Advertisement
Back to
Lok Sabha Election 2024

প্রশাসনের না, মোদীর সভার মাঠ বদলাল

রবিবারই মোদী বাঁকুড়া জেলার বিষ্ণুপুর শহরের কাছে বিড়াই এলাকায় জনসভা করবেন। সেখানে অবশ্য সভার অনুমতি নিয়ে সমস্যা নেই বলে জানান দলের বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অমরনাথ শাখা।

দেওয়াল লিখন, পুরুলিয়ার গাড়াফুসড় গ্রামে।

দেওয়াল লিখন, পুরুলিয়ার গাড়াফুসড় গ্রামে। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
পুরুলিয়া ও বাঁকুড়া শেষ আপডেট: ১৬ মে ২০২৪ ০৮:২৪
Share: Save:

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর পুরুলিয়ায় জনসভার জন্য দলের প্রাথমিক ভাবে চিহ্নিত করা মাঠের ছাড়পত্র দিল না জেলা প্রশাসন। বিজেপির পুরুলিয়া জেলা সভাপতি বিবেক রঙ্গা বুধবার বলেন, ‘‘আগামী রবিবার প্রধানমন্ত্রীর সভার জন্য সিধো-কানহো-বীরসা বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে রায়বাঘিনী ময়দান নির্বাচন করা হয়েছিল। কিন্তু ডিসিআরসি-র (ডিস্ট্রিবিউশন সেন্টার, রিসিভিং সেন্টার) ১০০ মিটারের মধ্যে ওই মাঠ থাকায় নির্বাচন কমিশনের নিষেধ রয়েছে জানিয়ে প্রশাসন সভার অনুমতি দেয়নি। বদলে পুরুলিয়া বিধানসভার গেঙ্গাড়া ময়দানে ওই সভা হবে।’’ জেলা প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, ‘‘সভার অনুমতি দেওয়ার ক্ষেত্রে কমিশনের নিয়ম মানা হয়েছে।’’

রবিবারই মোদী বাঁকুড়া জেলার বিষ্ণুপুর শহরের কাছে বিড়াই এলাকায় জনসভা করবেন। সেখানে অবশ্য সভার অনুমতি নিয়ে সমস্যা নেই বলে জানান দলের বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অমরনাথ শাখা।

২০১৮ সালের পঞ্চায়েত ভোটের ফল প্রকাশের ঠিক পরেই বলরামপুরের সুপুরডি ও ডাভা গ্রামে দুই বিজেপি কর্মীর ঝুলন্ত দেহ মেলে। ওই ঘটনায় তৃণমূলের দিকে বিজেপি ‘তির’ ছোড়ায় উত্তাল হয়েছিল রাজ্য রাজনীতি। ঘটনার পরে বলরামপুরে সভা করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। লোকসভা ভোটের প্রচারে এসে বলরামপুর বিধানসভার রায়বাঘিনী ময়দানেই সভা করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সে বার ডিসিআরসি পুরুলিয়া পলিটেকনিকে হওয়ায় সভার অনুমতি পেতে অসুবিধা হয়নি। ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে মোদী সভা করেন পুরুলিয়া বিধানসভা এলাকার ভাঙড়ায়। তবে ওই বিধানসভা নির্বাচনে বাঁকুড়ায় মোদীর সভার অনুমতি দেওয়া নিয়ে প্রশাসন ও বিজেপির মধ্যে কার্যত দড়ি টানাটানি হয়েছিল। নানা কারণ দেখিয়ে প্রশাসন সে বার প্রধানমন্ত্রীর সভার অনুমতি দিতে চাইছিল না। পরে অবশ্য অনুমতি দেওয়া হয়। সভাও করেন মোদী।

২০১৯-র লোকসভা ভোটে ও ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটে মোদী বাঁকুড়া শহর লাগোয়া এলাকায় সভা করলেও, এ বার তাঁর দলীয় প্রার্থী তথা বিদায়ী কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী সুভাষ সরকারের শহরে আসার ইঙ্গিত পাওয়া যায়নি।

বিজেপির বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অমরনাথ শাখা বলেন, ‘‘রবিবার বিষ্ণুপুরের শহরের উপকণ্ঠে বাঁকুড়া-মেদিনীপুর ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কের পাশে বিড়াই নদী সংলগ্ন এলাকায় সভা করবেন প্রধানমন্ত্রী। ওই মাঠের অনুমতি আমরা আগেই পেয়ে গিয়েছি। বৃহস্পতিবার থেকে মঞ্চ বাঁধার কাজ শুরু হবে।’’ তবে বিষ্ণুপুরে সভা হলেও সেখানে বাঁকুড়া লোকসভা কেন্দ্রের কর্মী-সমর্থকেরা থাকবেন বলে জেলা নেতারা জানাচ্ছেন। থাকবেন বিষ্ণপুর ও বাঁকুড়া কেন্দ্রের দুই দলীয় প্রার্থীও।

দল সূত্রের খবর, বাঁকুড়া লোকসভা কেন্দ্রে মঙ্গলবার প্রচারে আসার কথা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের। তবে ওই কর্মসূচি নিয়ে এ দিন পর্যন্ত কিছু চূড়ান্ত হয়নি।

এরই মধ্যে দুই যুযুধান দলের প্রচারের প্রধান মুখদের নিয়ে জেলা রাজনীতি সরগরম। রবিবার বাঁকুড়া ও পুরুলিয়া জেলায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়েরও কর্মসূচি থাকতে পারে বলে দলীয় সূত্রে খবর মিলেছে। সম্প্রতি পাড়ায় সভা করতে এসে মুখ্যমন্ত্রী বিজেপির সারা দেশে চারশো আসন পারের দাবিকে ‘পগার পার’ বলে দাবি করেন। তারপরেই এ বার চারশো পারের স্লোগান সামনে রেখে প্রধানমন্ত্রীর সভার প্রচারে ঝাঁপিয়েছে গেরুয়া শিবির। চারশো পারের স্লোগান লেখা হয়েছে তৃণমূল প্রার্থী শান্তিরাম মাহাতোর গ্রাম গাড়াফুসড়র একাধিক দেওয়ালেও। শান্তিরামের দাবি, ‘‘বিজেপির অবস্থা যত খারাপ হচ্ছে ততই ওদের এ ভাবে নামতে হচ্ছে।’’ বিজেপির জেলা সভাপতি বিবেক বলেন, ‘‘বিজেপির নেতৃত্বাধীন এনডিএ ৪০০-র বেশি সাংসদ নিয়ে সরকার গড়তে চলেছে। তাই বিরোধীদের বিভ্রান্তিমূলক প্রচারের পাল্টা হিসেবেই কর্মীরা এই স্লোগান দেওয়ালে লিখছেন।’’ বিজেপি প্রার্থী জ্যোতির্ময় সিং মাহাতোর দাবি ‘‘যাঁর হাতে দেশ সুরক্ষিত থাকবে, মোদীজি ছাড়া এমন মুখ কোথায়?’’

জেলা তৃণমূল সভাপতি সৌমেন বেলথরিয়ার পাল্টা দাবি, ‘‘বিজেপি নেতারা বুঝে গিয়েছেন ‘নো ভোট টু বিজেপি’ স্লোগান কী ভাবে তাঁদের পায়ের তলা থেকে মাটি সরিয়ে নিচ্ছে। দেওয়ালে চারশো পার লিখলেও, ওরা মানুষের দেওয়াল লিখন পাল্টাতে পারবেন না।’’ কংগ্রেস প্রার্থী নেপাল মাহাতোও দাবি করেন, ‘‘বিজেপি দিবাস্বপ্ন দেখছে। এ বার ক্ষমতায় আসছে ‘ইন্ডিয়া’ জোট।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Lok Sabha Election 2024 Narendra Modi BJP
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE