স্ত্রী-পুত্রের সঙ্গে নিহত তরুণ শিল্পপতি বান্টি শাহ। —ফাইল চিত্র।
ভুল বোঝাবুঝিতেই নাইরোবিতে পুলিশের গুলিতে মারা গিয়েছেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত কেনীয় শিল্পপতির পুত্র। ভারতীয় হাই কমিশনের রিপোর্ট হাতে পেয়ে রবিবার টুইটে এই খবর জানিয়েছেন বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ।
কেনিয়ার ববমিল ইন্ডাস্ট্রিজের মালিক বিপিন শাহের একমাত্র পুত্র বান্টি (৩২) নিজের বাড়িতে মুখ ঢাকা কয়েক জন বন্দুকবাজের গুলিতে ১৮ অক্টোবর নিহত হন। কেনিয়ার সব চেয়ে বড় ম্যাট্রেস নির্মাতা ববমিলের ভাবী মালিক ও তরুণ এক শিল্পপতির এই হত্যাকাণ্ডে কেনিয়া জুড়ে হইচই পড়ে যায়। আন্তর্জাতিক বণিক সংগঠনগুলিও সরব হন। ঘটনার এক সপ্তাহ পরে কেনিয়া পুলিশ স্বীকার করে, জঙ্গি-বিরোধী অভিযানের সময়ে ভুল বোঝাবুঝিতে পুলিশের গুলিতে বান্টি শাহ মারা গিয়েছেন। তবে শিল্পপতির পরিবার পুলিশের এই বয়ান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
আরও পড়ুন: গির্জায় গুলি টেক্সাসে, নিহত ২৭
ঘটনাটি নিয়ে হইচই হওয়ার পরে কেনিয়ায় হাই কমিশনারকে রিপোর্ট দিতে বলেছিলেন বিদেশমন্ত্রী। হাই কমিশনার সুচিত্রা দুরাই শনিবার যে রিপোর্ট দিয়েছেন, সুষমা নিজেই তাঁর টুইটারে রবিবার সেই রিপোর্টের বিষয়বস্তু প্রকাশ করেছেন। তাতে বলা হয়েছে, নাইরোবিতে বান্টি শাহের বাড়ি সংলগ্ন এলাকায় জঙ্গি-বিরোধী অভিযান চালাচ্ছিল কেনীয় পুলিশের বিশেষ বাহিনী। কিন্তু বাড়িতে ডাকাত পড়েছে ভেবে বান্টি তাঁর বন্দুক থেকে ফাঁকা আওয়াজ করেন। পুলিশ তখন তাঁকেই জঙ্গি ভেবে গুলি করে দেয়। কেনীয় পুলিশ এ ঘটনার জন্য দুঃখও প্রকাশ করেছে। সুষমা জানিয়েছেন, শাহ পরিবারকে সব রকম আইনি ও কূটনৈতিক সহযোগিতা দিতে নাইরোবির ভারতীয় হাই কমিশনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সে দিন গুলিবিদ্ধ হওয়ার পরে বান্টি শাহকে এমপি শাহ সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু ডাক্তাররা জানান, তার আগেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে। এর পরে নাইরোবির ‘হিন্দু শ্মশানভূমি’তে বান্টির শেষকৃত্যে মানুষের ঢল নামে।
শাহ পরিবারের তরফে জানানো হয়েছে, সে দিন এক দল সশস্ত্র লোক মুখঢাকা পোশাক পরে বান্টির বাড়িতে ঢুকে পড়ে। তারা পুলিশের লোক, না অন্য কেউ— তা বোঝার মতো পরিস্থিতি ছিল না। পুলিশও বিনা নোটিসে বাড়িতে ঢুকতে পারে না। এই পরিস্থিতিতে তাদের সতর্ক করার জন্যই বান্টি শূন্যে গুলি ছোড়েন। তারা কে, সেটা জানতেই তিনি বাইরে আসেন। কিন্তু অস্ত্রধারীরা তাঁকে গুলি করে দেন। এখন বান্টির বাড়ির উল্টো দিকে জঙ্গি-বিরোধী অভিযানের যে যুক্তি পুলিশ দিচ্ছে, তাকে ‘অনেক দেরিতে, খুবই নগণ্য’ বলে মন্তব্য করা হয়েছে শাহ পরিবারের তরফে।
শাহ পরিবারের এক সদস্যের কথায়, কেনিয়ায় সশস্ত্র ডাকাতির ঘটনা হামেশাই ঘটে। বেশ কিছু জঙ্গি সংগঠনও শিল্পপতি ও ব্যবসায়ীদের বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে মুক্তিপণ আদায় করে। বিনা নোটিসে বাড়িতে ঢোকা পুলিশকে জঙ্গি বা ডাকাত ভাবাটা তাই খুবই স্বাভাবিক। সে ক্ষেত্রে পুলিশেরই উচিত ছিল নিজেদের পরিচিতি জানানো। কিন্তু তা না-করে তারা বাড়ির মালিককেই গুলি করে দেয়। এ ঘটনাকে প্রশাসনের মস্ত গাফিলতি বলেই মনে করছেন তাঁরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy