দখল হয়ে গিয়েছিল গ্রামটা। আইএস জঙ্গিদের উদ্যত বন্দুকের সামনে নিজেদের গ্রামেই শরণার্থীর মতো জীবন কাটাচ্ছিলেন সিরিয়ার সংখ্যালঘু ইয়াজিদি সম্প্রদায়ের মানুষগুলো। কথার অবাধ্য হলেই পুরুষদের খুন করছিল জঙ্গিরা। মহিলাদের আলাদা করে নিয়ে গিয়ে যৌনদাসী বানানো হচ্ছিল। মা-বাবাদের থেকে আলাদা করে দেওয়া হয়েছিল শিশুদেরও।
নারী-পুরু-শিশু নির্বিশেষে অকথ্য অত্যাচার চালাচ্ছিল জঙ্গিরা। সেই দিনগুলোর কথা মনে করতে গিয়ে বার বার কান্নায় ভেঙে পড়ছিলেন ইয়াজিদি যুবতী ভিয়ান দাখিল। শিউরে উঠছিলেন ভয়ঙ্কর স্মৃতিগুলো উঁকি দিতেই। আইএস বন্দি শিবির থেকে মুক্তি পাওয়ার পর সিরিয়ায় আর থাকতে চান না দাখিলরা। আমেরিকায় থিতু হতে চান। মার্কিন সংবাদ মাধ্যমে মুখ খুলে যা জানালেন দাখিল, তা শুনলেই শিউরে উঠতে হয়?
প্রায় দু’দিন খেতে দেয়নি জঙ্গিরা। পেটের জ্বালায় সকলেরই কাহিল অবস্থা। তার মধ্যে চলছে যৌন অত্যাচার। অসহনীয় অবস্থায় দু’দিন কাটার পর খাবার এসেছিল। মাংস-ভাত দিয়েছিল জঙ্গিরা। দাখিলের পাশে বসে যে মহিলা খাচ্ছিলেন, তাঁর সামনে এসে বাঁকা হাসি নিয়ে এক জঙ্গি জিজ্ঞাসা করল, ‘‘মাংস-ভাত ভাল লাগছে?’’ সন্ত্রস্ত, বিধ্বস্ত মহিলা মাথা নেড়ে সম্মতি দিলেন। জঙ্গি আরও চওড়া হেসে বলল, ‘‘ভাল করে খাও। তোমার তিন বছরের ছেলেটার মাংস এটা।’’
আরও পড়ুন:
‘৭ দিন খাইনি’, আইএস-এর দৌলতে এমনই হাল সিরিয়ার বাচ্চাদের
ঘটনার কথা বলতে গিয়ে বার বার শিউরে উঠছিলেন দাখিল। আইএস বন্দিশালায় তাঁর পাশে বসে মাংস-ভাত খাচ্ছিলেন যে মহিলা, তিনি জঙ্গির কথা শোনার পর বিহ্বল হয়ে তাকিয়েছিলেন দাখিলের দিকে। বলেছিলেন, ‘‘আমার মুখে তো আর খাবার উঠছে না। কী করব বুঝতে পারছি না। আমি আমার ছেলেকে খাচ্ছি!’’ ডুকরে উঠেছিলেন মহিলা।
এমনই সব অকথ্য আর অভাবনীয় নির্যাতনের অভিযোগ উঠছে আইএস জঙ্গিদের বিরুদ্ধে। ইরাক এবং সিরিয়ার বিশাল অংশ এখন স্বঘোষিত খলিফা আবু বকর আল বাগদাদির বাহিনীর দখলে। সেই রাজত্বে সংখ্যালঘু ইয়াজিদি আর খ্রিস্টানদের উপর এমনই নানা অত্যাচার চলছে বলে বন্দিশালা থেকে মুক্তি পাওয়া ইয়াদিজিদের দাবি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy