Advertisement
১১ মে ২০২৪

রিট খারিজ, বাংলাদেশের সংবিধানে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বহাল

বাংলাদেশের রাষ্ট্রধর্ম "ইসলাম" বহাল রেখে ২৯ বছর পূর্বে দায়ের করা একটি রিট সরাসরি খারিজ করে দিয়েছে হাইকোর্ট। হাইকোর্টের নির্দেশে বলা হয়েছে যে সংগঠনের ব্যানারে রিটটি করা হয়েছিল, তাদের রিট করার এক্তিয়ার নেই। বিচারপতি নাইমা হায়দারের নেতৃত্বে হাইকোর্টের বৃহত্তর বেঞ্চ শুনানি করে আজ আবেদনটি খারিজ করে দেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ঢাকা শেষ আপডেট: ২৮ মার্চ ২০১৬ ২২:০২
Share: Save:

বাংলাদেশের রাষ্ট্রধর্ম "ইসলাম" বহাল রেখে ২৯ বছর পূর্বে দায়ের করা একটি রিট সরাসরি খারিজ করে দিয়েছে হাইকোর্ট। হাইকোর্টের নির্দেশে বলা হয়েছে যে সংগঠনের ব্যানারে রিটটি করা হয়েছিল, তাদের রিট করার এক্তিয়ার নেই। বিচারপতি নাইমা হায়দারের নেতৃত্বে হাইকোর্টের বৃহত্তর বেঞ্চ শুনানি করে আজ আবেদনটি খারিজ করে দেন। এ বেঞ্চের অন্য দুই সদস্য হলেন বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি মো.আশরাফুল কামাল।

এ দিকে, এ রিটের শুনানিকে ঘিরে জামাতে ইসলামি আজ গোটা দেশে আগাম হরতালের ডাক দেয়। একই সঙ্গে হেফাজতে ইসলামও দেশ অচল করে দেওয়ার হুমকি দিয়ে রেখেছিল। হেফাজতের হুমকিতে বলা হয়েছিল, সংবিধান থেকে রাষ্ট্রধর্মের অনুচ্ছেদ বিলোপ বা বতিল করে রায় শোনানো হলে, তারা অনির্দিষ্টকালের জন্য আন্দোলন শুরু করবে। এ অবস্থায় আজ গোটা দেশের নিরাপত্তা ব্যবস্থা কঠোর করা হয়। তবে, জামাতের ডাকে হরতালে তেমন সাড়া মেলেনি। প্রায় সর্বত্র যোগাযোগ ব্যবস্থা স্বাভাবিক ছিল। কোথাও কোনও অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।

১৯৮৮ সালের ৫ জুন তদানীন্তন সামরিক শাসক হুসেইন মহম্মদ এরশাদের শাসনকালে সংবিধানের ‘অষ্টম সংশোধনী’ যুক্ত করা হয়। নতুন ওই সংশোধনীতে বলা হয়েছিল, ‘প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রধর্ম হবে ইসলাম, তবে অন্যান্য ধর্মও প্রজাতন্ত্রে শান্তিতে পালন করা যাইবে’।

বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় মূলনীতিতে এই পরিবর্তনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে তখনই ‘স্বৈরাচার ও সাম্প্রদায়িকতা প্রতিরোধ কমিটির’ পক্ষে সাবেক প্রধান বিচারপতি কামালউদ্দিন হোসেন, কবি সুফিয়া কামাল, অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী-সহ ১৫ বিশিষ্ট নাগরিক হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন। আবেদনে বলা হয়, “বাংলাদেশে নানা ধর্মবিশ্বাসের মানুষ বাস করেন। এটি সংবিধানের মূল স্তম্ভে বলা হয়েছে। এখানে রাষ্ট্রধর্ম করে অন্য ধর্মকে বাদ দেওয়া হয়েছে। এটি বাংলাদেশের অভিন্ন জাতীয় চরিত্রের প্রতি ধ্বংসাত্মক।”

পরে, রিট আবেদনকারীদের পক্ষ থেকে ২০১১ সালের ৮ জুন একটি সম্পূরক আবেদন করা হয়। তার প্রাথমিক শুনানি নিয়ে সে দিনই বিচারপতি এ এইচ এমশামসুদ্দিন চৌধুরী ও বিচারপতি গোবিন্দচন্দ্র ঠাকুরের তৎকালীন হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলিং দেয়। রুলে সংবিধানের ওই সংশোধনীর মাধ্যমে ২ (ক) অন্তর্ভুক্তি কেন অসাংবিধানিক ও বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়। জাতীয় সংসদের স্পিকার এবং আইন, বিচার ও সংসদ সম্পর্কিত মন্ত্রকের সচিবকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়। এসব রুলের ওপর হাইকোর্টের বৃহত্তর বেঞ্চ শুনানির জন্য গত বছরের ৬ সেপ্টেম্বর আবেদন করে বাদীপক্ষ। প্রধান বিচারপতি বৃহত্তর বেঞ্চ গঠন করে দিলে বিষয়টি আজ সোমবার শুনানি শেষে রিটটি খারিজ করা হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

bangladesh highcourt writ petition
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE