Advertisement
E-Paper

পায়ে পায়ে সান্দাকফু

সূর্যের ওম নেওয়া কাঞ্চনজঙ্ঘার সাজানো সংসারে এখন চন্দ্রিমার আভাস। লিখছেন শান্তনু চক্রবর্তীএ পাহাড় বাংলার সবচেয়ে উঁচু। চরাই আর তীব্র বাঁকের পাকা রাস্তা। মাঝে মাঝে কুয়াশার আস্ফালন। চলে এলাম, চিত্রে। মেঘের ফাঁকে একচিলতে রোদ্দুর, চল্কে এসে পড়েছে ছোট্ট গোম্ফার ছাদে।

শেষ আপডেট: ২৪ মার্চ ২০১৮ ২৩:৩১
চক্রাকার কালিপোখরিতে শুধুই রঙিন মন্ত্রপূত পতাকার পতপত উড়ান।

চক্রাকার কালিপোখরিতে শুধুই রঙিন মন্ত্রপূত পতাকার পতপত উড়ান।

ট্রেন থেকে এনজেপি নামতেই দেখি শুধু কালো কালো মাথা। রাজ্যর নানা প্রান্ত থেকে পর্যটক এসেছেন। বৃষ্টির দাপটে উত্তরবঙ্গে হিমেল আবহ। এনজেপিতে আগে থেকেই অপেক্ষা করছিল শিবা দাজু। আমরা তিন বন্ধু। মনে পড়ে গেল, সেই কলেজের ছুটিতে ১০ বন্ধু মিলে সান্দাকফু আসার কথা। আজ আবার বছর ২০ বাদে।

উইন্ডস্ক্রিনে বৃষ্টির বুলেট নিয়েই সেবক-কার্শিয়াং পেরিয়ে, মোমো সেবন। তারপর আবার চলা। বৃষ্টি নেই, তবে আকাশের মুখ গোমড়া। চলে এলাম, মানেভঞ্জন। দুই পাহাড়ের মাঝে ৬,৯৯০ ফুট উচ্চতার এক জমজমাট গঞ্জ। পাহাড়ের ঢালে বসতবাড়ি আর নানা দোকান। গাইড, পোর্টার আর দালালের ছড়াছড়ি। চেনা রাস্তা। তাই গাইড বা পোর্টার সঙ্গে নিলাম না। এখান থেকে যাত্রা শুরু। দু’ভাবে যেতে পারেন। একটা ট্রেক করে, অন্যথায় ল্যান্ডরোভারে চেপে। এখান থেকেই হাঁটার শুরু। বাঁধানো পিচের রাস্তা আর আকাশচুম্বী পাইন আর ধুপির বনানী ঘেরা রাস্তা চলে গিয়েছে। পাহাড় আঁকা সোজা। আর পাহাড়ে চড়া ততটাই কঠিন। এ পাহাড় বাংলার সবচেয়ে উঁচু। চরাই আর তীব্র বাঁকের পাকা রাস্তা। মাঝে মাঝে কুয়াশার আস্ফালন। চলে এলাম, চিত্রে। মেঘের ফাঁকে একচিলতে রোদ্দুর, চল্কে এসে পড়েছে ছোট্ট গোম্ফার ছাদে। বিস্তৃত পাহাড়ের ঢালে মখমলি সবুজ বুগিয়ালে।

২৩৫৯ মিটার উচ্চতার ছবি আঁকা চিত্রে-তে সুপি নুডলস খেয়ে আবার চলার শুরু। কয়েকটা বাঁক পেরোতেই পিচ রাস্তা ইতি টানল। কাঁচা পাথুরে পথ। দু’পাশের ঘন জঙ্গল আর পাহাড় জড়ানো মনোরম সে পথ।

দুই পাহাড়ের মাঝে এক জমজমাট গঞ্জ মানেভঞ্জন

কিছু দূরেই বাঁশের ছোট্ট গুমটি চোখে পড়ল। এটাই লামিধুরা। ২৮০০ মিটার উচ্চতায় হিমেল হাওয়া আর ঝিরিঝিরে বৃষ্টি শুরু হয়েছে। আমরা তিন জনে এক ছুট্টে ঢুকে পড়লাম। বাইরের প্রকৃতি অসম্ভব রোম্যান্টিক। পাশ কাটিয়ে হেলতে দুলতে পর্যটক বোঝাই বেশ কয়েকটা ল্যান্ডরোভার চলে গেল।

আবার বেরিয়ে পড়লাম। অরণ্য আর সবুজের অসামান্য মিশেল। রাস্তা চড়াই, কোথাও উতরাই। মেঘ যেন ধেয়ে আসছে। পাশের অতলান্ত খাদ ঢেকেছে মেঘের আস্তরণে। এই জায়গার নাম মেঘমা। মেঘেদের সুইমিং পুল বললে ভুল হবে না। কিছু দূরে, রঙচটা মনাস্ট্রি আর পুরনো ঘর। জড়ো করা পাথরে ওঁ-হুম-মণি-পদ্ম লেখা। দূরে স্কুলছুট কচিকাঁচাদের হুল্লোড়ে নিঝুম মেঘমা সরগরম হয়ে ওঠে। সামনের পথ আরও চড়াই। দু’পাশের মনোরম দৃশ্য দেখতে দেখতে চলে এলাম, ২৮৬৯ মিটার উচ্চতার তুমলিং।

আরও পড়ুন: রংবুল-তাকদা-লামাহাট্টা-দাড়া

আজ এখানেই রাত্রিবাস। অবাক হয়ে দেখলাম, ২০ বছরে কতটা বদলে গিয়েছে। আগে এখানে হাতে গোনা রাত্রিবাসের ঠিকানা ছিল। এখন অনেক। পাহাড়ের আনাচেকানাচে। সুন্দর রঙিন ফুলের বাহারে সেজে উঠেছে নেপালের এই ছোট্ট পাহাড়ি গ্রাম। সান্দাকফুর এই ট্রেক রুটের বেশ কিছু জায়গা আছে, যা আমাদের প্রতিবেশী রাষ্ট্র নেপালের অন্তর্ভুক্ত। ঝিরঝিরে বৃষ্টিতে কালচে আকাশে একফালি চাঁদের টুকরো। সেইসঙ্গে গরম কফি আর পকোড়া। একসময় বৃষ্টি থামল। জ্যাকেট চাপিয়ে বাইরে এসে আকাশের দিকে তাকাতেই চক্ষু চড়কগাছ! লক্ষ তারার ব্রিগেড। ২০ বছর আগের এই ছবির বদল হয়নি। রাত বাড়ছে। বাড়ছে হাওয়ার দাপট।

সুন্দর রঙিন ফুলের বাহারে সেজে উঠেছে নেপালের এই ছোট্ট পাহাড়ি গ্রাম তুমলিং

পরদিন ভোর ৪টে নাগাদ আবার উঠে পড়লাম। ঘুটঘুটে অন্ধকার। সদ্য ঘুম ভাঙা তুমলিং। আকাশ পরিষ্কার। আমরা যাব দূরের পাহাড় টঙে। পাক্কা এক কিমির চড়াই। পাথুরে রাস্তা ধরে এগিয়ে চলেছি। আধো অন্ধকারে পুব দিগন্ত লক্ষ্য করে এগিয়ে চলেছি। প্রায় ৩০ মিনিটে পৌঁছে গেলাম, টংলু’র পাহাড় টঙে। আমাদের মতো অনেকেই এসেছেন। পাহাড়ের মাথায় জিটিএ ট্রেকারস হাট।

বাংলোর রুমের জানলা থেকেই সারি সারি শৃঙ্গরাজের দর্শন মেলে। বাংলোর নীচের দিকটায় ডিম্বাকৃতির পবিত্র লেক। কাঞ্চনজঙ্ঘার প্রতিচ্ছবির প্রতিবিম্ব দেখতেই দেশি-বিদেশি চিত্রগ্রাহকদের ভিড়। আকাশ আলোয় উদ্ভাসিত। অন্ধকারের খোলস ছেড়ে আকাশের প্রান্ত জুড়ে শৃঙ্গরাজদের দাপাদাপি। সোনা রঙা রোদের গুঁড়ো তাদের শরীরে চলকে পড়ছে। হিমেল বাতাসের দমকে ভেসে আসছে ক্যামেরার ক্লিক-ক্লিক। সবাই সেই স্বর্গীয় দৃশ্য ক্যামেরাবন্দি করে রাখতে চাইছেন। সে দৃশ্যের মাদকতায় সব্বাই বুঁদ। টংলুর পূর্বপ্রান্ত জুড়ে সিকিম-ভুটানের পর্বতশ্রেণি। উত্তরপ্রান্ত জুড়ে কাঞ্চনজঙ্ঘার বিস্তার। দক্ষিণে নেপালের ইলাম-এর সবুজ গ্রাম। আর চারধারে সবুজের চাদর জড়ানো মখমলি উপত্যকার ঢেউ। লাল গুরাস আর গোলাপি সফেদ ম্যাগনোলিয়ার মুগ্বতা। মিঠে রোদের আশনাইতে ভেসে যায় সেই আদুরে উপত্যকা। ট্রেকার্স হাট থেকে ব্রেকফাস্ট সেরে বেরিয়ে পড়লাম। বৃক্ষবৈচিত্র আর প্রাকৃতিক শোভায় ভরপুর এ পথের প্রান্তে তুমলিং ফটক। বড়ই মধুর এ পথ পেরিয়ে আবার অরণ্যের মাদকতা মাখা রাস্তা ধরে এগিয়ে চলা। মাঝে মাঝে থামতে হচ্ছিল পাখির ছবি তোলার জন্য। চড়াই-উতরাই বেয়ে চলে এলাম গৈরিবাস। পেছনে তাকিয়ে দেখি আমার বন্ধুরা উধাও!

সোনা রঙা রোদে সেজে উঠেছে পাহাড় চূড়া

ঘন জঙ্গলের মাঝে ২৫৩৬ মিটার উচ্চতায়, একটুকরো পাহাড়ি গ্রাম। বাঁ দিকে নেপাল আর ডান দিকে ভারত। এখানে থাকার জন্য পাহাড়ের ঢালে বনবাংলো আর ট্রেকার্স হাট রয়েছে। এখানে ঢুকেই আবিষ্কার করলাম, আমার দুই বন্ধু বসে সুপি নুডলস সাবাড় করতে ব্যাস্ত। অবশ্য আমিও বাদ গেলাম না। পুবে, মানে ভারতের দিকে এক সবুজমাখা উপত্যকার আভাস পেলাম। রিথুখোলার সেই গভীর জঙ্গলে মাথার উপর দিয়ে ভেসে যাচ্ছে সাদা মেঘের ভেলা। আর পশ্চিমপ্রান্তে নেপালের ইলাম জেলার মেঘছোঁয়া গ্রাম। আবছা কুয়াশায় ঢেকে আছে যমুনা গ্রাম। আর উপরের দিকে সিঙ্গালিলা জাতীয় উদ্যানের আদিম, গহন অরণ্যের হাতছানি। সামনের চেকপোস্টে সামান্য পুছতাছ। আইডি কার্ড দেখে নিলেন ওঁরা, ঢুকে পড়লাম, সিঙ্গালীলা জাতীয় উদ্যানের অন্দরমহলে। নিঝুম সে বনতল। সে পথ বড্ড চড়াই। চারপাশে শুধুই সবুজ আর সবুজ। এ বার চলে এলাম কেয়াকাতা। ২৭৯০ মিটার উচ্চতায় ছোট্ট গ্রাম। চায়ের দোকান দেখে বসে পড়লাম। কিছু ক্ষণ বিশ্রাম নিয়ে আবার চলার শুরু।

আরও পড়ুন: নিভৃতির হদিস নিয়ে পর্যটন তালিকায় আসছে ঝর্নাকোচা

কোথা থেকে মেঘের দল যেন উড়ে এসে জুড়ে বসছে। পাহাড়ের সবুজেরা নেচে নেচে উঠছে। দুপুর দেড়টা বাজে। আবার চলার শুরু। পেটে ছুঁচোর ডন। আমাদের লাঞ্চ বলা আছে কালিপোখরিতে। মাঝে মাঝে পর্যটক ভর্তি জিপ পাশ কাটিয়ে চলে যাচ্ছে। অবশেষে সেই পবিত্র কালো পুকুরের দেখা মিলল। নিকষ কালো টলটলে জল। চক্রাকার এই পবিত্র পোখরির পাড় জুড়ে শুধুই রঙিন মন্ত্রপূত পতাকার পতপত উড়ান। পবিত্র এই পোখরির নামেই এই জায়গার নাম, কালপোখরি।

২৯৯১ মিটার উচ্চতায় এই গ্রামের কিছুটা ভারত। কিছুটা নেপাল। পথের দুপাশে নানান লজ। এখানেই লাঞ্চ। হাতে গরম রুটি আর চিকেন কষা। কালপোখরি তার রুপের বাহার ক্ষণে ক্ষণে পরিবর্তন করছে। মেঘের ফাঁক দিয়ে গলে চল্কে পরছে রোদের ঝলক। ও পাশে নেপালের দিকটায় কুয়াশা আর মেঘমেশা এক অদ্ভুত আস্তরণ।

বাংলোর রুমের জানলা থেকেই সারি সারি শৃঙ্গরাজের দর্শন মেলে

তবে এই রুটের সবচেয়ে কঠিন রাস্তাটি হল বিকেভঞ্জ থেকে সান্দাকফুর কঠিন চড়াই। এখন বিকেল সাড়ে ৩টে। এখান থেকে পাহাড়ের বুক চিরে একফালি রাস্তা উঠে গিয়েছে। চার দিকে ছবির মতো সাজান প্রকৃতির সাজঘর। লাল রডোডেনড্রনের বাহারি পথ এসে মিশেছে চৌরিচকে। ছোট্ট পাহাড়ি গ্রাম। না, এখানে আর থামা নয়, সামনেই বিকেভঞ্জ। কালপোখরি থেকে বিকেভঞ্জ মাত্র ২ কিমি।

অবশেষে বিকেভঞ্জ। এখান থেকে সান্দাকফু মাত্র ৪ কিমি। বিকেলের আলো ফুরিয়ে আসার আগেই পৌঁছতে হবে। সামনে প্রাণান্তকর চড়াই। কিছুটা গিয়েই আবার ক্ষণিকের বিশ্রাম। তারপর আবার হাঁটা। আকাশ ঝকঝকে হলেও সেই আলো এই রাস্তায় পৌঁছয় না। হিমেল হাওয়ার দাপট থাকা সত্ত্বেও অত ঠান্ডা লাগছে না। চড়াই ভাঙার তালে চোখে পড়েনি এ পথের বৃক্ষবৈচিত্র। ঘরে ফেরা পাখিদের কিচিরমিচির। পাতার ফাঁকে আলোর খেলা দেখতে দেখতে পাথুরে পথের বাঁকে বাংলার উচ্চতম পয়েন্টে উঠে এলাম, ৩৫২৪ মিটার উচ্চতার সান্দাকফু-তে।

স্বাগত জানাল হিমালয়ের টাটকা বাতাসের দমক। প্রথমেই চলে এলাম ভিউপয়েন্টের দিকে। সূর্য অস্ত গেছে। জেগে লালচে আভামাখা হিমেল শৃঙ্গরাজেরা। দিকচক্রবাল জুড়ে মায়াবি আগুনরঙের খেলা। সূর্যের ওম নেওয়া কাঞ্চনজঙ্ঘার সাজানো সংসারে এখন চন্দ্রিমার আভাস। আকাশে অদ্ভুত আলোর বহ্নিশিখা ম্লান হয়ে এখন জাফরিকাটা জ্যোৎস্নায় ভেসে যাচ্ছে সান্দাকফু।

সান্দাকফুর নেপালের দিকে উঁচু ঢিবির ধারের এক হোটেলে আমাদের থাকার ঠিকানা। ক্লান্ত শরীর আর বেশি ক্ষণ সঙ্গ দিল না। ক্লান্ত হয়ে শুয়ে পড়লাম। তিন তলার উপরের ভ্যালি ভিউ রুম। কাচের জানলা আর দরজায় শুধুই ঠকঠক ঠকাস। হাওয়ার দাপটে জানলা ভেঙে যাওয়ার জোগাড়। ডিনার দিয়ে গেল রুমেই। দু’চোখের পাতা এক না হওয়া পর্যন্ত তিনজোড়া চোখ সামনের ক্যানভাসে। ঢেউ খেলানো ভ্যালিতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে ট্রেকার্স হাট। বাঁ দিকের ঢিবিতে ভিউ পয়েন্ট। হিমঝরা চাঁদনি রাতে, কালচে নীল আকাশে ঝাঁকে ঝাঁকে তারা দখল নিয়েছে। দূরের কাঞ্চনজঙ্ঘার সংসারে মায়াবি আলোর রোশনাই।

পরদিন ভোরে গরম কাপড়ে নিজেকে মুড়ে বেরিয়ে পড়লাম। সে কী মারাত্মক ঠান্ডা সিঙ্গালিলা জাতীয় উদ্যানের অপার্থিব নন্দনকানন সান্দাকফু-র ভিউপয়েন্টে।

ঢেউ খেলানো ভ্যালিতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে ট্রেকার্স হাট

ভোরের আলোকোজ্জ্বল আকাশে বুক চিতিয়ে দাঁড়িয়ে আছে মাউন্ট জানু (কুম্ভকর্ণ), কাঞ্চনজঙ্ঘা ১, ২, ৩ , কাব্রু নর্থ, কাব্রু সাউথ, রাথং, কোকতাং, ফ্রে। কুম্ভকর্ণের আরও বাঁ দিকে রয়েছে মাউন্ট এভারেস্ট, মাকালু, লোৎসে। আর একেবারে পুবদিগন্তে একা দাঁড়িয়ে আছে ভুটানের চোমলহরি। কাঞ্চনজঙ্ঘার শায়িত বুদ্বের শরীরে সূর্য প্রথম কিরণ ছুঁয়ে গেল। তারপর শুধুই রং বদলের খেলা। প্রচন্ড হিমেল হাওয়ার দাপটে দাঁড়িয়ে থাকা দুষ্কর। ভোর সাড়ে ৪টে থেকে সকাল ৭টা পর্যন্ত সান্দাকফুর রূপবদলের প্রতিটি মুহূর্ত ম্যাজিক্যাল। এ বার সাদা মেঘের আঁচলে ডুবে গেল অধিকাংশ শৃঙ্গরাজ। এর পর জঙ্গল পাহাড়ে মোড়া সান্দাকফু খেয়ালি আবহাওয়ার দখলে চলে গেল। অনেকেই সান্দাকফু থেকে মোলে হয়ে ২১ কিমি দূরের ফালুটে আসেন। এখন ফালুট পর্যন্ত জিপে চলে আসা যায়। হেঁটে এলে মাঝে মোলে-তে রাত্রিবাস করে পরদিন প্রায় ১১,৮০০ ফুট উচ্চতার ফালুটে চলে আসেন। না, আমরা সে পথে যেতে পারলাম না। কারণ, আমাদের গন্তব্য আরও এক নতুন ঠিকানায়।

কী ভাবে যাবেন: কলকাতা থেকে ট্রেনে এনজেপি। সেখান থেকে গাড়িতে মানেভঞ্জন। এখান থেকে ল্যান্ডরোভারে যাঁরা সান্দাকফু যাবেন তাঁদেরকে দুপুর ১২টার মধ্য হাজির হতে হবে, মানেভঞ্জন সিঙ্গালুলা ল্যান্ডরোভার অ্যাসোসিয়েশনের অফিসে। ৮১৪৫৫৮-২২২৭০৮। প্রথম দিন মানেভঞ্জনে থাকতে পারেন। পর দিন ভোরবেলা যাত্রা শুরু করে ৩২ কিমি চড়াই উতরাই পেরিয়ে পৌঁছে যান, সান্দাকফু হিলটপে। যাঁরা হেঁটে যাবেন তাঁরা তাঁদের শারীরিক সক্ষমতা অনুযায়ী হাঁটুন। প্রথম দিন তুমলিং বা টংলু। দ্বিতীয় দিন কালপোখরিতে বিশ্রাম অথবা সরাসরি সান্দাকফু চলে আসা যায়।

সান্দাকফুর রূপবদলের প্রতিটি মুহূর্ত ম্যাজিক্যাল

কোথায় থাকবেন: মানেভঞ্জন থেকে সান্দাকফু, এই ট্রেক রুটে থাকার জন্য জিটিএ ট্রেকার্স হাট রয়েছে। এখানে থাকার জন্য বেশ কিছু প্রাইভেট লজও আছে।

সান্দাকফুতে থাকার জন্য রয়েছে জিটিএ-র লজ। কলকাতায় জিটিএ অফিসে যোগাযোগ করতে পারেন ।

জিটিএ ট্যুরিজম, গোর্খা ভবন, সল্টলেক (সিটি সেন্টারের উল্টো দিকে)

ডিডি-২৮, সেক্টর-১ সল্টলেক সিটি

কলকাতা-৭০০০৬৪

ফোন: (+৯১) ৯৯০৩১৭৪০৪৭, ০৩৩-২৩৩৭৭৫৩৪

লেখক পরিচিতি: ক্লাস নাইনে পড়াকালীন পাড়াতুতো মামার সঙ্গে মাত্র ৭০০ টাকা পকেটে নিয়ে সান্দাকফু ট্রেক। সুযোগ পেলেই প্রিয় পাহাড়ে পালিয়ে যাওয়া। বছরে বার কয়েক উত্তরবঙ্গের অল্পচেনা ডেস্টিনেশনে যাওয়া চাই। কুয়াশামাখা খরস্রোতা নদী কিংবা চলমান জীবনছবিতে ক্লিক, ক্লিক। চলতি পথে মেঠো গানের সুর শুনলেই ব্রেক কষে দাঁড়িয়ে পড়া। লাদাখে গর্তে সেঁধিয়ে যাওয়া মারমটের ছবি তুলতে ভিজে মাটিতে সটান শুয়ে অপেক্ষায় থাকা— এই নিয়েই ক্যামেরা আর কলম সঙ্গী করে ২২টা বছর। প্রকৃতির টানে ছুটে বেড়ানোটা থামেনি।

ছবি: শান্তনু চক্রবর্তী। সান্দাকফুর ছবি: প্রবীর চক্রবর্তী

Sandakphu Holiday Trip Tour Package Trekking
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy