নাসিম নাজাফি আগদাম
হামলার আগে রীতিমতো প্রস্তুতি সেরে রেখেছিল বন্দুকবাজ নাসিম নাজাফি আগদাম। তদন্তে নেমে প্রাথমিক ভাবে এমন তথ্যই জানতে পেরেছে পুলিশ।
গত মঙ্গলবার দুপুরে ক্যালিফোর্নিয়ার সান ব্রুনোয় সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইট ইউটিউবের সদর দফতরে একটি নাইন এমএম পিস্তল নিয়ে হামলা চালিয়েছিল বছর উনচল্লিশের নাসিম। তিন জন তার গুলিতে আহত হন। হামলার কিছু ক্ষণের মধ্যে নিজের পিস্তল থেকে গুলি চালিয়েই আত্মঘাতী হয় নাসিম। সান ব্রুনোর পুলিশ বিভাগের প্রধান এড বারবেরিনি বুধবার সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, হামলার দিন সকালে স্থানীয় একটি শুটিং রেঞ্জে বেশ কিছু ক্ষণ বন্দুক চালানো অনুশীলন করেছিল নিহত বন্দুকবাজ। যে সেমি অটোম্যাটিক নাইন এমএম পিস্তল দিয়ে সে হামলা চালিয়েছিল, ঘটনাস্থল থেকে সেটি উদ্ধার করেছে পুলিশ। পিস্তলটি নাসিমের নামেই নথিভুক্ত করা ছিল বলেও জানতে পেরেছে পুলিশ।
সান ব্রুনোর পুলিশ দফতর আরও জানিয়েছে, মঙ্গলবার মাঝ রাতে ক্যালিফোর্নিয়ার মাউন্টেন ভিউ এলাকার পুলিশের সঙ্গে প্রায় আধ ঘণ্টা কথা হয়েছিল নাসিমের। সান ব্রুনো থেকে প্রায় তিরিশ মাইল দূরত্ব মাউন্টেন ভিউয়ের। গুগলের মূল দফতর সেখানেই। কিন্তু সেখানকার পুলিশ দফতরের কর্মীরা জানিয়েছেন, নাসিমের কথাবার্তায় তাঁরা কোনও অস্বাভাবিকতা সে রাতে দেখতে পাননি। আর কয়েক ঘণ্টার মধ্যে যে সে অত বড় একটা কাণ্ড ঘটাতে চলেছে, তার আঁচও পায়নি পুলিশ। সোমবার মাঝরাতে মাউন্টেন ভিউয়ের এক শপিং সেন্টারের পার্কিং এলাকার একটি গাড়িতে পুলিশ ঘুমন্ত অবস্থায় উদ্ধার করে নাসমিকে। তার আগে তার বাড়ির লোক পুলিশকে জানিয়েছিল, গত দিন-চার দিন ধরে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না নাসিমকে। পুলিশকে নাসিম জানায়, চাকরির খোঁজে মাউন্টেন ভিউ এসেছে সে। মিনিট কুড়ি জিজ্ঞাসাবাদ পর্বের পরে নাসিমকে ছেড়ে দেয় পুলিশ। নাসিমের খোঁজ পাওয়া গিয়েছে বলে তার বাবা আর দাদাকে ফোনে জানিয়েও দেয় তারা।
মূলত নাসিমের ইউটিউবের প্রতি ঘৃণাই হামলার মূল উদ্দেশ্য বলে মনে করছে পুলিশ। বারবেরিনি জানিয়েছেন, হামলাকারী ওই অফিসের কোনও কর্মীকেই আগে থেকে চিনত না। কিন্তু তার বানানো অজস্র ভিডিয়ো ইউটিউব বারবার ব্লক করে দেওয়ায় সংস্থার প্রতি প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ ছিল নাসিম। তার পরিবারের সঙ্গে কথা বলে তেমনটাই জানতে পেরেছে পুলিশ। তদন্তের জন্য দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়ার দু’টি বাড়িতে তল্লাশি চালানো হয়েছে বলে জানিয়েছে তারা।
মঙ্গলবারের হামলায় যাঁরা আহত হন, তাঁদের মধ্যে দুই মহিলাকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। গুরুতর আহত বছর ছত্রিশের এক যুবকের অবস্থা এখন ভাল। তড়িঘড়ি নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে ইউটিউবের সদর দফতরে। এমন হামলা ফের ঘটলে, কী ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হবে, তা নিয়েও আলোচনা সেরেছেন কর্তৃপক্ষ। বুধবার থেকে বেশির ভাগ বিভাগের কাজ শুরু হয়েছে। অফিস চত্বরের সামনের কিছুটা রাস্তা ঘিরে রেখেছে পুলিশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy