মাসুদ আজহারের ফাইল ফোটো।
ভারতে নাশকতার পরম্পরা জিইয়ে রাখতে মরিয়া চিন। তাই জৈশ-ই-মহম্মদ প্রধান মাসুদ আজহারকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করার প্রস্তাব ভেটো দিয়ে আটকে দিল বেজিং। চিনের এই পদক্ষেপের পর তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে ভারত। চিনের আচরণকে ভারতের বিদেশ মন্ত্রক ‘দুর্বোধ্য’ আখ্যা দিয়েছে। কঠোর সমালোচনা করা হয়েছে রাষ্ট্রপুঞ্জের সংশ্লিষ্ট কমিটিরও।
পাকিস্তান ভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন জৈশ-ই-মহম্মদকে ২০০১ সালেই নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে রাষ্ট্রপুঞ্জ। মুম্বইতে জঙ্গিহানার পর মাসুদ আজহারকেও নিষিদ্ধ ঘোষণা করার জন্য ভারত রাষ্ট্রপুঞ্জের দ্বারস্থ হয়। সে বারও বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল চিন। এ বারও তাই হল। পঠানকোটে বায়ুসেনা ঘাঁটিতে জঙ্গি হানার পিছনে জৈশ-এর যোগ থাকার প্রমাণ পাওয়ার পরই, মাসুদ আজহারকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করার জন্য জোরদার দাবি তোলে ভারত। রাষ্ট্রপুঞ্জের সংশ্লিষ্ট কমিটিতে বিষয়টি পেশ করা হয়েছিল। শুক্রবার চিন ভেটো প্রয়োগ করে মাসুদ আজহারকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করার ভারতীয় প্রস্তাব আটকে দেয়।
কূটনৈতিক মহল বলছে, পাকিস্তানের কথাতেই এই পদক্ষেপ নিয়েছে চিন। পাকিস্তান রাষ্ট্রপুঞ্জের সন্ত্রাস সংক্রান্ত কমিটির সদস্য নয়। চিন সেখানে রয়েছে। নিরাপত্তা পরিষদের পাঁচ স্থায়ী সদস্য দেশের অন্যতম হওয়ায়, চিনের ভেটো প্রয়োগের ক্ষমতাও রয়েছে। সেই ভেটো প্রয়োগ করেই শুক্রবার ভারতের প্রস্তাব বিনা বাধায় পাশ হওয়া আটকে দিয়েছে চিন।
আরও পড়ুন- সন্ত্রাস প্রশ্নে রাষ্ট্রপুঞ্জকে কড়া বার্তা মোদীর
ভারত এর তীব্র নিন্দা করেছে। চিনের সম্পর্কে মন্তব্যের প্রশ্নে সতর্কই থাকেন ভারতীয় কূটনীতিকরা। কিন্তু বেশ খানিকটা বেনজির ভাবেই এ দিন চিনের কড়া সমালোচনা করেছে ভারত। বিদেশ মন্ত্রকের জারি করা বিবৃতিতে মাসুদ আজহার সম্পর্কে চিনের অবস্থানকে, ‘দুর্বোধ্য’ আখ্যা দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, শুধু মাত্র পদ্ধতিগত ত্রুটির কথা উল্লেখ করে মাসুদ আজহারের মতো জঙ্গিকে নিষিদ্ধ করার প্রক্রিয়া যে ভাবে চিন আটকে দিল, তা কোনও ভাবেই মেনে নেওয়া যাচ্ছে না। ভারতের তরফে রাষ্ট্রপুঞ্জের সংশ্লিষ্ট কমিটির কঠোর সমালোচনা করে বলা হয়েছে, রাষ্ট্রপুঞ্জ সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইতে বৈষম্যমূলক নীতি নিয়ে চলছে। সন্ত্রাসকে নির্মূল করতে আন্তর্জাতিক মহলকে যে পরিমাণ দৃঢ়তা দেখাতে হবে, রাষ্ট্রপুঞ্জের কমিটির সেই দৃঢ়তা নেই বলেও ভারতের তরফে মন্তব্য করা হয়েছে।
ওয়াকিবহাল মহল বলছে, ভারতের সমালোচনার আসল লক্ষ্য চিনই। সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াই আসলে চিনের জন্যই দুর্বল হচ্ছে, ভারতের বার্তায় এমন কথাই বোঝানো হয়েছে। কূটনৈতিক পরিভাষায় ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রকের এই বিবৃতি বেশ কঠোর। ভারতেপ অগ্রগতিতে আতঙ্কিত হয়েই চিন পাকিস্তানে লালিত জঙ্গি সংগঠনগুলিকে রক্ষা করতে চাইছে বলে প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। কিন্তু নয়াদিল্লি এ বার যে রকম কড়া প্রতিক্রিয়া দিয়েছে, তাতে বেজিংকে বুঝে গিয়েছে, সন্ত্রাসের প্রশ্নে ভারত আর আপোসের রাস্তায় হাঁটবে না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy