অ্যালুমনিয়ামের কাঠামো ও বিশেষ ধরনের কাপড় দিয়ে সভামঞ্চ তৈরি হয়েছে চাঁদমারি মাঠে। ছবি: তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশাসনিক সভা হওয়ার কথা আজ, রবিবার সিউড়িতে। শহরের চাঁদমারি পাঠে মঞ্চ ও সভাস্থল তৈরির কাজে হাত পড়েছিল কার্যত বৃহস্পতিবার থেকে। শনিবারের মধ্যেই কাজ শেষ! জেলা প্রশাসনের কর্তারা জানাচ্ছেন, এত দ্রুত কাজ শেষ হওয়ার নেপথ্যে ‘জার্মান হ্যাঙ্গার’।
আসানসোল ও দুর্গাপুর থেকে আসা মঞ্চ তৈরির দায়িত্বে থাকা লোকজন বলছেন, অ্যালুমনিয়ামের কাঠামো ও বিশেষ ধরনের কাপড় দিয়ে মঞ্চ তৈরির কাজ অনেকটা মেলায় নাগরদোলা লাগানো ও খোলার মতো। সব তৈরি-ই থাকে। তাই সময় কম লাগে। তবে, ছোট ক্রেন ও মাটি কাটার যন্ত্রের সাহায্য প্রয়োজন। চিরাচরিত বাঁশ, কাপড়, ত্রিপল দিয়ে সভাস্থল প্রস্তুত করতে হলে অন্তত দিন দশেক সময় লাগত— মানছে প্রশাসন।
প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের প্রচারে ব্রিগেডে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সভা করার সময় ‘জার্মান হ্যাঙার’ ব্যবহার করা হয়েছিল। তা নিয়ে উচ্ছ্বসিত ছিলেন বিজেপির নেতা-নেত্রীরা। যদিও তৃণমূলের তরফে বিদ্রুপ শোনা গিয়েছিল। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উত্তরবঙ্গের একটি সভা থেকে বলেছিলেন, ‘‘কোনও দিন শুনেছেন, কেউ হ্যাঙ্গারে মিটিং করে? টাকার হাঙর যারা, তারাই হ্যাঙ্গারে মিটিং করে!’’
এখন পরিস্থিতি বদলে গিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী, মুখ্যমন্ত্রী তো বটেই, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের তাবড় নেতা কর্মীদের র্যালি, জনসংযোগ থেকে সভা, সবতেই কর্পোরেট ছোঁয়া লেগেছে। গত বছর বোলপুরেও মুখ্যমন্ত্রীর পরিষেবা প্রদান সভার মঞ্চ ‘জার্মান হ্যাঙ্গার’ দিয়েই নির্মিত হয়েছিল। গত মাসে পূর্ব বর্ধমানের সভাস্থলও একই ভাবে তৈরি করা হয়েছিল। জানা গিয়েছে, এখন মুখ্যমন্ত্রীর প্রশাসনিক সভামঞ্চগুলি এ ভাবেই নির্মিত হচ্ছে। গত বছর এপ্রিলে সিউড়িতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সভাস্থল ও সভায় আগত মানুষের বসানোর ব্যবস্থা হয়েছিল জার্মান হ্যাঙ্গারের নীচে।
সিউড়ির চাঁদমারি মাঠে সেই একই আয়োজন। বীরভূম জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, মুখ্যমন্ত্রীর সভামঞ্চ কী ভাবে তৈরি হবে, তা ঠিক করে পূ্র্ত দফতর। তবে, জার্মান হ্যাঙারে নীচে সভামঞ্চ তৈরি করলে সেটা অনেক বেশি নিরাপদ হয়। উপস্থিত মানুষও রোদ-জলের হাত থেকে রেহাই পান। সবচেয়ে বড় বিষয় সভাস্থ অল্প সময়ে মঞ্চ ও সভাস্থল তৈরি করে ফেলা যায়। জেলাশাসক, চার অতিরিক্ত জেলাশাসক, জেলা পুলিশ সুপার-সহ পুলিশের পদস্থ কর্তারা যখন শনিবার সকালে চাঁদমারি মাঠের সভাস্থল পরিদর্শন করেন, তখনও কাজের বেশ খানিকটা বাকি। মুখ্যমন্ত্রীর জন্য সভামঞ্চ, তার সামনের দিকে এবং বাঁ দিকে ছাউনি হয়ে গেলেও কাজ বাকি ছিল। প্রশাসনের কর্তারা নিশ্চিত, রাতের মধ্যেই কাজ সেরে ফেলা যাবে। তবে যে দ্রুততায় কাজ হচ্ছে, সেটা জার্মান হ্যাঙ্গার ছাড়া সম্ভব ছিল না।
জেলা প্রশাসনের এক কর্তা জানান, মুখ্যমন্ত্রী জেলা সফরে আসছেন, তার ইঙ্গিত থাকলেও দিন কয়েক আগেই নির্দিষ্ট দিনক্ষণ তাঁরা জানতে পেরেছেন। হাতে সময় খুব কম ছিল। তড়িঘড়ি দুর্গাপুর থেকে প্রশাসনিক সভাস্থল তৈরির জন্য নির্দিষ্ট ডেকোরেটর সংস্থাকে ডেকে পাঠানো হয়। যদিও সবটাই সামাল দেওয়া গিয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy