শেরিন ম্যাথিউস। ছবি: এপি।
দুধ খেতে গিয়ে বিষম লেগেছিল। তাতেই শ্বাসরুদ্ধ হয়ে মারা যায় তিন বছরের শেরিন ম্যাথিউস। ঘটনার ১৭ দিন পরে তার পালক বাবা ওয়েসলি-র কাছ থেকে এ কথা জানতে পেরেছে টেক্সাস পুলিশ। ওয়েসলিকে গ্রেফতার করে তার বিরুদ্ধে শিশু নিগ্রহের চার্জ আনা হয়েছে। দোষী প্রমাণিত হলে ৯৯ বছরের কারাদণ্ড হবে ওয়েসলির।
মঙ্গলবার নিজেই থানায় এসে আগের বয়ান বদলে ফেলে ওয়েসলি। জানায়, ৭ অক্টোবর রাতে সে জোর করে মেয়েকে দুধ খাওয়াচ্ছিল। তখনই বিষম লাগে শেরিনের। কয়েক মুহূর্তের মধ্যে শ্বাস নেওয়া বন্ধ করে দেয় শিশুটি। ওয়েসলি দেখে, শেরিনের দেহ স্থির হয়ে গিয়েছে, নাড়ির স্পন্দনও পাওয়া যাচ্ছে না।
তারপর ওয়েসলি বাড়ি থেকে একটু দূরে গিয়ে মাটি খুঁড়ে মেয়ের দেহ পুঁতে দেয়। সেই দেহই গতকাল উদ্ধার হয়েছিল। দাঁতের রেকর্ড মিলিয়ে পুলিশ নিশ্চিত হয়েছে যে, দেহটি ছোট্ট শেরিনেরই।
এর আগে ওয়েসলি পুলিশকে জানিয়েছিল, দুধ খেতে না-চাওয়ায় মেয়েকে ‘শিক্ষা দিতে’ তাকে বাড়ির বাইরে বার করে দিয়েছিল সে। তখন রাত তিনটে। তার পনেরো মিনিট পরে বাইরে গিয়ে আর শেরিনকে দেখতে পায়নি ওয়েসলি। তার স্ত্রী সিনি ম্যাথিউস পুলিশকে বলেছিলেন, তিনি তখন ঘুমোচ্ছিলেন, তাই কিছুই টের পাননি।
প্রথম বারেই ওয়েসলির বয়ানে বিস্তর অসঙ্গতি ধরা পড়ে। আজ সে যা বলেছে, তার ভিত্তিতে আরও কয়েক জনকে গ্রেফতার করা হতে পারে বলে জানিয়েছেন গোয়েন্দারা। শিশুটির দেহ সরিয়ে ফেলে তথ্য গোপন করায় ওয়েসলিকে কেউ সাহায্য করেছিল কি না, তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, যে দিন মেয়েটি নিখোঁজ হয়েছিল, সে দিনই ভোর ৪-৫টার মধ্যে ম্যাথিউসদের একটি এসইউভি গাড়ি বেরিয়ে যায়। কার গাড়ি, কোথায় গিয়েছিল— তার খোঁজে এখন আশপাশের প্রত্যেকটি বাড়ির সিসিটিভি ফুটেজ হাতে পেতে চাইছেন গোয়েন্দারা
ধোয়াঁশা বাড়ছে শেরিনের পালক মা সিনির ভূমিকাতেও। গোড়ায় তিনি পুলিশকে বলেছিলেন, ঘটনার সময়ে তিনি বাড়িতে ঘুমোচ্ছিলেন। স্বামী কী করেছেন, কিছুই জানতেন না। পুলিশ তা বিশ্বাসও করেছিল। কিন্তু এখন পুলিশের অভিযোগ, তদন্তে পুরোপুরি সহযোগিতা করছেন না সিনি। এত বড় একটা ঘটনা ঘটে গেল, তিনি কিছুই টের পেলেন না, তা কী করে সম্ভব!
বছর দু’য়েক আগে বিহারের একটি অনাথ আশ্রম থেকে শেরিনকে টেক্সাসে নিয়ে এসেছিল ম্যাথিউস দম্পতি। হাসিখুশি মেয়েটির কথা বলায় কিছু সমস্যা ছিল।
ম্যাথিউসদের নিজেদের একটি চার বছরের ছেলে রয়েছে। শেরিন-উধাও হয়ে যাওয়ার পর থেকেই যাকে স্থানীয় এক হোমের হেফাজতে রাখতে বলেছে পুলিশ। ছেলেকে নিজেদের কাছে রাখতে চেয়ে আদালতের কাছে আর্জি জানিয়েছিল ম্যাথিউস দম্পতি। কাল এ নিয়ে শুনানিতেও হাজির ছিল তারা। আদালত জানিয়েছে, পরবর্তী শুনানির দিন (১৩ নভেম্বর) পর্যন্ত আগের নির্দেশই বহাল থাকবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy