Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

সিগারেট বেচতে অস্বীকার, ব্রিটিশ কিশোরদের হাতে খুন ভারতীয়

ওই কিশোরদের রাগ এ বার গিয়ে প়ড়ে বিজয়ের উপর। তারা তাঁকে ঘুষি মেরে মাটিতে ফেলে মারধর করে দোকানের সামনের ফুটপাথে ফেলে রেখে পালায়।

সংবাদ সংস্থা
লন্ডন শেষ আপডেট: ১২ জানুয়ারি ২০১৮ ০২:৩২
Share: Save:

দেশের আইন মানতে গিয়ে তিন ব্রিটিশ কিশোরের হাতে খুন হলেন এক ভারতীয় বংশোদ্ভূত। উত্তর লন্ডনের ঘটনা।

স্কটল্যান্ড ইয়ার্ডের তরফে জানানো হয়েছে, গত শনিবার রাতে শহরের মিল হিল এলাকার রোটা এক্সপ্রেস নামে একটি দোকানে গিয়ে সিগারেট পেপার কিনতে চেয়েছিল বছর ষোলোর তিন কিশোর। কর্মীর সন্দেহ হওয়ায় তাদের বয়সের প্রমাণপত্র দেখতে চান তিনি। ব্রিটেনে ১৮ বছরের নীচে কাউকে তামাক বা মদ বিক্রি করা আইনত অপরাধ। ওই তিন ব্রিটিশ কিশোর বয়সের প্রমাণপত্র দেখাতে না পারায় অপ্রাপ্তবয়স্কদের তামাকজাত দ্রব্য বিক্রি করতে অস্বীকার করেন ওই দোকানকর্মী। সিগারেট কিনতে মরিয়া কিশোররা ওই কর্মীকে মারধর শুরু করলে নিজের সহকর্মীকে বাঁচাতে ছুটে গিয়েছিলেন বছর ঊনপঞ্চাশের বিজয় পটেল। ওই কিশোরদের রাগ এ বার গিয়ে প়ড়ে বিজয়ের উপর। তারা তাঁকে ঘুষি মেরে মাটিতে ফেলে মারধর করে দোকানের সামনের ফুটপাথে ফেলে রেখে পালায়।

অ্যাম্বুল্যান্স কর্মীরা এসে বিজয়কে উদ্ধার করে স্থানীয় সেন্ট মেরিজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, তাঁর মাথার আঘাত এতটাই গুরুতর ছিল যে তাঁকে বাঁচানো যায়নি। বুকেও আঘাত ছিল বিজয়ের। গোয়েন্দা ইয়ান লট জানিয়েছেন, গোটা ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ষোলো বছরের এক কিশোরকে গ্রেফতার করে আজ আদালতে পেশ করা হয়েছিল। তবে এই ঘটনায় কমপক্ষে আরও দু’জন কিশোর জড়িত বলে জানিয়েছেন লট। বিজয়কে যখন হাসপাতালে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছিল, সেই সময়কার একটি ছবি তাঁর পরিবারের তরফে প্রকাশ করা হয়েছে। সেই ছবি ছড়িয়ে দিয়ে তাঁরা চাইছেন, অপরাধীরা যাতে দ্রুত কঠিন শাস্তি পায়। বিজয়ের পরিবারকে সাহায্যের জন্য ইতিমধ্যেই একটি অনলাইন ফান্ডরেইজিং পেজ খোলা হয়েছে যাতে আপাতত ১৫ হাজার পাউন্ডের মতো অর্থ উঠেছে।

ইয়ান লটের বক্তব্য, ‘‘কোনও প্ররোচনা ছাড়াই বিজয়কে মারধর করা হয়েছে। শুধুমাত্র ওঁরা সিগারেট পেপার দিতে অস্বীকার করেছিলেন বলে। কোনও কারণ ছাড়া কেবল আইন রক্ষা করতে গিয়েই মরতে হলো বিজয়ের মতো এক জন মানুষকে।’’ বাকি অভিযুক্তদের সম্পর্কে তথ্য দেওয়ার জন্য স্থানীয় বাসিন্দাদের অনুরোধ করেছে স্কটল্যান্ড ইয়ার্ড।

২০০৬ সালে ভারত ছেড়ে লন্ডনে এসে থাকা শুরু করেছিল পটেল পরিবার। উত্তর লন্ডনের কলিনডেলে থাকতেন বিজয়। বিজয়ের দুই সন্তান বিদেশে পড়াশোনা করে। ঘটনার সময় তাঁর স্ত্রী বিভা ভারতে আত্মীয়ের বাড়ি গিয়েছিলেন। যে দোকানে বিজয় কাজ করতেন তার মালিক আবদুল্লাহ রহিমজাইও সে দিনের আক্রমণে জখম হয়েছিলেন। তাঁর কথায়, ‘‘বিজয়ের মতো মানুষ পাওয়া কঠিন। সে আমার ডান হাত ছিল।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

UK Indian-origin North London
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE