Advertisement
১৯ মে ২০২৪

দু’বছরে আইএসের বলি ১৩০৯! অধিকাংশই পশ্চিমি নাগরিক

দু’বছরেই অন্তত ১৩০৯ মানুষ খুন করেছে ‘ইসলামিক স্টেট অফ ইরাক অ্যান্ড সিরিয়া’র (আইএস) জঙ্গিরা। আর এই সময়ে জঙ্গিরা বেশি টার্গেট করেছে ইউরোপের দেশগুলিকেই। তাদের টার্গেটে রয়েছে আমেরিকাও। এর মধ্যে বেশির ভাগ ঘটনারই দায় পরে ‘বীরত্বে’র সঙ্গে স্বীকার করে নিয়েছে আইএস। বাকি ঘটনাগুলোতেও আইএস জঙ্গিরা জড়িত বলে সন্দেহ করা হচ্ছে।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ০৩ জুলাই ২০১৬ ১৫:১২
Share: Save:

দু’বছরেই অন্তত ১৩০৯ মানুষ খুন করেছে ‘ইসলামিক স্টেট অফ ইরাক অ্যান্ড সিরিয়া’র (আইএস) জঙ্গিরা। আর এই সময়ে জঙ্গিরা বেশি টার্গেট করেছে ইউরোপের দেশগুলিকেই। তাদের টার্গেটে রয়েছে আমেরিকাও। এর মধ্যে বেশির ভাগ ঘটনারই দায় পরে ‘বীরত্বে’র সঙ্গে স্বীকার করে নিয়েছে আইএস। বাকি ঘটনাগুলোতেও আইএস জঙ্গিরা জড়িত বলে সন্দেহ করা হচ্ছে।

২০১৪ থেকে আইএসের তাণ্ডবলীলার ইতিহাস ঘেঁটেঘুঁটে দেখা যাচ্ছে, ২০১৪-র অক্টোবর থেকে বার বারই ওই জঙ্গি সংগঠনের হানাদারির শিকার হয়েছেন মূলত পশ্চিমি দেশগুলির নাগরিকরা। তাঁরা হয় খুন হয়েছেন তাঁদের দেশ বা ইউরোপেরই কোনও দেশে। নয়তো তাঁরা প্রাণ হারিয়েছেন এশিয়া বা আফ্রিকার দেশগুলিতে।

পরিসংখ্যান জানাচ্ছে, বিদেশিদের ওপর আইএসের হানাদারি শুরু হয়েছিল আলজেরিয়ায়। ২০১৪-র অক্টোবরের সেই ঘটনায় আইএস জঙ্গিরা এক ফরাসি নাগরিকের মাথা কেটেছিল। এর পর ২০১৪-রই নভেম্বর, ডিসেম্বরে তারা আরও দু’টি হামলার ঘটনা ঘটায় কানাডা ও অস্ট্রেলিয়ায়। কানাডায় এলোপাথাড়ি গুলি চালানোর পর গাড়ি চালিয়ে দিয়ে তারা পিষে মেরেছিল সন্ত্রস্ত, ছুটন্ত পশ্চিমি নাগরিকদের। ২০১৫-র জানুয়ারি থেকে এপ্রিলের মধ্যে পশ্চিমি দেশগুলোর নাগরিকদের ওপর হানাদারির ৫টি ঘটনা ঘটিয়েছিল আইএস জঙ্গিরা। তার মধ্যে সবচেয়ে বড় দু’টি ঘটনা ঘটেছিল ডেনমার্ক আর টিউনিসিয়ায়। টিউনিসিয়ার একটি মিউজিয়ামে আইএস জঙ্গিদের হামলায় প্রাণ হারিয়েছিলেন বিদেশি পর্যটকরা। এর পর ২০১৫-র এপ্রিল থেকে ডিসেম্বর, এই ৯ মাসে ইউরোপের দেশ বা বিদেশি নাগরিকদের ওপর আইএস জঙ্গিদের হামলার ঘটনা ঘটেছে কম করে ৯টি। তার মধ্যে সবচেয়ে বড় দু’টি ঘটনার একটি ঘটেছে মিশরে। অন্যটি প্যারিসে। মিশরে মৃত্যুর সংখ্যা ছিল ২২৪। প্যারিসে ১৩০। মিশরের সিনাইয়ে একটি রুশ যাত্রীবাহী বিমানকে গুলি করে মাটিতে নামিয়েছিল ইসলামিক স্টেটের জঙ্গিরা।

আর চলতি বছরের প্রথম ৬ মাসে বিদেশি নাগরিকদের ওপর আইএসের হানাদারির ঘটনা ঘটেছে মোট ২১টি। তার মধ্যে অন্যতম ব্রাসেলস, অরল্যান্ডো ও বাংলাদেশ।

আবার ২০১৫-র ফেব্রুয়ারি থেকে ২০১৬-র জুন পর্যন্ত আইএস জঙ্গিরা এশিয়া ও আফ্রিকার যে যে দেশে হামলা চালিয়েছে (মিশর, ইয়েমেন, কুয়েত, তুরস্ক, লেবানন ও বা্ংলাদেশ), সেখানেও তাদের মূল টার্গেট ছিলেন পশ্চিমি দেশগুলির নাগরিকরাই।

পরিসংখ্যান থেকে এটাও স্পষ্ট হয়ে উঠেছে, ইউরোপীয় ইউনিয়নে থাকা ইউরোপের দেশগুলি গত দু’বছরে বার বারই টার্গেট হয়েছে আইএস জঙ্গিদের। কিন্তু বিস্ময়ের হলেও সত্যি, ব্রিটেনকে তারা এই সময়ে আদৌ নিশানা করেনি!

‘ব্রেক্সিট’-এর পর ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে ব্রিটেনের বেরিয়ে যাওয়ার ছবিটা স্পষ্ট হয়ে যেতে রীতিমতো উল্লসিত হতে দেখা গিয়েছে আইএস-কে। তাদের এ ব্যাপারে প্রকাশ্যে বিবৃতি দিতেও দেখা গিয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তাদের প্রসার ও নিরাপত্তার জন্য ইউরোপীয় জোটকে ভাঙতে আর ইউরোপের দেশগুলিতে লাগাতার হামলা চালিয়ে সেগুলিকে আর্থিক ভাবে দুর্বল করে দেওয়ার ফন্দি এঁটেছে আইএস জঙ্গিরা।

আরও পড়ুন- একটা করে খুন করেই আইএস দফতরে ছবি পাঠিয়ে দিচ্ছিল জঙ্গিরা!​

আর ব্রিটেনকে তারা গত দু’বছরে কেন টার্গেট করেনি?

এর স্পষ্ট কোনও উত্তর না মিললেও, সম্প্রতি একটি নজরকাড়া মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, ‘‘জামাতের মতো বিভিন্ন মৌলবাদী জঙ্গি সংগঠনের বহু সদস্যই গা ঢাকা দিয়ে রয়েছেন পূর্ব লন্ডনে। যেটা খুবই উদ্বেগজনক।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE