Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

একঘরে করুন কিমকে, মার্কিন চাপ রাষ্ট্রপুঞ্জে

উত্তর কোরিয়াকে পাল্টা চাপ দেওয়া শুরু করল আমেরিকা। কাল আন্তর্মহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র (আইসিবিএম) পরীক্ষার খবর পাওয়ার পরই তড়িঘড়ি রাষ্ট্রপুঞ্জে তড়িঘড়ি বৈঠক ডাকে আমেরিকা।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ০১ ডিসেম্বর ২০১৭ ০৪:০১
Share: Save:

উত্তর কোরিয়াকে পাল্টা চাপ দেওয়া শুরু করল আমেরিকা।
কাল আন্তর্মহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র (আইসিবিএম) পরীক্ষার খবর পাওয়ার পরই তড়িঘড়ি রাষ্ট্রপুঞ্জে তড়িঘড়ি বৈঠক ডাকে আমেরিকা। রাষ্ট্রপুঞ্জে মার্কিন দূত নিকি হ্যালি সেখানেই উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে আর্থিক ও কূটনৈতিক যোগাযোগ বন্ধ করার আর্জি জানান সব ক’টি দেশকে। তাঁর হুঁশিয়ারি, ‘‘আমরা দ্বন্দ্ব চাই না। কিন্তু যুদ্ধ বাধলে কিম জং উনের দেশ কার্যত ধ্বংস হয়ে যাবে।’’

হোয়াসং-১৫। আপাতত ট্রাম্প প্রশাসনের রাতের ঘুম কেড়ে নেওয়ার পক্ষে যথেষ্ট এই দু’টি শব্দ। পরশু ভোরে উত্তর কোরিয়ার পশ্চিমাংশ সেইন নি থেকে এই আইসিবিএমটি-ই ছোড়া হয়েছে বলে দাবি করেছে সে দেশের সংবাদমাধ্যম। আমেরিকার মূল ভূখণ্ডে অনায়াসে পৌঁছনোর ক্ষমতা রাখা এই আইসিবিএমটি ভেঙে পড়েছে জাপান সাগরে। আগেও আইসিবিএম বানিয়েছেন কিমের দেশের বিজ্ঞানীরা।
কিন্তু নতুনটি আকারে আরও বড় এবং ক্ষমতাশালী, দাবি করেছে পিয়ংইয়ং।

রাষ্ট্রপুঞ্জের বৈঠকে ছিল জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, ব্রিটেন, চিন, রাশিয়া ও ইতালি। নিকির বক্তব্য, রাষ্ট্রপুঞ্জের নিষেধাজ্ঞার সঙ্গে সঙ্গে বিশ্বের প্রতিটি দেশের উচিত কিম প্রশাসনের সঙ্গে আলাদা ভাবে কূটনৈতিক, সামরিক, প্রযুক্তিগত, বৈজ্ঞানিক সম্পর্কও বন্ধ করা। রাশিয়া প্রথমেই আমেরিকার প্রস্তাব নাকচ করে দিয়েছে। পিয়ংইয়ংয়ের সাম্প্রতিক আইসিবিএম উৎক্ষেপণ পরীক্ষার সমালোচনা করলেও উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক ছিন্ন করতে নারাজ মস্কো। রুশ বিদেশমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ প্রথম থেকেই ব্যর্থতার দায় চাপান আমেরিকার উপর। তাঁর বক্তব্য, উত্তর কোরিয়াকে সন্ত্রাসে মদতপুষ্ট রাষ্ট্রের তকমা না দিয়ে আলোচনার প্রস্তাব দিলে আজ পরিস্থিতি এই পর্যায়ে পৌঁছত না।

উত্তর কোরিয়ার আর এক বন্ধু দেশ চিন অবশ্য সরকারি ভাবে গোটা কোরীয় উপদ্বীপে শান্তি বজায় রাখার কথাই বলেছে। কিন্তু সরকারি দৈনিক গ্লোবাল টাইমসও রাশিয়ার সুরে গোটা পরিস্থিতির জন্য ট্রাম্প প্রশাসনকে দায়ী করেছে। এই অবস্থায় নিকি চাইছেন উত্তর কোরিয়াকে তেল জোগানো বন্ধ করুক বেজিং। নিকির কথায়, ‘‘কিম প্রশাসনের ক্ষেপণাস্ত্র প্রকল্পে এত বাড়বাড়ন্ত তেলের জন্য। চিনকে অনুরোধ করা হয়েছে, তারা যেন এই তেলের জোগানই বন্ধ করে দেয়। আমাদের প্রেসিডেন্ট কালই চিনা প্রেসিডেন্টের সঙ্গে এ নিয়ে কথা বলেছেন।’’ দীর্ঘদিনের অর্থনৈতিক সঙ্গী পিয়ংইয়ংকে চিন আদৌ তেল সরবরাহ বন্ধ করবে কি না, তা নিয়ে কুলুপ এঁটেছে বেজিং।

এ নিয়ে কোনও স্পষ্ট অবস্থান নেয়নি সাউথ ব্লক। নিকি জানিয়েছেন, ভারতের প্রতি তাদের প্রত্যাশা একটু বেশিই। গত সেপ্টেম্বরে মার্কিন বিদেশ সচিব রেক্স টিলারসন নয়াদিল্লি এসেও একই অনুরোধ করেছিলেন ভারতকে। এখন মার্কিন প্রশাসনের নির্দেশে দক্ষিণ কোরিয়াও কূটনৈতিক চাপ তৈরি করতে শুরু করেছে নয়াদিল্লির উপর। তা ছাড়া, কোনও দেশের উপর আর্থিক নিষেধাজ্ঞা জারি করা নিয়ে ভারত বরাবর আন্তর্জাতিক মঞ্চে প্রতিবাদ জানিয়ে এসেছে। বাজপেয়ী জমানায় পরমাণু পরীক্ষা করার পর আমেরিকা যখন ভারতের উপর নিষেধাজ্ঞা চাপায়, তখন তা নিয়ে রাষ্ট্রপুঞ্জেও দরবার করেছে নয়াদিল্লি। আজ কোনও একটি দেশ ভুক্তভোগী হলে, কাল তা নিজেদের দিকে ফিরে আসতে পারে, আশঙ্কা রয়েছে তাদের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE