Advertisement
Back to
Presents
Associate Partners
Lok Sabha Election 2024

‘কোন্দল’ না কি বাম ভোট, কোন পাল্লায় জয়ের হিসাব

বিধানসভায় পরপর দু’বার তৃণমূলের কেউ বিধায়ক হতে পারেননি। তবে বিধায়ক পাল্টালেও তৃণমূলের ভোট শতাংশে সে ভাবে প্রভাব পড়েনি।

তিনটি দলের প্রার্থীর নামে দেওয়াল লিখন।

তিনটি দলের প্রার্থীর নামে দেওয়াল লিখন। নিজস্ব চিত্র।

সৌমেন দত্ত
মেমারি শেষ আপডেট: ১০ মে ২০২৪ ০৮:৪৯
Share: Save:

তৃণমূলের আমলে তিন বার তিন বিধায়ক পেয়েছে ভাতার। পারস্পরিক বিরোধও সামনে এসেছে বার বার। বামেদের ভোট-বাক্স হালকা হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে বিজেপির ভোট। তবে সেখানেও রয়েছে দ্বন্দ্ব-কাঁটা। তার সঙ্গে পুরো বিধানসভা জুড়ে বড় অংশ উপস্থিতি রয়েছে মতুয়াদের। এ বারের ভোট-বাক্সের ভার কোন দিকে, তা নির্ভর করছে এই সব অঙ্কেই।

এ বঙ্গে সিপিএমের ‘আঁতুরঘর’ বলা হত বর্ধমান পূর্ব কেন্দ্রের মেমারি বিধানসভাকে। হরেকৃষ্ণ কোনার, বিনয় কোনার, সইফুদ্দিন চৌধুরীদের মেমারি, কোনারদের ‘লালবাড়ি’ই ছিল বাম-রাজনীতির উত্থানের ‘সেতু’। সেই লাল রং যত ফিকে হয়েছে, বামেদের ভোট কমেছে। পাল্লা দিয়ে গেরুয়া ভোট বেড়েছে। ২০০৮ সালের পর থেকে সিপিএমকে সরিয়ে উঠে এসেছে তৃণমূল। ওই বছর মেমারি পুরসভার ১৬টি আসনেই ঘাসফুল ফোটে। ২০১১ সাল থেকে মেমারি বিধানসভাও তৃণমূলের দখলে।

২০২৪ লোকসভা নির্বাচনের সমস্ত খবর জানতে চোখ রাখুন আমাদের 'দিল্লিবাড়ির লড়াই' -এর পাতায়।

চোখ রাখুন

এই বিধানসভায় পরপর দু’বার তৃণমূলের কেউ বিধায়ক হতে পারেননি। তবে বিধায়ক পাল্টালেও তৃণমূলের ভোট শতাংশে সে ভাবে প্রভাব পড়েনি। গত তিনটে বিধানসভাতেই ৪৬-৪৮%য়ের বেশি ভোট পেয়েছে তৃণমূল। তবে ২০১৬ সালের চেয়ে প্রায় ৫% ভোট কমে ২০১৯ সালের লোকসভায়। সে বার তৃণমূলের বাক্সে ভোট পড়েছিল ৪১.৪৫%। তৃণমূলের দাবি, লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেস প্রার্থী থাকায় তৃণমূলের একটা অংশের ভোট সেখানে চলে যায়। ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে আবার সেই ভোট ফিরে আসে। ২০১৯ সালের চেয়ে দুই শতাংশেরও কম ভোট বিধানসভায় পেয়েছিল লাল ও পদ্ম শিবির। সেই কারণে লোকসভার চেয়ে ব্যবধানও বাড়ে তৃণমূলের। এ বারও কি সেই ব্যবধান ধরে রাখা যাবে?

বিধায়ক (মেমারি) মধুসূদন ভট্টাচার্য প্রত্যয়ের সঙ্গে বলেন, “আরও বেশি ভোটে মেমারি থেকে তৃণমূল জিতবে। জেলার ছ’টি পুরসভার মধ্যে মেমারি শহরে তৃণমূল সবচেয়ে বেশি ভোটে জিতবে।”

বিধায়কের সঙ্গে তাঁর একদা ‘ভাবশিষ্য’ মেমারি ১ ব্লকে তৃণমূল সভাপতি নিত্যানন্দ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সম্পর্ক ২০১৩ সালের পঞ্চায়েতের পর থেকেই ‘মধুর’। ২০১৮ সালের পঞ্চায়েতের পরে নিত্যানন্দর অনুগামীরা ‘নিষ্ক্রিয়’ হয়ে গিয়েছিলেন। গত পঞ্চায়েত ভোটের পরে বিধায়কের অনুগামীরা ‘কোণঠাসা’ হয়ে পড়েছেন। তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব বারবার বসেও ‘গুরু-শিষ্য’র মনোমালিন্য দূর করতে পারেননি। মেমারি শহরেও পুরপ্রধান স্বপন বিষয়ী ও শহর সভাপতি স্বপন ঘোষালের ‘দূরত্ব’ সর্বজনবিদিত। দুই স্বপনের লড়াইয়ের মধ্যে পড়ে সংগঠন সাজাতে হিমশিম খাচ্ছেন পুরসভার কাউন্সিলর থেকে বিভিন্ন শাখা সংগঠনগুলি। শুধু তৃণমূল নয়, বিজেপির অন্তর্দ্বন্দ্বেও মেমারিতে মারপিট হয়েছে। মেমারির এক বিজেপির রাজ্য কমিটির সদস্য দলের প্রার্থী নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে দল ছেড়েছেন। মেমারি শহরে প্রার্থীর বিরুদ্ধে পোস্টারও পড়েছিল।

বিজেপির নেত্রী স্মৃতিকণা সরকারের যদিও দাবি, “দেশ গড়ার লক্ষ্যে মানুষ ভোট দেবেন। সেখানে মোদীজির বিকল্প নেই। দুর্নীতিবাজ তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে আর দেশে সুশাসনের লক্ষ্যে বিজেপির বাক্সেই ভোট পড়বে।’’ সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য সনৎ বন্দ্যোপাধ্যায়েরও দাবি, “নিবিড় প্রচার হচ্ছে। মানুষের সাড়া মিলছে। তৃণমূল-বিজেপির বিরুদ্ধে মানুষ ভোট দেবেন।”

এই বিধানসভার বেশির ভাগ মানুষ চাষের সঙ্গে যুক্ত। চাষ ছাড়া মেমারি এলাকায় রয়েছে ৩৮টির মতো হিমঘর। আর কিছু চালকল। দু’টি শিল্পই চাষের সঙ্গে জড়িত। কিন্তু সেই শিল্পও ‘ধুঁকতে’ শুরু করেছে। এ ছাড়া পানীয় জলের তীব্র সঙ্কট রয়েছে এই বিধানসভায়। সেচ খালের উপরে সেতুর দাবিতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে বাসিন্দারা। বেহাল রাস্তা থেকে লেভেল ক্রসিংয়ের উপরে দীর্ঘ দিনের উড়ালপুলের দাবি রয়েছে।

ক্ষমতার লড়াইয়ে পরিকাঠামোগত উন্নতি মাপকাঠি হবে, না কি বামের ভোট কাটা বা মতুয়া-মন কোন দিকে ভিড়বে সেই অঙ্ক প্রাধান্য পাবে, তা জানতে অপেক্ষা সব পক্ষেই।

২০২৪ লোকসভা নির্বাচনের সমস্ত খবর জানতে চোখ রাখুন আমাদের 'দিল্লিবাড়ির লড়াই' -এর পাতায়।

চোখ রাখুন

অন্য বিষয়গুলি:

Lok Sabha Election 2024 Bardhaman
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE