সিরিয়া ছেড়েছেন। জার্মানি যাওয়ার পথে বুদাপেস্টে আটকেছে পুলিশ। অগত্যা ছেলেকে নিয়েই বিক্ষোভে সামিল মা। ছবি: এএফপি।
অশান্তি অব্যাহত হাঙ্গেরিতে।
গত কালের মতো আজও সকাল থেকে বুদাপেস্টের কেলেটি রেল স্টেশনের সামনে জড়ো হতে শুরু করেন শরণার্থীরা। জার্মানি যাওয়ার ট্রেনের টিকিট হাতে থাকলেও তাঁদের স্টেশনে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। গত কালই অবশ্য বুদাপেস্ট প্রশাসনের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়, পাসপোর্ট এবং শেঙ্গেন ভিসা ছাড়া কাউকে হাঙ্গেরি থেকে জার্মানির ট্রেনে চড়তে দেওয়া হবে না। প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে কাল স্টেশনের সামনে বিক্ষোভে নামেন হাজার দু’য়েক শরণার্থী।
আজও স্টেশনে বিশাল পুলিশ বাহিনী উপস্থিত ছিল। ব্যারিকেডের সামনে দাঁড়িয়ে ‘স্বাধীনতা স্বাধীনতা’ বলে স্লোগান দিতে থাকেন বিক্ষোভকারীরা। দীর্ঘক্ষণ গলা ফাটানোর পরে তাঁরা ব্যারিকেডের সামনেই বসে পড়েন।
বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা শরণার্থীদের নিয়ে ইতিমধ্যেই মুখ খুলেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। এমন শরণার্থী-সমস্যা যে সাম্প্রতিক কালে আর দেখা যায়নি, তা জানিয়ে দিন কয়েক আগেই একটি রিপোর্ট পেশ করে রাষ্ট্রপুঞ্জ। তথ্য বলছে, আফ্রিকা ও পশ্চিম এশিয়া থেকে ইউরোপে আশ্রয়ের খোঁজে আসা মানুষদের বেশিরভাগই হাঙ্গেরি দিয়ে ইউরোপে ঢোকেন। প্রসঙ্গত, ইউরোপের ২৬টি দেশে কোনও সীমান্ত-বিধি ছাড়াই ট্রেনে ভ্রমণ করা যায়। তবে শরণার্থীদের ক্ষেত্রে নিয়ম আলাদা। তাঁরা ইউরোপের যে দেশে প্রথম আসেন, সেখান থেকে ছাড়পত্র মেলার পরেই অন্য কোনও দেশে যেতে পারেন। যদিও সোমবার পর্যন্ত
হাঙ্গেরি এবং অস্ট্রিয়ার প্রশাসন অনুমতিপত্র ছাড়াই শরণার্থীদের জার্মানি যাওয়ার অনুমতি দিয়েছে। সেই মতো কালও বুদাপেস্ট থেকে বার্লিনের ট্রেন ধরতে আসেন প্রচুর মানুষ। তবে কাল থেকেই স্টেশনে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না শরণার্থীদের।
গত কালের বিক্ষোভের পরে বুদাপেস্টের সরকারি মুখপাত্র জোল্টান কোভাক্স জানিয়েছিলেন, ইউরোপে শরণার্থী-সঙ্কট বাড়ছে।
হাঙ্গেরিতেও বাড়ছে উদ্বাস্তু সংখ্যা। ফলে ইউরোপীয় ইউনিয়নের নিয়ম কার্যকর করতে পথে নেমেছে পুলিশ। শেঙ্গেন ভিসা এবং পাসপোর্ট ছাড়া কাউকে হাঙ্গেরি হয়ে জার্মানি যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হবে না ।
শরণার্থী সমস্যা নিয়ে ইতিমধ্যেই উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর ওরবান। তাঁর কথায় অবশ্য উঠে এসেছে পশ্চিম এশিয়া থেকে আসা শরণার্থীদের কথাই। সেখানে জঙ্গি-দৌরাত্ম্যের প্রসঙ্গ টেনে ভিক্টর দাবি করেন, ‘‘খ্রিস্টান ইউরোপের অস্তিত্ব বিপন্ন!’’ বুদাপেস্টের একটি সংবাদপত্রকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে শরণার্থীদের প্রতি প্রশাসনের কঠোর মনোভাবের এক রকম ব্যাখ্যাও দিয়েছেন তিনি। তামাম ইউরোপবাসীর কাছে তাঁর প্রশ্ন, ‘‘আমাদের নাতি-নাতনিরা ইউরোপের সংযুক্ত খলিফায় (ধর্মীয় সাম্রাজ্য) বড় হোক, এমনটা কী আমরা চাই? আমার উত্তর, না।’’
আজকের বিক্ষোভ প্রসঙ্গে জোল্টা বলেন, ‘‘ওঁদের হাতে ট্রেনের টিকিট রয়েছে। কিন্তু সে জন্য আমরা ইউরোপীয় ইউনিয়নের নিয়ম ভাঙতে পারব না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy