Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
International News

নিষেধ উড়িয়ে শরিফের খাসতালুকে জনসংযোগ হাফিজের, উচ্ছ্বাস লাহৌরে

কুখ্যাত সন্ত্রাসবাদীকে ঘিরে উল্লেখযোগ্য উচ্ছ্বাস দেখা গিয়েছে লাহৌরে, খবর পাক সংবাদপত্র ‘ডন’ সূত্রের। বড়সড় জমায়েত তাঁকে রবিবার স্বাগত জানিয়েছে।

লাহৌরে হাফিজ সইদের রাজনৈতিক কর্মসূচি দুশ্চিন্তা বাড়াচ্ছে পাক প্রশাসনের। ছবি: এএফপি।

লাহৌরে হাফিজ সইদের রাজনৈতিক কর্মসূচি দুশ্চিন্তা বাড়াচ্ছে পাক প্রশাসনের। ছবি: এএফপি।

সংবাদ সংস্থা
লাহৌর শেষ আপডেট: ২৫ ডিসেম্বর ২০১৭ ১৬:০৫
Share: Save:

পাক সরকার এবং নির্বাচন কমিশনকে সরাসরি চ্যালেঞ্জ ছুড়লেন হাফিজ সইদ। নওয়াজ শরিফের খাসতালুকে ঢুকে দাপিয়ে বেড়ালেন দিনভর। যাবতীয় প্রশাসনিক বাধা উড়িয়ে নিজের তৈরি রাজনৈতিক দলের অফিস খুললেন লাহৌরে।

কুখ্যাত সন্ত্রাসবাদীকে ঘিরে উল্লেখযোগ্য উচ্ছ্বাস দেখা গিয়েছে লাহৌরে, খবর পাক সংবাদপত্র ‘ডন’ সূত্রের। বড়সড় জমায়েত তাঁকে রবিবার স্বাগত জানিয়েছে লাহৌরে, বর্ষিত হয়েছে গোলাপের পাপড়ি।

লস্কর-ই-তৈবা এবং জামাত-উদ-দাওয়ার প্রধান হাফিজ সইদ ২৬/১১ মুম্বই হামলার মূল চক্রী হিসেবে অভিযুক্ত। ভারত দীর্ঘ দিন ধরেই হাফিজের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ চেয়ে চাপ দিচ্ছে পাকিস্তানকে। আমেরিকা তাঁর মাথার দাম ধার্য করেছে ১ কোটি ডলার। রাষ্ট্রপুঞ্জ আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদী আখ্যা দিয়েছে তাঁকে। এ হেন হাফিজ সইদ যে দিন থেকে ঘোষণা করেছেন যে মিল্লি মুসলিম লিগ (এমএমএল) নামে একটি রাজনৈতিক দল খুলছেন তিনি, সে দিন থেকেই পাল্টা পদক্ষেপের কথা ভাবতে বাধ্য হয়েছে পাক প্রশাসন। নির্বাচন কমিশন যাতে এমএমএল-কে রাজনৈতিক দল হিসেবে স্বীকৃতি না দেয়, তা নিশ্চিত করতে সক্রিয় হয় পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ মন্ত্রক। লড়াই গড়ায় সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত। দেশের সর্বোচ্চ আদালতকে পাক সরকার জানায়, লস্করের মতো সন্ত্রাসবাদী সংগঠনের সঙ্গে যোগ রয়েছে এমএমএল-এর। এ ধরনের সংগঠন রাজনৈতিক দল হিসেবে স্বীকৃতি পেলে পাকিস্তানের রাজনীতিতে কট্টরবাদ এবং হিংসা বাড়বে বলেও সরকারের তরফে জানানো হয়।

নওয়াজ শরিফের দুর্গে হানা দিয়ে হাফিজ নিজেকে শাসক দলের প্রধান প্রতিপক্ষ হিসেবে তুলে ধরতে চাইছেন। বলছেন বিশেষজ্ঞরা। ছবি: এএফপি।

শেষ পর্যন্ত আইনি লড়াইয়ে জিততে পারেননি হাফিজ সইদ। সুপ্রিম কোর্টের রায় তাঁর পক্ষে যায়নি। নির্বাচন কমিশনও এমএমএল-কে স্বীকৃতি দেয়নি। তা সত্ত্বেও হাফিজ সইদ এমএমএল-এর ব্যানার নিয়ে ময়দানে নেমে পড়লেন। পাকিস্তানের শাসক দল পিএমএল(এন)-এর প্রাণপুরুষ তথা প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের খাসতালুকে হানা দিলেন তিনি। যে আসন থেকে নওয়াজ ভোটে লড়তেন, সেই এনএ-১২০ আসনে গিয়েই এমএমএল-এর দফতর খুললেন।

আরও পড়ুন: পাক জেলে মা-স্ত্রীর সঙ্গে দেখা হল কুলভূষণের

দুর্নীতির মামলায় সুপ্রিম কোর্টের রায়ের প্রেক্ষিতে নওয়াজ শরিফ প্রধানমন্ত্রিত্ব ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন। ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির সদস্য পদ থেকেও তাঁকে ইস্তফা দিতে হয়েছে। ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির সেই ১২০ নম্বর আসন থেকে মাসখানেক আগেই নির্বাচিত হয়েছেন নওয়াজ শরিফের স্ত্রী। কিন্তু নওয়াজের স্ত্রী-র বিরুদ্ধে প্রার্থী দিয়েছিলেন হাফিজ সইদ। স্বীকৃত রাজনৈতিক দল না হওয়া সত্ত্বেও মিল্লি মুসলিম লিগের প্রার্থী সে নির্বাচনে চতুর্থ স্থান পান। তাই প্রকাশ্য রাজনৈতিক কর্মসূচির জন্য লাহৌরের এনএ-১২০ আসনকেই বেছে নিলেন হাফিজ সইদ। বলছে পাক সংবাদমাধ্যম।

আরও পড়ুন: অশান্তি বাড়াবে পাকিস্তান, আশঙ্কায় মোদী সরকার

শুধু অফিস উদ্বোধন করা নয়, নওয়াজ শরিফের খাসতালুকে রবিবার বিভিন্ন মহল্লায় ঘুরে ঘুরে হাফিজ সইদ জনসংযোগও করেছেন বলে জানা গিয়েছে। পাকিস্তানের বর্তমান শাসক দলের প্রধান প্রতিপক্ষ হিসেবে নিজেকে তুলে ধরতেই শরিফ পরিবারের ঘাঁটি থেকে রাজনৈতিক কর্মসূচি শুরু করলেন হাফিজ সইদ। বলছেন বিশ্লেষকরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE