—প্রতীকী চিত্র।
উপনির্বাচনের স্মৃতি মনে রাখতে চান না বিজেপ নেতৃত্ব। বরং ২০১৯-এর বিপুল জয়কে তুলে ধরে দলীয় কর্মী-সদস্যদের চাঙ্গা করার কাজে নেমেছেন জেলা নেতৃত্ব। এবার ভোট বৈতরণী পেরোতে তাই ২০১৯-এর ফলাফলকেই পাখির চোখ করেছেন তাঁরা। দলের জেলা সভাপতি বাপ্পাদিত্য চট্টোপাধ্যায় বলেন, “কঠিন কাজ। কিন্তু অসম্ভব নয়।” যদিও বিজেপির এই স্বপ্ন অধরাই থেকে যাবে বলে কটাক্ষ তৃণমূলের।
২০১৪ সালে এক লক্ষের কাছাকাছি ভোটে জিতে প্রথম বার আসানসোলকে বিজেপির ঝুলিতে এনে দেন বাবুল সুপ্রিয়। ২০১৯-এ সেই ব্যবধান বাড়িয়ে প্রায় ২ লক্ষ ভোটে জেতেন বাবুল। এর পরে বাবুল তৃণমূলে যোগ দেন। ২০২২-এর উপনির্বাচনে এই কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী শত্রুঘ্ন সিন্হা বিজেপি প্রার্থী অগ্নিমিত্রা পালকে তিন লক্ষের কিছু বেশি ভোটে হারান। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের মতে, এই অবস্থায় ২০২৪-র ভোটে আসানসোল পুনরুদ্ধার করতে হলে তিন লক্ষের এই বিপুল ব্যবধান ঘোচাতে হবে বিজেপিকে।
কী ভাবে তা সম্ভব? দলের জেলা সভাপতি বাপ্পাদিত্য চট্টোপাধ্যায় বলেন, “সে জন্য পরিকল্পিত নির্বাচনী কৌশল নেওয়া হয়েছে। সেই মতো বুথ স্তরে কাজও শুরু হয়েছে। প্রার্থী চূড়ান্ত হওয়ার পরেই কাজের গতি বাড়বে।” বাপ্পাদিত্যের অভিযোগ, উপনির্বাচনে যথেচ্ছ ‘ছাপ্পা’ দিয়েছিল তৃণমূল। ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটের পরে পাণ্ডবেশ্বর, জামুড়িয়া, বারাবনি এলাকার প্রায় ২৫০টি বিজেপি সমর্থক পরিবারকে ঘরছাড়া করা হয়। তাঁর দাবি, ‘ঘরছাড়াদের’ উপনির্বাচনের আগে এলাকায় ফেরানো যায়নি বলে দলের শক্তিক্ষয় হয়। তবে সেই পরিস্থিতি এখন নেই। ভোটের অনেক আগে শিল্পাঞ্চল জুড়ে কেন্দ্রীয় বাহিনীর রুট মার্চ চলছে। ফলে, কর্মীরা এলাকায় থেকে দলের কাজ করতে পারছেন। নির্বাচনের দিনও বিপুল সংখ্যায় কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকার কথা। তিনি মনে করেন, তাই যদি হয়, তবে এ বার প্রত্যেক বুথে পোলিং এজেন্ট দিতে পারবে বিজেপি। ছাপ্পা ভোটও হবে না।
গত উপনির্বাচনে কুলটি ও আসানসোল দক্ষিণ বিধানসভা কেন্দ্রে তৃণমূলের চেয়ে এগিয়েছিল বিজেপি। বাকি পাঁচটিতে পিছিয়ে পড়ে। বারাবনি, জামুড়িয়া ও পাণ্ডবেশ্বরের ফল অত্যন্ত খারাপ হয়েছিল। বাপ্পাদিত্য জানান, তাই এ বার এই তিন কেন্দ্রেই বাড়তি নজর রয়েছে। সাধারণ ভোটারদের নিয়ে এলাকাভিত্তিক পাড়া বৈঠক চলছে। প্রকাশ্য সভার পরিবর্তে জোর দেওয়া হচ্ছে ‘কানে কানে’ প্রচার। কেন্দ্রীয় প্রকল্পের সুফল জানানোর পাশাপাশি, নাগরিকদের কী ভাবে রাজ্য সরকার এ সব প্রকল্পের সুবিধা থেকে বঞ্চিত করেছে, তা বোঝানো হচ্ছে। তাঁর দাবি, কুলটি, আসানসোল দক্ষিণ ও উত্তর, রানিগঞ্জ বিধানসভায় এ বার দল অনেক বেশি ব্যবধানে তৃণমূলের থেকে এগিয়ে থাকবে। তিনি বলেন, “উপনির্বাচনের স্মৃতি ভুলে কর্মী-সমর্থকদের সামনে ২০১৯-র ব্যবধান বাড়ানোর লক্ষ্যমাত্রা স্থির করেছি।”
‘সন্ত্রাসের’ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। দলের জেলা সভাপতি নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী বলেন, “ওরা প্রার্থীই খুঁজে পাচ্ছে না। আবার ভোটের ব্যবধান বাড়ানোর দিবাস্বপ্ন দেখছে।” তাঁর দাবি, এ বার তৃণমূলের ফল উপনির্বাচনের চেয়েও ভাল হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy