মা ক্যাটরিনার ফেসবুক থেকে পাওয়া টাইসেনের ছবি।
স্কুলে টিউশন নিয়ে ফিরে বেশ ভাল মুডেই ছিল টাইসেন। ডিনার সেরে সোজা নিজের রুমে চলে যায়। তার পর স্ন্যাপচ্যাটে বেশ কিছু ক্ষণ মজে ছিল বান্ধবীর সঙ্গে। তখনই সেই খারাপ খবরটা আসে। বান্ধবী আত্মহত্যা করেছে। বান্ধবীর এই মৃত্যুর খবর মেনে নিতে পারেনি টাইসেন। কিছু ক্ষণ পরে নিজেই গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে ১১ বছরের ওই কিশোর। পরে হাসপাতালে চিকিত্সাধীন অবস্থায় সে মারা যায়।
পরে যদিও জানা যায় বান্ধবীর মৃত্যুর খবরটাই ছিল ভুয়ো। ওই বান্ধবীর স্ন্যাপচ্যাট অ্যাকাউন্ট থেকে অন্য এক কিশোরী খবরটা টাইসেনকে দিয়েছিল। নেহাত মজার ছলেই ওই মেসেজ পাঠিয়েছিল সে। কিন্তু, সেই বার্তা যে এত বড় বিপদ ডেকে আনবে, তা বোঝেনি ওই কিশোরী।
মিশিগান পুলিশ জানিয়েছে, গত ১৪ মার্চ রাত ১০টা নাগাদ এই ঘটনাটি ঘটেছে। হাসপাতালে দীর্ঘ দিন চিকিৎসা চলার পর গত সপ্তাহে হাসপাতালে মারা গিয়েছে টাইসেন। মৃত্যুর ভুয়ো খবর দেওয়া এবং সোশ্যাল মিডিয়ার অপব্যবহারের জন্য ওই কিশোরীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন টাইসেনের মা। যার ভিত্তিতে পুলিশ জুভেনাইল আইনে মামলা রুজু করেছে।
টাইসেনের মা ক্যাটরিনা গস জানিয়েছেন, ছেলে টিউশন নিতে যেতে প্রায় প্রতি দিনই ভুল করত। কিন্তু, ওই দিন প্রথম বার নিজে মনে করে টিউশন নিতে গিয়েছিল টাইসেন। সে জন্য খুব খুশি ছিল। ক্যাটরিনার তিন ছেলেমেয়ে। রাতে খাওয়ার পর প্রত্যেকেই যে যার ঘরে চলে যায়।
অভ্যাসমতো কাজ সেরে প্রত্যেকে ঘুমিয়েছে কি না দেখতে গিয়ে টাইসেনের ঘরের দরজা ভিতর থেকে বন্ধ দেখেন ক্যাটরিনা। নকল চাবি দিয়ে দরজা খুলে এর পর ভিতরে ঢোকেন তিনি। পুলিশের কাছে দেওয়া বয়ানে ওই ভদ্রমহিলা দাবি করেছেন, শোওয়ার ঘরে টাইসেন তখন ছিল না। ক্যাটরিনা ভেবেছিলেন, অন্য কোনও ঘরে লুকিয়ে রয়েছে সে। পাশের একটি ঘরে গিয়ে দেখেন, গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় কাতরাচ্ছে টাইসেন। তৎক্ষণাৎ আপত্কালীন নম্বর ৯১১-এ ডায়াল করে খবর দেন। উদ্ধার করে টাইসেনকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে সেখানেই সে মারা যায়।
আরও পড়ুন: পদবী বিভ্রাট, ইসিজি করাতে গিয়ে মিলল অ্যান্টি র্যাবিস ইঞ্জেকশন!
তদন্তে নেমে বান্ধবীর সঙ্গে স্ন্যাপচ্যাটে টাইসেনের কথোপকথন উদ্ধার করে পুলিশ। তা থেকেই পুলিশের অনুমান, বান্ধবীর ভুয়ো মৃত্যুর খবরের জেরেই এই ঘটনা। তবে কেন বান্ধবীর খবর শুনে এমন একটা কাণ্ড ঘটাল টাইসেন তা এখনও জানতে পারেনি মিশিগান পুলিশ।
ক্যাটরিনা বলেন, ‘‘যে ভাবে ইদানীংকালে শিশুরা সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করছে তা ভয়ানক হয়ে উঠছে।’’ টাইসেন এবং ওই নাবালিকা একই স্কুলে পড়ত। সোশ্যাল মিডিয়া নিয়ে ক্যাটরিনার মন্তব্যকে সমর্থন জানিয়েছেন ওই স্কুলের সুপারিন্টেন্ডেন্ট উইলিয়াম সউনডার। তিনি বলেন, ‘‘স্কুলের বাইরে এই ঘটনা ঘটায় এই বিষয়ে তাঁরা কিছু জানেন না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy