সু চি-র সঙ্গে সুষমা স্বরাজ। ছবি: টুইটারের সৌজন্যে।
মায়ানমারের মাটিকে ভারত-বিরোধী কার্যকলাপের জন্য ব্যবহার করতে দেওয়া হবে না বলে আশ্বাস দিল আউং সান সু চি-র প্রভাবাধীন সরকার। আজ নেপিদউয়ে সু চি-সহ মায়ানমারের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ। মায়ানমারে নয়া সরকার ক্ষমতায় আসার পরে এই প্রথম সে দেশে গেলেন ভারতের কোনও শীর্ষ নেতা।
কয়েক দশকের সামরিক শাসনের সময়ে বহু উত্থান-পতনের মধ্যে দিয়ে হেঁটেছে ভারত-মায়ানমার সম্পর্ক। সামরিক সরকারের সময়ে দীর্ঘদিন গৃহবন্দি ছিলেন সু চি। তখন তাঁর মুক্তি নিয়ে সরব হলেও এক সময়ে সামরিক সরকারের সঙ্গেও হাত মেলাতে বাধ্য হয় দিল্লি। কারণ, ভারত-মায়ানমার সীমান্তবর্তী এলাকায় ঘাঁটি তৈরি করে উত্তর-পূর্বের নানা জঙ্গি সংগঠন। আবার ভারতের সঙ্গে দূরত্ব বাড়ার ফলে সহজেই মায়ানমারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়ায় চিন।
কিন্তু সামরিক সরকারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়ানোয় সমালোচনার মুখেও পড়তে হয়েছিল দিল্লিকে। এ বার সু চি-র প্রভাবাধীন সরকার ক্ষমতায় আসায় ভারত কূটনৈতিক ভাবে অনেকটাই সুবিধে পেয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
নয়া সরকারের স্টেট কাউন্সেলর ও বিদেশমন্ত্রী পদে রয়েছেন সু চি। আজ নেপিদউয়ে তাঁর সঙ্গে বৈঠক করেন সুষমা। কথা বলেন প্রেসিডেন্ট উ তিন কাউয়ের সঙ্গেও। বিদেশ মন্ত্রক সূত্রে খবর, উত্তর-পূর্বের জঙ্গি গোষ্ঠীগুলি এখনও মায়ানমার থেকে ভারতে হামলা চালাচ্ছে। সম্প্রতি ভারতীয় সেনাও সে দেশের ভিতরে গিয়ে জঙ্গি-বিরোধী অভিযান চালিয়েছে। প্রত্যাশিত ভাবেই তা আনুষ্ঠানিক ভাবে স্বীকার করেনি দিল্লি। কিন্তু দু’দেশের এই সহযোগিতা বাড়াতে আগ্রহী মায়ানমার সরকার।
কৃষি ও বাণিজ্যেও দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা বাড়ানো নিয়ে মায়ানমারের শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে এ দিন কথা বলেন বিদেশমন্ত্রী। সু চি-র প্রভাবাধীন সরকার নয়া বাণিজ্যনীতি ঘোষণা করবে বলে আশা ভারতীয় শিল্পমহলেরও। ‘ইন্দো-মায়ানমার চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি’-র প্রতিষ্ঠাতা সদস্য অরবিন্দ্র সিংহের কথায়, ‘‘মায়ানমারে পরিকাঠামোয় বিনিয়োগের ক্ষেত্রে চিন অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছে। বৈদ্যুতিন পণ্যের বাজারও মূলত চিনা সংস্থাগুলির দখলে। তবে ওষুধের ক্ষেত্রে ভারতীয় সংস্থাগুলির প্রাধান্য রয়েছে।’’ তিনি জানাচ্ছেন, সেনা শাসন শেষ হওয়ার পরে প্রত্যক্ষ বিদেশি লগ্নি-সহ নানা ক্ষেত্রে নয়া নীতি ঘোষণা করেছিল মায়ানমার। সেই সময়ে বিদেশি লগ্নিকারীদের উৎসাহও দেখা গিয়েছিল। কিন্তু সেই নীতি ঠিক ভাবে কার্যকর করতে ব্যর্থ হয়েছে মায়ানমার সরকার।
ডালের দাম বাড়া নিয়ে বিপাকে পড়তে হয়েছিল নরেন্দ্র মোদী সরকারকে। বিদেশ মন্ত্রক সূত্রে খবর, মায়ানমার থেকে প্রচুর পরিমাণ ডাল আমদানি করা সম্ভব বলে মনে করে ভারত। তা নিয়েও সু চি-র সঙ্গে কথা বলেছেন বিদেশমন্ত্রী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy