লেলিহান: পার্ল হারবারে জাপানি হামলার পরে। রয়টার্সের ফাইল চিত্র।
পার্ল হারবারের ইতিহাস খুঁড়ে পরিচয় মিলল ১০০ জনের! প্রশান্ত মহাসাগরে হাওয়াইয়ের এই হ্রদ-বন্দরে জাপানি হানায় ডুবে যাওয়া মার্কিন যুদ্ধজাহাজ ব্যাটলশিপ ওকলাহোমা-র ১০০ জন নাবিক ও মেরিনকে শনাক্ত করা গেল ৭৬ বছর পরে। হাওয়াইয়ের সমাধিক্ষেত্র থেকে ৪০০ জনের দেহাবশেষ খুঁড়ে বার করে সেগুলির নমুনার সঙ্গে আত্মীয়দের ডিএনএ মেলানোর দীর্ঘ ও জটিল প্রক্রিয়ায় সম্ভব হয়েছে এটা।
ব্যাটেলশিপ ওকলাহোমা ডুবে যাওয়ার সময়ে সেটিতে ছিলেন ৪২৯ জন। পরের কয়েক বছরে মাত্র ৩৫ জনকে শনাক্ত করা গিয়েছিল। শনাক্তকরণের দরজা এক বার খুলে যাওয়ার পরে মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগের সংশ্লিষ্ট দফতরের আশা, ২০২০-র মধ্যে ওই যুদ্ধজাহাজের নিখোঁজ নাবিকদের ৮০%-কেই চিহ্নিত করা সম্ভব হবে। নিখোঁজ সেনাদের ৮৫%-এর আত্মীয়স্বজনের ডিএনএ সংগ্রহ রয়েছে তাদের। পার্ল হারবার ধ্বংসের পরে হাওয়াইয়ের গণকবরে মিলেমিশে গিয়েছিল অনেক দেহ। ২০১৫ সালে সেখান থেকে তুলে আনা ৩৮৮ জনের দেহ ১৬টি প্লটে ফের সমাহিত করা হয়েছে।
তবে হাওয়ার্ড ডব্লিউ বিন ফিরবেন নিজের শহরে। মৃত্যুর সময়ে এই রেডিওম্যানের বয়স ছিল ২৭। ৬ ডিসেম্বর টেক্সাসের আর্লিংটনে, জাতীয় সমাধি ক্ষেত্রে পুনরায় সমাহিত করা হবে তাঁর দেহাবশেষ। যে ১০০ জনের দেহাবশেষ এ পর্যন্ত চেনা গিয়েছে, তাঁদের বেশ কয়েক জনকে নিজের শহরে পুনর্সমাহিত করা হয়েছে ইতিমধ্যেই। বাকিদের স্থান হয়েছে হনলুলুর নিভে যাওয়া আগ্নেয়গিরির খাতে, জাতীয় স্মারক সমাধিক্ষেত্রে।
১৯৪১-এর ৭ ডিসেম্বর সকাল ৭টা ৪৮। পার্ল হারবারে বিমান হানা শুরু করে জাপান। পরের সাত ঘণ্টায় ছ’টি বিমানবাহী যুদ্ধজাহাজ থেকে মোট ৩৫৩টি বিমান কার্যত দুরমুশ করে ওই মার্কিন নৌঘাঁটি। ডুবে যায় তাদের ৪টি যুদ্ধজাহাজ ও ২টি জাহাজ। ধ্বংস হয় ১৮৮টি বিমান। মারা যান ২ হাজার ৪০৩ জন মার্কিন সেনা। গত বছর বারাক ওবামা ও জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে পার্ল হারবারে এসেছিলেন একসঙ্গে। দু’পক্ষ তিক্ততা ভুললেও আমেরিকা পার্ল হারবারের ইতিহাসে কাউকে নিখোঁজের তালিকায় ফেলে রাখতে নারাজ। স্মৃতি হাতড়ে তারা ফেরাতে চায় প্রত্যেক নিহতের পরিচয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy