Advertisement
E-Paper

কহো না বাবুল হ্যায়, শুরু নয়া ইনিংস

লগ্ন ছিল ভরসন্ধ্যায়। পুরোহিত পিছিয়ে দিলেন। বললেন, রাত ১টা নাগাদ যে দ্বিতীয় লগ্নটি আছে, সেটিই বেশি শুভ।রাজধানীতে মন্ত্রীমশাইয়ের বিবাহ অনুষ্ঠান তাই গড়িয়ে গেল শেষরাতে।

অগ্নি রায়

শেষ আপডেট: ১০ অগস্ট ২০১৬ ০৩:৪৭
সস্ত্রীক বাবুল সুপ্রিয়কে অভিনন্দন জানাচ্ছেন রাজনাথ সিংহ

সস্ত্রীক বাবুল সুপ্রিয়কে অভিনন্দন জানাচ্ছেন রাজনাথ সিংহ

লগ্ন ছিল ভরসন্ধ্যায়। পুরোহিত পিছিয়ে দিলেন। বললেন, রাত ১টা নাগাদ যে দ্বিতীয় লগ্নটি আছে, সেটিই বেশি শুভ।

রাজধানীতে মন্ত্রীমশাইয়ের বিবাহ অনুষ্ঠান তাই গড়িয়ে গেল শেষরাতে। অবশ্য রাত যত বাড়ল, নীতি মার্গের অশোক হোটেলের কনভেনশন সেন্টার ততই ভরে উঠল তারায় তারায়— যেখানে একাকার হল রাজনীতি আর সেলুলয়েড। শুভদৃষ্টি, মালাবদল, সিঁদুর দানে রচনা শর্মার সঙ্গে নতুন জীবনের গান গাইলেন বাবুল সুপ্রিয়।

বিয়ে মূলত বাঙালি মতে হলেও পাত্রীপক্ষের পঞ্জাবি পুরোহিতও ছিলেন। বাবুল মজা করে বলেছিলেন, ‘‘দুই পুরোহিতই থাকবেন। যাঁর মন্ত্র ছোট এবং উচ্চারণ করা সোজা— আমি সেটাই পড়ব!’’ কেউ কেউ অবশ্য এ-ও বলছিলেন, বাবুলের সুপারহিট গানগুলোই আজ মন্ত্র হলে ক্ষতি ছিল না! সে ‘হাম তুম’ হোক, কিংবা ‘কহো না প্যার হ্যায়’!

দিল্লিতে অনুষ্ঠান। চতুর্দিকে তাই শেরওয়ানি, গলাবন্ধ, চুড়িদার-ঘাগরার ভিড়। বাবুল নিজেও সন্ধেয় শেরওয়ানি পরে ছিলেন। যদিও তখনই জানা গেল, তিনি বিয়েটা করবেন অগ্নিমিত্রা পলের ডিজাইন করা ধুতি-পাঞ্জাবিতে। রচনা পরবেন মেরুন বেনারসি। অগ্নিমিত্রা বললেন, ‘‘বাবুলের ইচ্ছে ধুতি-পাঞ্জাবি। তা-ও যেমন তেমন নয়। উত্তমকুমার যে ধরনের সাদা পাঞ্জাবি পরতেন, ঠিক তেমন।’’ তবে বিয়ের প্রধান চরিত্রটিকে তো আর একেবারে ‘সাদামাটা’ রাখা যায় না। তাই বাবুলের জন্য তৈরি হয়েছে মসলিনের কোঁচানো ধুতি, সাদা পাঞ্জাবিতে সোনালি জরির সূক্ষ্ম জারদৌসি কাজ।

ইদানীং অবশ্য বিয়ে নিয়ে বাড়তি সময় দেওয়ার অবকাশ ছিলই না কেন্দ্রীয় ভারী শিল্প প্রতিমন্ত্রীর। একে সংসদ চলছে, তার উপর গতকাল পর্যন্ত অফিসে গিয়ে ফাইল দেখেছেন। শুধু আজকের দিনটা ছুটি নিয়েছেন। শুক্রবার বাদল অধিবেশন শেষ হলে অবশ্য কিছু দিন নির্ঝঞ্ঝাট অবকাশ যাপনের সময় পাবেন। উত্তরপাড়া থেকে বাবুলের পরিবার গত কালই চলে এসেছে দিল্লিতে। আজ সকালে মা এবং পরিবারের অন্যরা গায়ে হলুদ দিয়েছেন। ছেলের বাড়ির তত্ত্ব অবশ্য গত কালই পৌঁছে গিয়েছে গ্রেটার কৈলাসে মেয়ের বাড়িতে। বৌভাত হবে ১২ নম্বর নিউ মোতিবাগে, মন্ত্রীর সরকারি বাসভবনে।

বিয়ের আসরে নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে সস্ত্রীক বাবুল।

আজ রাত ৯টা বাজতে না বাজতেই বিয়েবাড়িতে কার্যত গোটা কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ, প্রতিরক্ষামন্ত্রী মনোহর পর্রীকর। অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি এলেন একটু পরে। এলেন বেঙ্কাইয়া নায়ডু, রবিশঙ্কর প্রসাদ, রামবিলাস পাসোয়ান, দিগ্বিজয় সিংহরা। ত্রিপুরা সফরে যাওয়া মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আসতে না পারলেও তাঁর প্রায় পুরো টিম হাজির। ডেরেক ও’ব্রায়েন, সুখেন্দুশেখর রায়, সৌগত রায় থেকে সাংসদ-তারকা দেব, শতাব্দী রায়। আবার রাজ্য বিজেপির রাহুল সিংহ, দিলীপ ঘোষ, রূপা গঙ্গোপাধ্যায়, লকেট চট্টোপাধ্যায়, সিপিএমের ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়— কে নেই! কলকাতার দুই শিল্পপতি সঞ্জীব গোয়েন্কা এবং হর্ষ নেওটিয়া ছিলেনই। সাড়ে ৯টা নাগাদ এসে পড়লেন ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত আর সৃজিত মুখোপাধ্যায়। তত ক্ষণে গানের ব্রিগে়ডও জমজমাট— অনু মালিক, ললিত পণ্ডিত, শান, অভিজিৎ, কৈলাস খের।

রাজ্যবর্ধন সিংহ রাঠৌর, মনোজ তিওয়ারিরা বাবুলকে ধরেছিলেন, ‘একটু গানবাজনা না হলে চলবে না!’ একে তিনি গানের মানুষ, তার ওপর মন্ত্রীর বিয়ে তো খুব বেশি দেখে না দিল্লি! কিন্তু আজ বাবুল চাইছিলেন, কোলাহল এড়িয়ে নিচু তারেই বাঁধা থাক সন্ধেটা। অর্কেস্ট্রায় তাই বাজছিল কিশোরকুমারের গানের হাল্কা সুর।

তবে শেষ পর্যন্ত গানেরই জিত। মাঝরাতের একটু আগে শান-অভিজিৎ-কৈলাসদের সঙ্গে গেয়ে উঠলেন বাবুল— ‘ইয়ে শাম মস্তানি...।’

নতুন ইনিংস শুরু হতে তখন বাকি আর ঘণ্টাখানেক!

—নিজস্ব চিত্র।

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy