Advertisement
০১ মে ২০২৪
আইএস জঙ্গির দাবি

মাথা কেটে অনুতাপ, বদলা যে নিতেই হত!

এই গোষ্ঠীর মধ্যে যাদের কথাবার্তায় খাঁটি ব্রিটিশের টান, তারা আইএসের কাছে পরিচিত ছিল ‘বিটলস’ নামে! আর এই জঙ্গি-বিটলস-এর দুই সদস্য আল শাফি আল শেখ এবং আলেকজান্দা কোতে ছিল মাথা কাটায় ওস্তাদ। তবে এখন তারা বলছে, মাথা কাটা ‘উচিত কাজ’ ছিল না।

জঙ্গি-বিটলস-এর দুই সদস্য আল শাফি আল শেখ এবং আলেকজান্দা কোতে।

জঙ্গি-বিটলস-এর দুই সদস্য আল শাফি আল শেখ এবং আলেকজান্দা কোতে।

সংবাদ সংস্থা
দামাস্কাস শেষ আপডেট: ০২ এপ্রিল ২০১৮ ০৩:৪৩
Share: Save:

মাথা কাটা ঠিক নয়! তবে প্রতিশোধ তো নিতেই হত— বলছে আইএসের দুই জঙ্গি।

এই গোষ্ঠীর মধ্যে যাদের কথাবার্তায় খাঁটি ব্রিটিশের টান, তারা আইএসের কাছে পরিচিত ছিল ‘বিটলস’ নামে! আর এই জঙ্গি-বিটলস-এর দুই সদস্য আল শাফি আল শেখ এবং আলেকজান্দা কোতে ছিল মাথা কাটায় ওস্তাদ। তবে এখন তারা বলছে, মাথা কাটা ‘উচিত কাজ’ ছিল না। তবে প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য নাকি আর কোনও উপায়ও ছিল না তাদের হাতে।

সিরিয়ার কুর্দ বাহিনীর হাতে গত জানুয়ারিতে ধরা পড়েছে এই দুই ব্রিটিশ জেহাদি। এখন অজ্ঞাতপরিচয় জায়গায় রাখা হয়েছে তাদের। সম্প্রতি সিরিয়ার কোবানিতে কুর্দদের একটি নিরাপত্তা কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়ার সময়ে ওই দুই জঙ্গির কথা জানতে পারে সংবাদ সংস্থা। সেই সময়ের কথোপকথনেই উঠে এসেছে আইএস জঙ্গিদের এই ‘উপলব্ধি’র কথা। আল শাফি এবং আলেকজান্দা-র দাবি, আমেরিকা আর ব্রিটেন দু’দেশই ভণ্ড। জঙ্গি কার্যকলাপে জড়িয়ে নাগরিকত্ব খুইয়েছে তারা। তাই দেশের কাছ থেকে ‘স্বচ্ছ বিচার’ পাবে না বলেও অভিযোগ তাদের। হেগ-এ আন্তর্জাতিক অপরাধদমন আদালতের কাছে বিচার চায় তারা।

আরও পড়ুন: চাপের মুখেও তদন্তে নারাজ ইজরায়েল

সিরিয়ায় ২০১৪ এবং ১৫ সালে আইএস ২০ জনেরও বেশি মার্কিনকে পণবন্দি করেছিল। যাঁদের মধ্যে ছিলেন মার্কিন সাংবাদিক জেমস ফলি। তাদের উপরে অকথ্য নির্যাতন চালাত আইএস। সঙ্গে মাঝে মাঝেই সেই নির্যাতন অথবা নিষ্ঠুর ভাবে হত্যার ভিডিয়ো ছড়িয়ে দিতে ইন্টারনেটে। ওই সময়ে সিরিয়ার আইএস-বিটলস-এ সক্রিয় ছিল এই দুই জঙ্গি, তদন্তকারীদের তেমনই দাবি। আর এই জঙ্গি-বিটলস-সহ বাকি বৃহৎ গোষ্ঠীর নেতা ছিল মহম্মদ এমওয়াজি, ‘জেহাদি জন’ বলেই জনপ্রিয় ছিল সে। তাদের বিরুদ্ধে মার্কিন, ব্রিটিশ এবং জাপানি সাংবাদিক মিলিয়ে মোট সাত জনের মাথা কাটার অভিযোগ রয়েছে। তদন্তকারীদের দাবি, কিছু ত্রাণকর্মী ও সিরীয় সেনাকেও মেরেছে তারা। মাথা কাটার ভিডিয়ো ছড়ানোর জন্যও কাজ করত তারা।

এখন অবশ্য আল শাফি আর আলেকজান্দা বলছে, গোষ্ঠীতে অনেকেই মাথা কাটার সঙ্গে সহমত ছিল না। বরং অপহৃতদের বন্দি করে রাখার পক্ষে ছিল, তার পর মুক্তিপণ চাওয়ার কথা ভাবত তারা। এখন মাথা কাটার জন্য ‘অনুতাপ’ হয় তাদের। পাশাপাশি দুই জঙ্গি স্পষ্ট করে দিয়েছে, পশ্চিমী বিশ্বেরও এতে দায় রয়েছে যথেষ্ট। কারণ তারা সব সময় আপসে রাজি হয়নি, রাজি হলে অনেক বন্দিকেই মুক্তিপণ নিয়ে ছাড়া হয়েছে। আল শেখের সাফ কথা, ‘‘হত্যা ভুল ছিল। তা মেনে নেওয়া যায় না। কিন্তু আমেরিকার নেতৃত্বে সিরিয়ার সেনা কম লোককে মারেনি। তাই বদলা ছাড়া পথ ছিল না।’’

মার্কিন সরকার এবং গোটা দুনিয়ার প্রতি জেমস ফলির মা ডায়ানের আর্জি, আল শেখদের মতো জঙ্গিদের যেন মৃত্যুদণ্ড না দেওয়া হয়। তা হলে ওদের ইচ্ছেই পূর্ণ হবে। বরং ওদের প্রকাশ্যে বিচার হোক। যাতে তারা বোঝে, বিশ্বকে কী মারাত্মক যন্ত্রণা দিয়েছে তারা। এই দুই ব্রিটিশ জঙ্গির বিচার নিয়ে পশ্চিমী দুনিয়াতেও এখন জোর বিতর্ক। কারণ কুর্দরা চায় তাদের দেশের জেল খালি করে ইউরোপ-আমেরিকার জঙ্গিদের স্বদেশে ফেরত পাঠাতে। ইউরোপ-আমেরিকায় প্রশ্ন, কী ভাবে বিচার হবে এই জঙ্গিদের?

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Beheadings Beatles ISIS Capture Syria ISIS
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE