Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

অনড় চিন, ভারতের চাপে সক্রিয় ভুটান

আগামী ৩ সেপ্টেম্বর ব্রিকস সম্মেলনে যোগ দিতে চিন সফরে যাওয়ার কথা মোদীর। চিন ও ভারত কোনও পক্ষ থেকেই সরকারি ভাবে এখনও নরেন্দ্র মোদীর চিন সফরের বিষয়ে চূড়ান্ত ভাবে কিছু জানানো হয়নি। যদি ব্রিকস সম্মেলনের আগে এই বরফ না গলে তা হলে চিনে গেলেও দ্বিপাক্ষিক আলোচনা হবে না। যেমনটি হয়নি জার্মানিতে।

ডোকলাম। —ফাইল চিত্র।

ডোকলাম। —ফাইল চিত্র।

জয়ন্ত ঘোষাল
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১১ অগস্ট ২০১৭ ০৩:২১
Share: Save:

চিন ভারত সরকারকে জানিয়ে দিল যে আংশিক নয়, ডোকলাম থেকে সম্পূর্ণ সেনা প্রত্যাহার না করা পর্যন্ত ভারতের সঙ্গে কোনও শান্তি আলোচনা শুরু করতে রাজি নয় বেজিং।

জার্মানিতে জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনে নরেন্দ্র মোদী চিনের প্রেসিডেন্ট শি চিনফিং-এর সঙ্গে আলোচনা করতে চাইলেও সে দিনও চিন রাজি হয়নি। এত দিন পরেও চিন তার নিজের অবস্থান থেকে একচুল সরল না। কূটনৈতিক সূত্রের মাধ্যমে চিন ভারতকে আরও জানিয়েছে, নয়াদিল্লি যদি এক সঙ্গে সেনা প্রত্যাহার না করে তাহলে চাইলে ধাপে ধাপে করতে পারে। কিন্তু এ নিয়ে একটি নির্দিষ্ট সময়সীমা চেয়েছে বেজিং।

আগামী ৩ সেপ্টেম্বর ব্রিকস সম্মেলনে যোগ দিতে চিন সফরে যাওয়ার কথা মোদীর। চিন ও ভারত কোনও পক্ষ থেকেই সরকারি ভাবে এখনও নরেন্দ্র মোদীর চিন সফরের বিষয়ে চূড়ান্ত ভাবে কিছু জানানো হয়নি। যদি ব্রিকস সম্মেলনের আগে এই বরফ না গলে তা হলে চিনে গেলেও দ্বিপাক্ষিক আলোচনা হবে না। যেমনটি হয়নি জার্মানিতে।

চিন দাবি করছে, অতীতে ভুটান লিখিত ভাবে তাদের জানিয়েছে ডোকলামের ভূখণ্ডটি চিনের অধীনে। সুতরাং ডোকলামে ভারতীয় সেনা পাঠানো সম্পূর্ণ অবৈধ। বিষয়টি যখন চিনের সঙ্গে ভুটানের তখন ভারত নাক গলাচ্ছে কেন, সেই প্রশ্নও তোলা হয়েছে। ভুটান ভারতের বন্ধু হলেও, প্রতিবেশী রাষ্ট্র চিনের সঙ্গে ঝামেলা করতে চায় না তারা। আর সেখানেই সমস্যায় পড়েছে ভারত।

আরও পড়ুন: কেন্দ্র চায় মার্চেই শেষ গ্যাস-ভর্তুকি

আজ বিমস্টেকের বিদেশমন্ত্রীদের বৈঠকে যোগ দিতে কাঠমান্ডু পৌঁছন সুষমা স্বরাজ। সেখানে ভুটানের বিদেশমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন তিনি। চেষ্টা করেন ভুটানের মানভঞ্জনেরও। সুষমার পক্ষ থেকে ভুটানকে জানানো হয়েছে সে দেশের সার্বভৌমত্বে কোনও ভাবেই নাক গলাবে না নয়াদিল্লি। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে আজ ডোকলামকে চিনা এলাকা বলে মেনে নেওয়ার কথা অস্বীকার করেছে ভুটান। থিম্পু জানিয়েছে, ডোকলাম তাদেরই এলাকা। সেখানে রাস্তা তৈরি করে চিনা সেনা ভুটানের সার্বভৌমত্বে হাত দিয়েছে। ভারতের চাপেই ভুটান এই পদক্ষেপ করেছে বলে ধারণা কূটনীতিকেরা।

চিন যে ভাবে সীমান্তে সেনা তৎপরতা শুরু করেছে, তাতে অবশ্য ভারতের উদ্বেগের পারদ বাড়ছে। ভারতকেও পাল্টা প্রস্তুতি নিতে
হচ্ছে। সেনা সূত্রে খবর, ডোকলাম থেকে ৩৫ কিলোমিটার দূরে নাথাং গ্রাম থেকে বাসিন্দাদের সরে যেতে বলেছে ভারতীয় সেনা। কেন এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে তা এখনও স্পষ্ট নয়।

তবে একটি চ্যানেলের দাবি, নাথাং গ্রামের বাসিন্দারা ওই এলাকায় সেনাবাহিনীর প্রচণ্ড সক্রিয়তা দেখতে পেয়েছেন। তবে এ নিয়ে প্রকাশ্যে মুখ খুলতে একেবারেই রাজি নয় সরকার বা সেনাবাহিনী। বরং সেনার অন্য একটি সূত্রের দাবি, ওই এলাকার কোনও গ্রামের বাসিন্দাদের সরানো হয়নি। আর ওই এলাকার রাস্তা রক্ষণাবেক্ষণের জন্য সেনার গতিবিধি প্রায়ই বাড়ে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, মোদী সরকার এখন চিনকে নিয়ে উভয়সঙ্কটে পড়েছে। এক দিকে সেনা প্রত্যাহার না করলে কূটনৈতিক বিরোধ সামরিক সংঘাতের দিকে চলে যেতে পারে। অর্থনৈতিক দিক থেকে ভারত-চিন সম্পর্কের অবনতি কাম্য নয় বলেই মনে করছেন সমস্ত আর্থিক বিশেষজ্ঞরাই। আবার অন্য দিকে সেনা প্রত্যাহার করা হলে দেশের ভিতরে-বাইরে সরকারের মুখ পুড়বে

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE