আউং সান সু চি।— ফাইল চিত্র।
রোহিঙ্গা ইস্যুতে এই প্রথম মুখ খুললেও, সেনার বিরুদ্ধে কিছু বললেন না আউং সান সু চি। পরিসংখ্যান বলছে, গত ২৫ অগস্ট থেকে মায়ানমারের রাখাইন প্রদেশে রোহিঙ্গাদের উপর যে অত্যাচার শুরু হয়েছে, তাতে এখনও পর্যন্ত শতাধিক শরণ্যার্থীর মৃত্যু হয়েছে। বিতাড়িত হয়েছেন প্রায় ৪১০,০০০ রোহিঙ্গা। কিন্তু, মঙ্গলবার কার্যত মায়ানমার সেনাবাহিনীর পাশে দাঁড়ালেন সু চি।
আন্তর্জাতিক স্তর থেকে চাপ বাড়তে থাকায় মঙ্গলবার এই ইস্যুতে প্রথমবার মুখ খুললেন আউং সান সু চি। এক টিভি অনুষ্ঠানে এ সম্পর্কে সু চি জানান, রোহিঙ্গা মুসলিমদের বর্তমান অবস্থান খতিয়ে দেখতে তাঁর সরকার যে কোনও সময় প্রস্তুত। গত এক মাসে যাঁরা দেশ থেকে বিতাড়িত হয়েছেন, তাঁদের মধ্যে যোগ্যদের ফের পুর্নবাসন দিতেও প্রস্তুত মায়ানমার সরকার। রাখাইন প্রদেশে সাম্প্রতিক চলা অশান্তির মাঝে পড়ে যে সমস্ত মানুষ দেশ ছাড়া হয়েছেন, তাঁদের জন্যে তিনি মর্মাহত বলেও মন্তব্য করেন সু চি।
আরও পড়ুন: হাসিনা না সু চি, রোহিঙ্গা প্রশ্নে জোর দোটানায় দিল্লি
রোহিঙ্গা ইস্যুতে তিনি কেন চুপ রয়েছেন? এই প্রশ্ন তুলে ক্রমেই আন্তর্জাতিক চাপ বাড়ছিল তাঁর উপর। অস্বস্তি এড়াতে নিউ ইয়র্কে রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ সভার অধিবেশনে যোগ না দেওয়ার সিদ্ধান্তও ঘোষণা করেছিলেন শান্তির নোবেলজয়ী আউং সান সু চি। এ দিন যে কোনও রকমের মানবাধিকার লঙ্ঘনের কড়া সমালোচনা করে সু চির বক্তব্য, ‘‘এই সমস্যার জন্যে দায়ী যারা, তাদের প্রত্যেককে আইন শাস্তি দেবে।’’ ঠিক কত জন রোহিঙ্গা মুসলিম এখনও পর্যন্ত বাংলাদেশে যেতে বাধ্য হয়েছেন, সেই সংক্রান্ত সমস্ত তথ্য সংগ্রহের প্রক্রিয়া তাঁরা শীঘ্রই শুরু করা হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা: এখনই সেই সময়, সিদ্ধান্ত নিন, সু চিকে আর্জি নোবেলজয়ীর
পাশাপাশি, বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের পর্যবেক্ষণে যে তিনি ভীত নন, সে দাবিও করেছেন মায়ানমারের নেত্রী। তিনি আরও বলেন, ‘‘মুসলিমরা কেন চলে যাচ্ছেন সেটা খুঁজে বের করার জন্য তাঁদের সঙ্গে কথা বলতে আমি নিজে প্রস্তুত আছি।’’
এক সময় গণতন্ত্র ও মানবাধিকার আন্দোলনের নেত্রী হিসেবে পরিচিত সু চি প্রসঙ্গে এখন সে দেশের বাসিন্দাদের মত, মায়ানমার সেনার সঙ্গে খুব সহজে বিরোধিতায় যেতে পারবেন না তিনি। বরং এখন তিনি সেখানকার সেনার সঙ্গে সূক্ষ্মভাবে ক্ষমতা ভাগাভাগি করে চলার চেষ্টা করছেন। এ দিন যে ভাবে সেনা বেষ্টিত হয়ে বক্তব্য রাখলেন এবং সরাসরি সেনার বিরুদ্ধে কিছু বললেন না, তা জনগণের মতকেই কার্যত মান্যতা দিল বলে মনে করা হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy