Advertisement
১৭ এপ্রিল ২০২৪

নিষেধাজ্ঞা জারির পরে ট্রাম্পের গলায় ফুটতে পারে অ্যাপল-কাঁটা

ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ করার কথা ভাবছেন অ্যাপলের সিইও টিম কুক। গতকাল এক সাক্ষাৎকারে কুক জানিয়েছেন, হোয়াইট হাউসের শীর্ষ আধিকারিকদের সঙ্গে তিনি সমানে কথাবার্তা চালিয়ে যাচ্ছেন।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও অ্যাপলের সিইও টিম কুক

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও অ্যাপলের সিইও টিম কুক

সংবাদ সংস্থা
ওয়াশিংটন শেষ আপডেট: ০২ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০২:০৬
Share: Save:

ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ করার কথা ভাবছেন অ্যাপলের সিইও টিম কুক।

গতকাল এক সাক্ষাৎকারে কুক জানিয়েছেন, হোয়াইট হাউসের শীর্ষ আধিকারিকদের সঙ্গে তিনি সমানে কথাবার্তা চালিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু সাতটি দেশ থেকে আমেরিকায় আসার উপরের নিষেধাজ্ঞা যদি পুনর্বিবেচনা না-করা হয়, তা হলে তিনি আইনি পথে হাঁটতে বাধ্য হবেন। তাঁর কথায়, ‘‘এমন একটা সিদ্ধান্তের সঙ্গে শুধু আমার সংস্থা নয়, গোটা দেশের ভবিষ্যৎ জড়িয়ে। তামাম বিশ্বের জন্য দরজা খোলা রাখার জন্যই আমাদের দেশ এত শক্তিশালী। তাই দেশের উন্নয়নের স্বার্থে গোটা বিষয়টা ফের গভীর ভাবে ভাবা প্রয়োজন।’’

অ্যাপলের যন্ত্রাংশ কেন বাইরের দেশে তৈরি হবে— ভোট প্রচারেই প্রশ্ন তুলেছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। আর ট্রাম্পের নিষেধাজ্ঞা জারির পরে তা নিয়ে তখনই সরব হয়েছিলেন টিম কুক। দিন কয়েক আগে ওয়াশিংটনে প্রেসিডেন্ট কন্যা ইভানকা ট্রাম্প ও ইভানকার স্বামী (যিনি ট্রাম্পের এক জন শীর্ষ উপদেষ্টাও) জ্যারেড কুশনারের সঙ্গে বৈঠক করেন অ্যাপল সিইও। তখন মনে হয়েছিল, দু’পক্ষের সম্পর্কের এ বার হয়তো উন্নতি হবে। কিন্তু কাল কুকের তোপে সেই ছবিটাও বদলে গিয়েছে। ট্রাম্পের নির্দেশ ঘিরে প্রশ্ন উঠছে অ্যাপলের মতো বহুজাতিক সংস্থার ভবিষ্যৎ নিয়েই।

সাক্ষাৎকারে কুক জানিয়েছেন, সারা পৃথিবীতে ১৮০টি দেশে অ্যাপলের জিনিস বিক্রি হয়। ‘‘ট্রাম্প যে সব দেশ থেকে আসার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন, সেখানেও আমাদের বহু কর্মী রয়েছেন। তাঁরা সবাই এই বিশাল অ্যাপল পরিবারের অংশ। তাঁদের আমেরিকায় আসা বন্ধ হয়ে যাবে, এটা কিছুতেই মেনে নেওয়া যায় না।’’ তবে আইনি পদক্ষেপ বলতে ঠিক কী বলতে চাইছেন, তা স্পষ্ট করেননি অ্যাপলের সিইও। শুধু বলেছেন, ‘‘প্রতিটি সমালোচনাই গঠনমূলক হওয়া উচিত। আমরা সেই পথেই হাঁটার চেষ্টা করব।’’

ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছে মার্কিন ই-কমার্স জায়ান্ট অ্যামাজন, মাইক্রোসফট এবং অনলাইনভিত্তিক পর্যটন পরিষেবা প্রদানকারী সংস্থা এক্সপিডিয়া। প্রেসিডেন্টের নির্দেশ ‘সংবিধান-বিরোধী’ বলে মামলা দায়ের করেছেন ওয়াশিংটনের অ্যাটর্নি জেনারেল বব ফার্গুসন-ও। এই সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে ও রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেজ। গুতেরেজের কথায়, ‘‘এমন নিষেধাজ্ঞাকে সামনে রেখেই জঙ্গি সংগঠনগুলি আরও অনেককে উদ্বুদ্ধ করতে পারে।’’

এই বিরোধিতার আবহের মধ্যে আজ সংযুক্ত আরব আমিরশাহির এক মন্ত্রী মন্তব্য করেছেন, ‘‘ট্রাম্পের এই নির্দেশিকা কোনও ভাবেই ‘মুসলিম-বিরোধী’ নয়!’’ দেশে মুসলিম প্রবেশ নিষিদ্ধ করতে চেয়েই ট্রাম্প এমন নির্দেশ দিয়েছেন কি না— তা নিয়ে এখনও দ্বিধাবিভক্ত আমেরিকা। সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরশাহির বিরুদ্ধে সন্ত্রাসে মদত দেওয়ার দীর্ঘদিনের অভিযোগ রয়েছে। আর মিশরে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে জঙ্গি সংগঠন ‘মুসলিম ব্রাদারহুড’। তবু
এই দেশগুলোকে কেন ‘নিষিদ্ধ’ তালিকায় রাখা হল না— সেই প্রশ্নও উঠছে। আজকের মন্ত্রীর এই মন্তব্যের আগে ট্রাম্পের সিদ্ধান্ত নিয়ে কোনও কথাই বলেনি এই তিনটি দেশ। প্রতিবাদের জেরে অবশ্য এখনও বিশেষ হেলদোল দেখাননি ট্রাম্প। বরং টুইট করে বলেছেন, ‘‘খারাপ লোকদের আমেরিকার বাইরে রাখতেই এই নিষেধাজ্ঞা।’’

হোয়াইট হাউসের তরফে আজ ফের ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে যে, আমেরিকার ‘নিষিদ্ধ’ তালিকায় জুড়তে পারে পাকিস্তানের নাম। হোয়াইট হাউসের মিডিয়া সচিব শন স্পাইসার আজ জানিয়েছেন, ‘সন্ত্রাসের আঁতুড়ঘর’ হিসেবে পরিচিত পাকিস্তানকে ‘হিটলিস্টে’ অবশ্যই আনা যেতে পারে।

শরণার্থী আর অভিবাসীদের জন্য আমেরিকার দরজা তাই আপাতত বন্ধই। স্পাইসার বলেন, ‘‘এ দেশে যাঁরা কাজের সূত্রে, বেড়াতে বা পড়তে আসেন, তাঁদের আমরা বরাবরই স্বাগত জানিয়ে এসেছি। কিন্তু দরজা খুলে মানুষকে আসতে দিয়ে এখানে যা খুশি তাই করতে দেব— এমন ভাবাটা হাস্যকর।’’ — সংবাদ সংস্থা

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Tim Cook Apple Donald trump
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE