(বাঁ দিকে) নরেন্দ্র মোদী। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
মোদী সরকার কী ভাবে কৃষিক্ষেত্রে তাদের ‘প্রতিশ্রুতি পালনে ব্যর্থ’, তা বিশদে বলা থাকবে তৃণমূলের লোকসভা ভোটের ইস্তাহারে। দলীয় শীর্ষ সূত্রের খবর, এ বারের ভোট দিল্লির কুর্সি দখলের হলেও, প্রতিতুলনায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গত ১২ বছরের প্রশাসনিক এবং জনকল্যাণমূলক যোজনাগুলিকে আদর্শ মডেল হিসেবে রাখা হবে। ইস্তাহারের থিম — মোদীর গ্যারান্টি টেকসই নয়, কিন্তু তৃণমূল সরকারের প্রকল্প জনসাধারণের আস্থা অর্জন করেছে।
এখনও পর্যন্ত দলের চারটি বৈঠক হয়েছে ইস্তাহার নিয়ে। সরকারের বিশেষ আর্থিক উপদেষ্টা অমিত মিত্রের নেতৃত্বে একটি কমিটিও তৈরি হয়েছে এই বিষয়ে, যেখানে রয়েছেন ডেরেক ও ব্রায়েন, সুখেন্দুশেখর রায়, শশী পাঁজা, চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। তবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দোপাধ্যায় এই ইস্তাহার প্রক্রিয়ার মূল চালিকাশক্তি বলেই জানানো হয়েছে। যাতে ‘কৃষিক্ষেত্র, অর্থনীতি, বিকল্প জাতীয় নীতি, যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো, সার্বভৌমত্ব, সমবণ্টন, সমাজের সব শ্রেণিকে সঙ্গে নিয়ে চলার’ মতো বিষয়গুলি নিয়ে পৃথক অঙ্গীকার এবং অনুচ্ছেদ রাখার কথা ভাবা হচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গ সরকার এখনও পর্যন্ত সাধারণ মানুষের জন্য যে যে কর্মসূচি নিয়েছে, সেগুলিকে ইস্তাহারে ‘শো কেসিং’ করার নির্দেশ দিয়েছেন মমতা।
দলীয় সূত্রের দাবি, এ বারের নির্বাচনে তৃণমূলের ‘তুরুপের তাস’ লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্প। স্বাভাবিকভাবেই ইস্তাহারে তা বিশেষ গুরুত্ব পেতে চলেছে। বলা হবে, এই টাকা শুধু মহিলাদের হাত খরচের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকছে না, জীবন বদলাতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা
নিচ্ছে। কোনও কোনও পরিবারে তিন মহিলা সদস্য যখন এই টাকা পাচ্ছেন, তাঁরা সম্মিলিতভাবে সংসার সামলে নিতে পারছেন। পাশাপাশি ১০০ দিনের কাজ এবং কেন্দ্রীয় আবাস যোজনার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে টাকা না দেওয়ার অভিযোগ এবং মমতার ‘বিকল্প দিশা’র কথা থাকবে।
অমিত মিত্র আগেই জানিয়েছেন, নারী, যুব, কৃষক, দলিত, শ্রমিক সকলের কথাই ইস্তেহারে উল্লিখিত হবে, সবুজসাথী থেকে স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড কিংবা লক্ষ্মীর ভান্ডারের মতো প্রকল্পগুলি রাষ্ট্রীয় স্তরে পৌঁছনোর প্রতিশ্রুতি দেওয়া থাকবে। গুরুত্ব পাবে ‘যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামো এবং গণমাধ্যমের কণ্ঠরোধ করার অভিযোগ, ধর্মনিরপেক্ষতায় আঘাত হানার’ মতো বিষয়।
কৃষিক্ষেত্রে কী ভাবে তৃণমূল সরকারের দু’টি প্রকল্প জাতীয় মডেল হয়ে উঠতে পারে তা নিয়ে বিস্তারিত থাকার কথা ইস্তাহারে। ২০১৯ এ চালু হয়েছিল কৃষকবন্ধু প্রকল্প। রাজ্য সরকারের দাবি, এর ফলে উপকৃত হয়েছেন ১ লক্ষ ৭ হাজার কৃষক। সরকারের মোট ব্যয় হয়েছে ২১৪০ কোটি টাকা। কৃষকরা সরাসরি সরকারকে ধান বেচতে পারেন, রাজ্য সরকারেরই অন্য প্রকল্প বাংলা শস্য বিমা যোজনার সুফল পান। রাজ্য সরকারের দাবি, পশ্চিমবঙ্গে কৃষকের আয় বেড়েছে ৩ গুণ, কমেছে আত্মহত্যা। এই বিষয়গুলির বিশদ উল্লেখ থাকার কথা ইস্তাহারে।
পাশাপাশি ইস্তাহারে বলা হবে, ২০১৪ সালে বিজেপি নির্বাচনী ইস্তাহারে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল ২০১৯-এর মধ্যে কৃষকদের আয় দ্বিগুণ হবে। ২০১৭ সালে তারা জানায়, ২০১৯ নয়, এই লক্ষ্য পূরণ হবে ২০২২-এর মধ্যে। উল্টে কৃষকদের অবস্থা আরও শোচনীয় হয়েছে। ফসলের ন্যূনতম সহায়ক মূল্যের প্রশ্নে আইনি প্রতিশ্রুতি দেওয়ার ক্ষেত্রেও মোদী সরকার যে কথার খেলাপ করেছে, সেই অভিযোগও রাখা হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy