উলুবেড়িয়ার তৃণমূল প্রার্থী সাজদা আহমেদ। নিজস্ব চিত্র।
বিরোধীদের তো বটেই, এলাকার তৃণমূল নেতৃত্বের একাংশেরও অভিযোগ রয়েছে, বিগত বছরগুলিতে উলুবেড়িয়ায় দলীয় সাংসদ সাজদা আহমেদকে সে ভাবে দেখা যায়নি। ফলে, এ বার তিনি ফের লোকসভা নির্বাচনে টিকিট পাবেন কি না, তা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছিল। তবে, রবিবার দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তৃতীয় বারের জন্য উলুবেড়িয়া লোকসভা কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থী হিসেবে সাজদাকেই বেছে নিলেন।
সাজদার বিরুদ্ধে ওই অভিযোগ মানতে চাননি দলের হাওড়া গ্রামীণ জেলা সভাপতি অরুণাভ সেন। তাঁর দাবি, ‘‘সাজদার ভূমিকায় ঘাটতি ছিল, তা মানা যাবে না। তিনি তাঁর কাজ ঠিকঠাকই করেছেন বলেই দলনেত্রী তাঁকে প্রার্থী করেছেন। আমরা তাঁর জন্য ঝাঁপাব।’’
সাজদা উলুবেড়িয়া কেন্দ্রের জন্য প্রথমবার টিকিট পেয়ে জেতেন ২০১৭-তে। তৎকালীন সাংসদ, তাঁর স্বামী সুলতান আহমেদ প্রয়াত হওয়ার জন্যই এই কেন্দ্রে উপনির্বাচন হয়। তারপরে ২০১৯-এর ভোটেও জেতেন। এ বারেও জিতলে একই কেন্দ্র থেকে তাঁর জয়ের হ্যাটট্রিক হবে।
১৯৭৭ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত এই কেন্দ্র ছিল সিপিএমের দখলে। এর মধ্যে ১৯৮২ থেকে ২০০৯ পর্যন্ত টানা সাতটি মেয়াদে সাংসদ ছিলেন হান্নান মোল্লা। ২০০৯-এর লোকসভা নির্বাচনে হান্নান ‘অপরাজেয়’, এই মিথ ভেঙে দেন তৃণমূল প্রার্থী সুলতান। ২০১৪-তেও জেতেন সুলতান। ফলে, ‘বহিরাগত’ হলেও সুলতান উলুবেড়িয়ার ‘ঘরের মানুষ’ হয়ে গিয়েছিলেন। কলকাতায় তাঁর বাড়িতে যেমন উলুবেড়িয়ার আপামর মানুষের অবাধ যাতায়াতের সুযোগ ছিল, তেমনই উলুবেড়িয়াতেও তিনি নিয়মিত আসতেন।
দীর্ঘদিন ধরে সুলতানকে দেখা উলুবেড়িয়ার তৃণমূল নেতা-কর্মীদের একাংশের মতে, তিনি এলাকায় জনসংযোগ রক্ষার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য কৃতিত্ব রাখতে পেরেছিলেন। কিন্তু সাজদার ক্ষেত্রে তা দেখা যায়নি বলে তাঁদের অভিযোগ। এক সময়ে হান্নানের বিরুদ্ধেও একই অভিযোগ তুলত তৃণমূল। আর সে কারণেই সাজদা এ বার টিকিট পাবেন কি না, তা নিয়ে দলের একাংশের সংশয় তৈরি হয়েছিল।
দলের গ্রামীণ জেলা সভাপতি মানছেন, ‘‘জনসংযোগের ক্ষেত্রে সুলতান ছিলেন ব্যতিক্রম। জনসংযোগের ক্ষেত্রে তাঁর মতো তুখোড় সাংসদ দেশে বিরল। আসল কথা, সুলতান এলাকার মানুষের মধ্যে একটা উচ্চাশা তৈরি করে দিয়েছেন। তার ফলেই সাংসদদের কাছে মানুষের প্রত্যাশা বেড়ে গিয়েছে।’’ পূর্তমন্ত্রী পুলক রায় বলেন, ‘‘সব স্তরের নেতা-কর্মীরা মানুষের সঙ্গে সব সময় থাকি। জনসংযোগ কোনও সমস্যাই নয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy