Advertisement
Back to
Presents
Associate Partners
Mamata Banerjee

‘ইন্ডিয়া’ দেশে সরকার গঠন করলে যোগ দেবে না তৃণমূল! বাইরে থেকে সমর্থন করবেন, অবস্থান জানালেন মমতা

মমতার বলা ‘বাইরে থেকে সমর্থন’ দেওয়ার কথা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে আলোচনা শুরু হয়েছে। তৃণমূলনেত্রী ঠিক কী বোঝাতে চেয়েছেন তা শাসকদলেরই অনেকের কাছে স্পষ্ট নয়।

TMC will support the opposition alliance government from outside, said Mamata Banerjee

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: ফেসবুক।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ মে ২০২৪ ১৮:১৫
Share: Save:

লোকসভা ভোটের পরে দেশে বিজেপি-বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র সরকার গঠন হলে, তাতে যোগ দেবে না তৃণমূল। এমনই ইঙ্গিত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। বুধবার হুগলির জেলা সদর চুঁচুড়ায় তৃণমূল প্রার্থী রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমর্থনে সভা করেন তিনি। মমতা বলেন, “ইন্ডিয়াকে নেতৃত্ব দিয়ে, বাইরে থেকে সব রকম সাহায্য করে আমরা সরকার গঠন করে দেব। যাতে বাংলায় আমার মা-বোনেদের কোনও দিন অসুবিধা না-হয়, ১০০ দিনের কাজে কোনও দিন অসুবিধা না-হয়।”

মমতার বলা ‘বাইরে থেকে সমর্থন’ নিয়ে রাজনৈতিক মহলে আলোচনা শুরু হয়েছে। অতীতে বাংলার প্রাক্তন শাসকদল সিপিএম-সহ বিভিন্ন বামদল মন্ত্রিসভায় যোগ না-দিয়ে বাইরে থেকে কেন্দ্রের প্রথম ইউপিএ সরকারকে (মনমোহন সিংহের নেতৃত্বাধীন) সমর্থন করেছিল। অন্য দিকে মমতা এবং তাঁর দল তৃণমূল অতীতে একাধিক বার কেন্দ্রীয় সরকারে সরাসরি শামিল হয়েছে। ‘বাইরে থেকে সমর্থন’ করেন একবারই। ১৯৯৮ সালে তৈরি হওয়া ১৩ মাসের অটলবিহারী বাজপেয়ী সরকারে যোগ দেননি মমতা। সমর্থন দেন বাইরে থেকে। পরবর্তীতে বাজপেয়ী এবং মনমোহনের মন্ত্রিসভায় নানা সময়ে থেকেছেন মমতা-সহ তৃণমূলের নেতানেত্রীরা। ১৯৯৯ থেকে ২০০৪ পর্যন্ত তৃণমূল বাজপেয়ী সরকারে ছিল (মাঝের একটা পর্ব বাদ দিয়ে)। মনমোহনের মন্ত্রিসভায় মমতা যোগ দেন ২০০৯ সালে। ২০১১-তে তিনি মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পরও বেশ কিছু দিন তৃণমূলের প্রতিনিধিত্ব ছিল সেই সরকারে।

শনিবার ‘ইন্ডিয়া সরকারকে বাইরে থেকে সমর্থন’ নিয়ে যে মন্তব্য করেছেন মমতা, তার ব্যাখ্যায় যেতে তৃণমূলের অন্য নেতানেত্রীরা অনেকেই রাজি নন। কুণাল ঘোষ বলেন, “দলের লাইন কী হবে, অবস্থান কী হবে, সে ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন নেত্রীই। তাই তাঁর কোনও মন্তব্যের উপর মন্তব্য করব না।” পাশাপাশি কুণাল বলেন, “তবে একটা বিষয় স্পষ্ট যে, বিজেপি হারছে। বিরোধী জোট ইন্ডিয়া দিল্লিতে বিকল্প সরকার গঠন করছে। এবং তাতে নিয়ন্ত্রকের ভূমিকায় থাকবে তৃণমূল। বাংলার দাবিদাওয়া আদায়ের ক্ষেত্রে ভূমিকা নেব আমরাই।”

চুঁচুড়ার সভায় মমতা বুধবার বলেন, “বিজেপি অহঙ্কার করে বলেছিল, ইস্ বার চারশো পার। মানুষ বলছে, নেহি হোগা দোশো পার। এই বার হবে পগারপার।” সর্বভারতীয় স্তরে বিজেপি বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র কথা বলতে গিয়ে বুধবারও বাংলার বাম-কংগ্রেসকে বেঁধেন মমতা। তৃণমূলনেত্রী বলেন, “বাংলায় সিপিএম, কংগ্রেস আমাদের সঙ্গে নেই। ওই দুটো বিজেপির সঙ্গে রয়েছে।” এর পরেই ভোট পরবর্তী দিল্লিতে কী সমীকরণ হবে, সে ব্যাপারে তৃণমূলের অবস্থান জানান নেত্রী।

২০০৪ সালে অটলবিহারী বাজপেয়ী সরকারের পতন নিয়েও বুধবারের সভায় মন্তব্য করেন মমতা। সেই সময়ে মমতা ছিলেন বিজেপির শরিক। তাঁর কথায়, “অটলজি শ্রদ্ধেয় মানুষ ছিলেন। সেই সময়ে আমরা বুঝতে পারিনি, সরকারটা চলে যাবে। ‘শাইনিং ইন্ডিয়া’ স্লোগান দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু মানুষ ভিতরে ভিতরে ঠিক করে নিয়েছিল।” ২০০৪ সালের সেই ভোটের পরই প্রথম ইউপিএ সরকার তৈরি হয়েছিল। সরকারের অন্যতম নিয়ন্ত্রক ছিল বামেরা। তবে তারা মন্ত্রিসভায় যোগ দেয়নি। বাইরে থেকে সমর্থন করেছিল। বিশ বছর আগে বামেরা যে কৌশল নিয়েছিল, ২০২৪ সালে তেমনই অবস্থানের কথা আগাম শোনা গেল তৃণমূলনেত্রী মমতার বক্তৃতায়।

বিকল্প সরকার হওয়ার যে ভবিষ্যদ্বাণী মমতা করেছেন, তা নিয়ে প্রত্যাশিত ভাবেই কটাক্ষ করেছে বিজেপি। রাজ্য বিজেপির অন্যতম মুখপাত্র রাজর্ষি লাহিড়ী বলেন, “স্বপ্ন দেখতে সবার ভাল লাগে। তৃণমূলনেত্রীও সেই স্বপ্ন থেকেই যা বলার বলেছেন। তৃণমূল জানে দিল্লিতে মোদীজিই ফের আসছেন, আর তৃণমূলও বাংলায় দুরমুশ হচ্ছে। যে তৃণমূল ২০০৯ সালে অতগুলো হাফপ্যান্ট মন্ত্রী নিয়েছিল, তারা মন্ত্রিত্ব ছেড়ে দেবে? এ কথা পাগলেও বিশ্বাস করবে না। দিদিমণি জানেন, সাত মন তেলও পুড়বে না, রাধাও নাচবে না।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Mamata Banerjee Tmc Leader INDIA Alliance TMC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE