অলিম্পিক্স জয়ের পর পিওতর মালাচোস্কি। ফাইল চিত্র।
মানবিকতার আরও এক মুখ দেখল বিশ্ব।
নিজের স্বপ্ন বেচে এক মায়ের সন্তানের চোখের স্বপ্ন ফিরিয়ে দিতে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিলেন অলিম্পিক জয়ী এক অ্যাথলিট।
পিওতর মালাচোস্কি। রিও অলিম্পিকে পোল্যান্ডের রুপোজয়ী ডিসকাস থ্রোয়ার। ৩৩ বছর বয়সী এই বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন নিজের রুপোর পদক বেচে দিতে চাইলেন ক্যানসার আক্রান্ত এক শিশুর জন্য।
শিশুটির নাম ওলেক। গত দু’বছর ধরে চোখের ক্যানসারের সঙ্গে লড়াই করছে সে। বিশেষ চিকিত্সার জন্য নিউইয়র্কে তাকে নিয়ে যাওয়া প্রয়োজন। পিওতর জানান, ছোট্ট শিশুটির মায়ের কাছ থেকে একটি চিঠি তাঁর কাছে আসে। চিঠিটা পড়েই তিনি ওলেককে সাহায্য করার সিদ্ধান্ত নেন। আর সেটা সদ্য রিও-তে জেতা নিজের পদক বিক্রি করেই! ফেসবুকে এই নিয়ে তিনি একটি পোস্টও করেন— যদি কোনও সহৃদয় ব্যক্তি তাঁর রুপোর পদক কেনেন, তা হলে সেই পদক ওলেক ও তাঁর পরিবারের কাছে সোনার থেকেও অনেক বেশি মূল্যবান হবে।
পিওতর বলেন, “নিজেকে তো প্রমাণ করেছি আমি চ্যাম্পিয়ন। খুশি করেছি পরিবার, আত্মীয়স্বজন, বন্ধুদেরও। এখন সুযোগ এসেছে অন্যের মুখে হাসি ফোটানোর। যদি এই পদকটি নিলামে বিক্রি হয় তা হলে ওলেক একটা নতুন জীবন ফিরে পাবে, নতুন ভাবে দেখতে শিখবে।”
অলিম্পিক জয় করে নিজের স্বপ্ন বাস্তবায়িত করেছেন। নিজের স্বপ্নের বিনিময়ে ওলেকের স্বপ্ন বাস্তবায়িত করাই এখন প্রধান লক্ষ্য এই বিশ্ব চ্যাম্পিয়নের। এও যেন আর এক অলিম্পিক জয়ের মতো। তবে এই জয়ের আনন্দই আলাদা পিওতরের কাছে। ফেসবুকে তিনি সবাইকে আহ্বান জানান এই লড়াইয়ে শরিক হতে। তবে পিওতরকে বেশি অপেক্ষা করতে হয়নি। তাঁর আহ্বানে সাড়া দিয়ে পদক কিনে নিয়েছেন দুই ব্যক্তি। পদক নিলামে বিক্রি হওয়ার পর পিওতরের মুখে অস্ফুটে বেরিয়ে আসে, “এখানেও সফল হলাম।”
ওলেক। যার চিকিত্সার জন্য নিজের পদক বেচলেন অলিম্পিয়ান।
তাঁর ছেলের সাহায্যে যে ভাবে এগিয়ে এসেছে এই অলিম্পিয়ান, যে ভাবে নিজের স্বপ্নকে নিলামে তুলে ওলেকের স্বপ্নপূরণে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন, এই নিয়ে কী বললেন ওলেকের মা?
তিনি বলেন, “পিওতর আমাদের কাছে সোনার হৃদয়ের এক চ্যাম্পিয়ন। যে ভাবে ছেলেকে সাহায্য করতে নিজের পদক বেচে দিতেও সাত-পাঁচ ভাবেননি, তা সত্যিই অভাবনীয়। তিনি আমাদের কাছে ভগবান।”
পিওতর যেমন সফল হয়েছেন অলিম্পিকে। কিন্তু এই সাফল্যকেও ছাড়িয়ে গিয়েছে তাঁর মানবিক সিদ্ধান্ত। সোনা হয়তো জিততে পারেননি তিনি, কিন্তু যে সোনা তিনি ওলেকের জীবনে ফিরিয়ে দিলেন তা সারা বিশ্ব দেখল।
আরও খবর...
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy