Advertisement
০২ মে ২০২৪

জোটসঙ্গী জোটানোই বড় চ্যালেঞ্জ মের্কেলের

অতি দক্ষিণ দলকে নিয়ে গোড়া থেকেই একটা আশঙ্কা ছিল। বিশেষ করে এই গোষ্ঠীর কাছেই তুমুল সমালোচিত হয়েছিল মের্কেলের শরণার্থী নীতি। ভোটের হার দেখে খুশি নন মের্কেল। ফল ঘোষণার পরে সমর্থকদের উদ্দেশে তিনি বলেছেন, আরও ভাল ফল আশা করেছিলাম।

বক্তা: জয়ের পরে দলের সদর দফতরে আঙ্গেলা মের্কেল। সোমবার বার্লিনে। এএফপি

বক্তা: জয়ের পরে দলের সদর দফতরে আঙ্গেলা মের্কেল। সোমবার বার্লিনে। এএফপি

সংবাদ সংস্থা
বার্লিন শেষ আপডেট: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০৩:০৩
Share: Save:

জয় এসেছে ঠিকই। কিন্তু খুব মসৃণ জয় এ নয়। বরং দেখা যাচ্ছে, জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা মের্কেলের দল ক্রিশ্চান ডেমোক্র্যাট ইউনিয়ন গত ৭০ বছরে এত খারাপ ফল কখনও করেনি। আর সেই সুযোগে দেশের পার্লামেন্টে ঢোকার রাস্তা চওড়া হয়েছে অতি দক্ষিণ দল ‘অল্টারনেটিভ ফর ডয়েশলান্ড’ (এএফডি)-এর। গত পাঁচ দশকে এই প্রথম বার। সেটাই বড় চিন্তা এখন মের্কেলের।

৩৩ শতাংশ ভোট পেয়ে তাঁর মধ্য-দক্ষিণ ক্রিশ্চান ডেমোক্র্যাট ইউনিয়ন সংখ্যাগরিষ্ঠ দল হলেও জোট গড়তে চতুর্থ বারের জন্য জয়ী চ্যান্সেলর মের্কেলকে এখন শুরু করতে হবে দর কষাকষি। সেটাই এখন প্রবীণ নেত্রীর মূল চ্যালেঞ্জ। কারণ তাঁর দলের সঙ্গে আগে যাদের জোট ছিল, সেই মধ্য-বাম দল সোশ্যাল ডেমোক্র্যাট (এসপিডি) জানিয়ে দিয়েছে, তারা বিরোধীর আসনে বসতে চায়। ২১ শতাংশ ভোট গিয়েছে তাদের ঝুলিতে। তাই মের্কেলের হাতে রয়েছে ছোট ছোট কিছু দল।

অতি দক্ষিণ দলকে নিয়ে গোড়া থেকেই একটা আশঙ্কা ছিল। বিশেষ করে এই গোষ্ঠীর কাছেই তুমুল সমালোচিত হয়েছিল মের্কেলের শরণার্থী নীতি। ভোটের হার দেখে খুশি নন মের্কেল। ফল ঘোষণার পরে সমর্থকদের উদ্দেশে তিনি বলেছেন, আরও ভাল ফল আশা করেছিলাম। পাশাপাশি এএফডি-র উত্থানও (১৩ শতাংশ ভোট পেয়েছে তারা) ভাঁজ ফেলেছে তাঁর কপালে। তিনি বলেছেন, তাঁর সরকার আর্থিক এবং নিরাপত্তা সংক্রান্ত দিকগুলি নিয়ে ভাবনা চিন্তা করবে। শরণার্থী প্রবেশের মূল কারণগুলোও ভেবে দেখতে হবে। এএফডি-কে যাঁরা ভোট দিয়েছেন, তাঁদের কথা শুনতে আগ্রহী মের্কেল। তাঁদের ‘‘অভিযোগ, উদ্বেগ ও চিন্তা’’ শুনে সেই ভোটারদের ফিরে পেতে চান তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘আজ আমাদের হাতে মানুষের রায় রয়েছে। তাঁরা আমাদের দায়িত্ব দিয়েছেন। আমরা শান্ত হয়ে দায়িত্ব পালন করব। কথা হবে জোটসঙ্গীদের সঙ্গেও।’’

তবে জোটসঙ্গী বলতে যারা আছে, তাদের থেকে কতটা সমর্থন পাবেন মের্কেল, তা নিয়েও প্রশ্ন আছে। ব্যবসা-ঘেঁষা এফডিপি এবং গ্রিন পার্টি কেউ কাউকে পছন্দ করে না। তারা সরকারের জোটসঙ্গী হলে কী অবস্থা হবে, সেটা আগ্রহের বিষয়। তা ছাড়া, এই দলগুলির অন্দরে এই চিন্তাও রয়েছে যে মের্কেলের সরকারে যোগ দিলে তারা নিজের সমর্থকদের বিশ্বাসযোগ্যতা হারাবে।

যদিও মের্কেলের এক দিকে সুবিধে হচ্ছে, অতি দক্ষিণ এএফডি-র মধ্যে গন্ডগোল। তারা মুখে বলছে, আমাদের দেশে অভিবাসন রুখতে হবে। দলের সহ-নেতা আলেকজান্ডার গাওলান্ড বলছেন, ‘‘এ নিয়ে আমরা পৃথক নীতি চাই।’’ ৭০৯ আসনের পার্লামেন্টে তৃতীয় বৃহত্তম দল হিসেবে তারা অন্তত ৯৪টি আসন পাবে বলে মনে করা হচ্ছে। কিন্তু দল কোন পথে এগোবে তা নিয়ে এএফডি-র মধ্যে এখন বিস্তর গোলমাল। দলের আর এক জনপ্রিয় নেত্রী এবং ভোটে আসন জয়ী ফ্রাউকে পেট্রি আজ জানিয়েছেন, মতপার্থক্যের জন্য দলের পার্লামেন্টারি গ্রুপে থাকতে চান না। সাংবাদিক বৈঠকে তাঁর আচমকা এই ঘোষণা এবং চলে যাওয়ায় চমকে যান সবাই। দলীয় সূত্রে দাবি, তিনি চান কট্টর জাতীয়তাবাদী পথ ছেড়ে একটু নরম হোক তাঁর দল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE