ফেরা: পঞ্জাব ম্যাচ খেলে বুধবার ফিরল কেকেআর। কলকাতা বিমানবন্দরে গৌতম গম্ভীরের সঙ্গে ক্রিস লিন ও সুনীল নারাইন। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক
জোড়া ম্যাচ খেলতে যখন কলকাতা ছেড়েছিলেন গৌতম গম্ভীররা, লক্ষ্য ছিল প্লে-অফের জায়গা নিশ্চিত করা। কিন্তু সেই লক্ষ্য অপূর্ণ রেখেই ফিরতে হল কলকাতা নাইট রাইডার্সকে। তাই হয়তো বুধবার বিমানবন্দরে যে নাইটদের দেখা গেল, তাঁদের মধ্যে সেই চেনা মেজাজ ছিল না।
শনিবার প্রতিপক্ষ মুম্বই ইন্ডিয়ান্স। কিন্তু সেই ম্যাচে নামার আগে গম্ভীররা নিশ্চয়ই চোখ রাখবেন আজ, বৃহস্পতিবার মুম্বই বনাম পঞ্জাব ম্যাচের ওপর। যে ম্যাচ ঠিক করে দিতে পারে নাইটদের ভাগ্যও। অঙ্কটা খুব সোজা। পঞ্জাব যদি হেরে যায়, তা হলে প্লে-অফের চারটে দল হবে মুম্বই, কলকাতা, হায়দরাবাদ, পুণে। তখন নজর থাকবে গ্রুপে প্রথম দু’টো দল কারা হয়, তার ওপর।
কিন্তু পঞ্জাব জিতে গেলে প্লে-অফ নিশ্চিত করতে মুম্বইকে হারাতে হবে কলকাতার। নাইট শিবিরে খোঁজ নিয়ে জানা গেল, মিশন মুম্বইয়ে নামার আগে হোমওয়ার্ক শুরু হয়ে গিয়েছে। যে হোমওয়ার্কের নির্যাসে উঠে আসছে দু’টো শব্দ— হায়দরাবাদ মডেল।
লিগের এক নম্বর দল মুম্বইকে যে ভাবে থামিয়ে দিয়েছে ডেভিড ওয়ার্নারের টিম, সেটা তাতাচ্ছে কলকাতাকে। কেকেআর অন্দরমহলে খোঁজ নিয়ে জানা গেল, ইডেনের উইকেট পেস সহায়ক হওয়ায় পেসারদের ওপরই বেশি নির্ভর করতে চাইছেন জাক কালিস-গম্ভীররা। হায়দরাবাদ মডেল নাকি দেখাচ্ছে, শৃঙ্খলাবদ্ধ এবং নিখুঁত বোলিং কতটা প্রয়োজন মুম্বইয়ের রান মেশিন আটকাতে। মোহালিতে পঞ্জাবের বিরুদ্ধে অবশ্য হারের কারণ হিসেবে উঠে এসেছে নাইটদের ব্যাটিং বিপর্যয়। গৌতম গম্ভীর ম্যাচ শেষে স্বীকার করে নেন, ‘‘ইনিংসের মাঝখানে প্রচুর ডটবল খেলে ফেললাম আমরা। সেটাই হারের অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়াল।’’ আগের ম্যাচেই ক্রিস লিন ও সুনীল নারাইনের ওপেনিং জুটি যেখানে পাওয়ার প্লে-তে ১০৫ রান তুলে ফেলেছিল, সেখানে মোহালিতে ১৬৮ রানই তোলা গেল না। ক্রিস লিন ৫২ বলে ৮৪ রান করার পরেও বাকিরা সেই রানটা তুলতে ব্যর্থ। সুনীল নারাইন আগের দিন দ্রুততম হাফসেঞ্চুরি করার পরে ১০ বলে ১৮ রান করে থেমে যান। যার পর প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, কেন বারবার নারাইনকে দিয়ে ওপেন করানোর ফাটকা খেলছেন গম্ভীর?
আরও পড়ুন: সিংহের ডেরায় সিংহ বধ দিল্লির
মঙ্গলবার মোহালিতে সাংবাদিক বৈঠকে ক্রিস লিন বলেন, ‘‘নতুন ব্যাটিং লাইন আপ আমাদের। আমি আর সুনীল ওপেন করছি। এই নতুন কম্বিনেশনের কাছ থেকে অকল্পনীয় কিছু আশা করা যায় না।’’ তাঁর এই কথার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে ক্রিস বলেন, ‘‘আমি বলতে চাইছি, এই লাইন-আপ নিয়ে অন্য দল বেশ দুশ্চিন্তায় পড়েছে। এই হারেও অনেক ইতিবাচক ব্যাপার আছে। সেগুলো খুঁজে নিয়ে আমাদের শেষ ম্যাচে একটা বড়সড় জয় পেতে হবে।’’ লিন স্বীকার করে নেন যে ছয় ও এগারো ওভারের মধ্যে প্রচুর ডট বল খেলাই তাঁদের সমস্যায় ফেলে দেয় মঙ্গলবার। বলেন, ‘‘ওই সময়েই রান রেটটা কমে যায়।’’
মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে নামার আগে পঞ্জাব অবশ্য ফুটছে। নাইটদের বিরুদ্ধে ম্যান অব দ্য ম্যাচ মোহিত শর্মা যেমন বলেছেন, ‘‘চাপে থাকা তো ভাল। আমার মনে হয়, চাপের মুখে আরও ভাল পারফর্ম করা যায়। মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে সেটাই করতে চাই আমরা।’’ তবে পঞ্জাবের একটা বড় সমস্যা হল, এই আইপিএলে তাদের সেরা ব্যাটসম্যান হাসিম আমলাকে আর পাচ্ছে না পঞ্জাব। আমলা এবং ডেভিড মিলার— দু’জনেই দেশে ফিরে গিয়েছেন। তবে পঞ্জাবের বোলাররা এই মুহূর্তে ভাল ফর্মে আছেন। কিন্তু ওয়াংখেড়েতে মুম্বই ব্যাটিংকে কতটা চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলতে পারবে, সেটাই দেখার।
শনিবার ইডেনে আবার রোহিত শর্মাদের বিরুদ্ধে ওপেনিং জুটি বদলের ইঙ্গিত দিয়েছেন গম্ভীরও। কেকেআর অধিনায়ক মোহালিতে বলেছেন, ‘‘আমি ওপেন করতে এসে রবিনকে চারে নামাতে পারতাম। কিন্তু ভাবলাম সুনীল ভাল মারছে। ওকেই তাই পাঠালাম। পরের ম্যাচে ওপেনিং জুটি নিয়ে ভাবনা চিন্তা করতে হবে হয়তো। দেখা যাক কী হয়।’’
এই দু-দিন নাইটদের গবেষণাগার যে সরগরম থাকবে, তা বোঝাই যাচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy