের হাতে কাজ আসবে, হাত পাততে হবে না।’’

মহিলারা সবই শুনছেন। দক্ষিণ ২৪ পরগনার কাকদ্বীপের গৃহবধূ জ্যোৎস্না দাস যেমন বললেন, ‘‘লক্ষ্মীর ভান্ডারে এখন এক হাজার টাকা পাচ্ছি। আবাসের তালিকায় নাম নেই। একশো দিনের কাজও পাই না। তবে এই টাকাটা পাই। অভাবের সংসারে কাজে লাগে।” পাথরপ্রতিমার মালতি মণ্ডল মানছেন, “গ্রামাঞ্চলের মহিলারা এতে উপকৃত হচ্ছেন।” যে সন্দেশখালিতে তৃণমূল বাহিনীর নারী নির্যাতন নিয়ে বিজেপি সরব, সেখানকার খুলনায় লক্ষ্মীর ভান্ডারে টাকা বাড়ার আনন্দে শতাধিক মহিলা আবির খেলায় মেতেছিলেন।

বাঁকুড়া জেলার ইন্দাসের আকুই গ্রামের মাধবী নন্দী আবার বলছিলেন, ‘‘লক্ষ্মীর ভান্ডারের টাকা নিয়মিত পাওয়া যায়। এই টাকা একেবারে নিজস্ব। কিন্তু উজ্জ্বলা গ্যাসের ভর্তুকির ঠিক নেই।’’ পুরুলিয়ার ঝালদা শহরের পূজা সূত্রধরের স্বামী ব্যাঙ্কের অস্থায়ী কর্মী। মেয়ে অষ্টম ও ছেলে ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ে। পূজা উজ্জ্বলা যোজনা এবং লক্ষ্মীর ভান্ডার দু’টি সুবিধাই পান। তাঁরও বক্তব্য, ‘‘উজ্জ্বলাতে ভর্তুকি মিললেও তা বিরাট ব্যাপার নয়। যেমন, চলতি মাসে ৮৬০ টাকা দিয়ে রান্নার গ্যাস নিয়ে ভর্তুকি পেয়েছি ৩০০ টাকা। তবে প্রতি মাসে আসা লক্ষ্মীর ভান্ডারের টাকা থেকে হাত-খরচ করেও যা জমে।’’

দুই প্রকল্পে উপকৃত হচ্ছেন, এমন মহিলাও আছেন। গড়বেতার বনকাটা গ্রামের দোলন বাগ, কাকলি দোলইরা যেমন লক্ষ্মীর ভান্ডারের টাকায় উজ্জ্বলার গ্যাস সিলিন্ডার কিনছেন। তবে তাঁরাও বলছেন, ‘‘লক্ষ্মীর ভান্ডারের টাকা ডবল করায় অনেক সুবিধা হয়েছে। ভর্তুকির ৩০০ টাকা অ্যাকাউন্টে ঢোকার আগে সিলিন্ডারটা কিনে ফেলছি।’’ বিজেপির মহিলা মোর্চার ঝাড়গ্রাম সাংগঠনিক জেলার সাধারণ সম্পাদক শম্পা ভট্টাচার্য বললেন, ‘‘রাজ্যে বিজেপি ক্ষমতায় এলে লক্ষ্মীর ভান্ডারের মতো অন্নপূর্ণা ভান্ডার চালু হবে, প্রত্যেক মহিলা ৩ হাজার টাকা করে পাবেন।’’

তৃণমূল প্রচার জুড়ে তাই লক্ষ্মীর ভান্ডার। সেই সঙ্গে আবাস, একশো দিনের বরাদ্দ বন্ধ নিয়েও সরব তৃণমূল। দলের অন্যতম রাজ্য মুখপাত্র দেবপ্রসাদ বাগ বলছেন, ‘‘লক্ষ্মীর ভান্ডার মহিলাদের মধ্যে সাড়া ফেলেছে। রাজ্য একশো দিনের মজুরিও মিটিয়েছে। মানুষ আমাদের সঙ্গে।’’ আলিপুরদুয়ারের বিজেপি প্রার্থী মনোজ টিগ্গার পাল্টা, “একশো দিনের কাজে তৃণমূল কী হারে দুর্নীতি করেছে, সেটা মানুষ জানেন।”

যদিও শুধু লক্ষ্মীর ভান্ডারের জন্য তৃণমূলকে ভোট দেবেন— এমন সোজা হিসেব অনেকেই কষছেন না। পূর্ব বর্ধমানের কালনা ১ ব্লকের বধূ কল্পনা মল্লিক যেমন বলছেন, ‘‘লক্ষ্মীর ভান্ডারে আর্থিক সুবিধা মিলছে ঠিকই। তবে এই ভোট কেন্দ্রের সরকার বেছে নেওয়ার ভোট। তাই আরও অনেক কিছু ভেবে ভোটটা দেব।’’

২০২৪ লোকসভা নির্বাচনের সমস্ত খবর জানতে চোখ রাখুন আমাদের 'দিল্লিবাড়ির লড়াই' -এর পাতায়।

চোখ রাখুন

অন্য বিষয়গুলি:

Lok Sabha Election 2024 TMC BJP West Bengal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE