Advertisement
Back to
Lok Sabha Election 2024

‘নো ভোট টু নোটা’ নিয়ে পাল্টা আসরে এ বার এবিভিপি

জাতীয় নির্বাচন কমিশন ২০১৩ সালে ইভিএমে ‘নোটা’র (নান অব দি অ্যাভব) ব্যবহার শুরু করে। কোনও প্রার্থীকে পছন্দ না করলে নির্বাচকমণ্ডলী ‘নোটা’য় ভোট দিতে পারেন।

Representative Image

—প্রতীকী ছবি।

বিপ্রর্ষি চট্টোপাধ্যায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৬ মে ২০২৪ ০৭:০৬
Share: Save:

রাজ্যে ২০২১ সালে বিধানসভা নির্বাচনের আগে ‘নো ভোট টু বিজেপি’ স্লোগান তুলেছিল কিছু বামপন্থী ও অতি-বাম সংগঠন। এ বারও সেই একই ডাক দিয়েছে ‘দেশ বাঁচাও গণমঞ্চ’, যাদের পিছনে আছে তৃণমূল কংগ্রেসও। তার পাল্টা ব-কলমে বিজেপির সমর্থনে আরএসএসের ছাত্র সংগঠন আখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদ (এবিভিপি) স্লোগান নিয়ে এসেছে, ‘নো ভোট টু নোটা!’

জাতীয় নির্বাচন কমিশন ২০১৩ সালে ইভিএমে ‘নোটা’র (নান অব দি অ্যাভব) ব্যবহার শুরু করে। কোনও প্রার্থীকে পছন্দ না করলে নির্বাচকমণ্ডলী ‘নোটা’য় ভোট দিতে পারেন। আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে সেই বিকল্পেই ভোট না দেওয়ায় আবেদন করে প্রচার শুরু করেছে এবিভিপি। ইতিমধ্যে এই মর্মে তারা দেওয়াল লিখন, পোস্টার লাগানো, টোটো প্রচার শুরু করেছে। সংগঠন সূত্রে খবর, এই নিয়ে তারা গান বেঁধেছে, পথ নাটিকার মহড়া শুরু করেছে। আগামী দিন এই দু’টি মাধ্যমেও তারা বিষয়টিকে সাধারণ মানুষের সামনে আনবে। সংগঠনের বক্তব্য, ‘নোটা’য় ভোট দেওয়া মানে ভোট নষ্ট করা। এক জন সচেতন নাগরিক তাঁর নাগরিক দায়িত্ব পালন করেন ভোটদানের মাধ্যমে। একটি শক্তিশালী, বিকাশশীল সরকার গঠনে প্রত্যেক নাগরিকের ভূমিকা থাকা উচিত। তাই ১০০% মানুষ যাতে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় তাদের ক্ষমতার উপযুক্ত প্রয়োগ করেন, সেই কথা মনে করিয়ে দিতেই এই প্রচার। সেই সঙ্গেই তারা বলছে, উন্নয়ন অব্যাহত রাখতে দেশের সরকার গড়ার এই ভোটে আঞ্চলিক কোনও দলকে সমর্থন করা অর্থহীন। যার অর্থ, কার্যত বিজেপিকেই সমর্থন করতে আবেদন করা হচ্ছে।

সূত্রের খবর, এবিভিপি দেশ জুড়েই এই প্রচারে নেমেছে। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে প্রচার চলছে। তার মধ্যেও দুই মেদিনীপুর, মুর্শিদাবাদ, নদিয়া, কলকাতা, উত্তর ২৪ পরগনা, পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, দুই বর্ধমান ও ঝাড়গ্রামে এই প্রচার বেশি গতি পেয়েছে। ইতিমধ্যে এই বিষয়ে ১৩৭টি জায়গায় ‘নগর সম্মেলন’ হয়েছে। সংগঠনের রাষ্ট্রীয় সম্পাদক সপ্তর্ষি সরকার বলেন, “আমরা কখনওই নির্বাচনী প্রচারে অংশগ্রহণ করি না। তবে জাতীয়তাবাদী প্রার্থীদের পক্ষে অবস্থান নিই। আমরা চাই, দেশের প্রত্যেকটি মানুষ স্থিতিশীল, রাষ্ট্রবাদী সরকার গঠনে অংশ নিন। এই ভাবনা থেকেই এই প্রচার।’’ কিন্তু এই প্রচার কি মানুষের বিকল্প বেছে নেওয়ার অধিকারের পরিপন্থী নয়? সপ্তর্ষির জবাব, “মানুষ কাকে ভোট দেবেন, সেটা তাঁর পছন্দ। কিন্তু দুর্নীতিতে অভিযুক্ত, ফৌজদারি মামলা আছে এমন ব্যক্তির চেয়ে এক জন রাষ্ট্রবাদী, স্বচ্ছ মানুষ সংসদের অভ্যন্তরে মানুষের দাবি পৌঁছে দিতে বেশি সক্ষম বলে আমাদের মনে হয়। আমরা সেই উপলব্ধি থেকে জনজাগরণের চেষ্টা করছি।’’

এই একই সুরে গত বিধানসভা নির্বাচনে তো বিজেপির বিরুদ্ধে আওয়াজ উঠেছিল? সপ্তর্ষির ব্যাখ্যা, “এই স্লোগান মূলত বামপন্থীরা তুলেছিল। তাদের স্লোগানের দায় তাদের। বিজেপি সেই স্লোগান কী ভাবে মোকাবিলা করবে, সেটা তাদের বিষয়। আমাদের স্লোগানের উদ্দেশ্য জনজাগরণ। আমরা কোনও রাজনৈতিক স্লোগান দিই না।” শিবপুর আইআইইএসটি-র প্রাক্তন ছাত্র তথা ‘নো ভোট টু বিজেপি’ আন্দোলনের অন্যতম কর্মী অরিজিৎ গায়েন কিছুটা কটাক্ষের সুরে বলেন, “ওরা ঠিকই বলছে। ওদের স্লোগানের সঙ্গে আমিও সহমত। ‘নোটা’য় ভোট দেওয়া মানে ভোট নষ্ট করা। তার চেয়ে বিজেপি-বিরোধী যে দলের জেতার সম্ভবনা বেশি, মানুষ যেন তাদেরই ভোট দেন!’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE