Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

ভারত নিরাপত্তা দিচ্ছে গোটা বিশ্বকে, বললেন মার্কিন নৌসেনা প্রধান

ভারত মহাসাগর এবং দক্ষিণ চিন সাগরে ভারতের প্রভাব বাড়তে থাকায় সন্তোষ প্রকাশ করল আমেরিকা। যেভাবে বিভিন্ন দেশকে সামরিক সহায়তা দিতে শুরু করেছে ভারত, আন্তর্জাতিক জলসীমার নিরাপত্তা তাতে আরও সুনিশ্চিত হবে। মন্তব্য খোদ মার্কিন নৌসেনা প্রধান অ্যাডমিরাল জন রিচার্ডসনের।

সংবাদ সংস্থা
শেষ আপডেট: ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ ১৬:২৯
Share: Save:

ভারত মহাসাগর এবং দক্ষিণ চিন সাগরে ভারতের প্রভাব বাড়তে থাকায় সন্তোষ প্রকাশ করল আমেরিকা। যেভাবে বিভিন্ন দেশকে সামরিক সহায়তা দিতে শুরু করেছে ভারত, আন্তর্জাতিক জলসীমার নিরাপত্তা তাতে আরও সুনিশ্চিত হবে। মন্তব্য খোদ মার্কিন নৌসেনা প্রধান অ্যাডমিরাল জন রিচার্ডসনের। প্রশান্ত মহাসাগর থেকে ভারত মহাসাগর পর্যন্ত বিস্তীর্ণ জলভাগে ভারতের প্রভাব যত দ্রুত বাড়ছে, তাতে চিনের আধিপত্য কায়েমের চেষ্টা জোর ধাক্কা খেয়েছে। মনে করছে ওয়াশিংটন।

বুধবার দক্ষিণ চিন সাগরের তীরে অবস্থিত দেশ ব্রুনেইয়ের সঙ্গে ভারতের সামরিক সমঝোতা হওয়াই আমেরিকার খুশি হওয়ার মূল কারণ। মার্কিন নৌসেনার প্রধান অ্যাডমিরাল জন রিচার্ডসন বলেছেন, ‘‘খুব উৎসাহব্যঞ্জক ঘটনা হল এই যে ভারত সারা বিশ্বে তাদের ক্ষমতা বাড়াচ্ছে। বৃহৎ শক্তি হিসেবে ভারত এখন গোটা পৃথিবীকে নিরাপত্তা দিচ্ছে।’’ বুধবার ভারতের সঙ্গে সামরিক চুক্তি হয়েছে দক্ষিণ চিন সাগরের বুকে কৌশলগতভাবে খুব গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে থাকা দেশ ব্রুনেই-এর। ঠিক হয়েছে, ব্রুনেইকে রণতরী দেবে ভারত। ব্রুনেই-এর উপকূল সুরক্ষায় ভারতীয় নৌসেনা বড় ভূমিকা নেবে। প্রয়োজন হলে ভারত সরকার সেনাও মোতায়েন করতে পারে ব্রুনেইতে।

কিন্তু ভারত-ব্রুনেই সামরিক চুক্তি আমেরিকার জন্য এত গুরুত্বপূর্ণ কেন? আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশারদরা বলছেন, বেজিংকে যেভাবে চাপে ফেলে দিয়েছে নয়াদিল্লি, ওয়াশিংটন তাতে খুব স্বস্তি পেয়েছে। দক্ষিণ চিন সাগরে বেজিং কৃত্রিম দ্বীপ তৈরি করায় সেখানে মাঝেমধ্যেই যুদ্ধজাহাজ পাঠাচ্ছে মার্কিন নৌসেনা। কিন্তু তার প্রভাব সাময়িক। চিনা দ্বীপের কাছে স্থায়ী আস্তানা তৈরি করা না গেলে, চিনের কার্যকলাপে নজরদারি চালানো কঠিন। আমেরিকা সেই স্থায়ী ঘাঁটি বানাতে না পারলেও, ভারত তা করে ফেলল। বুধবার হওয়া চুক্তির পর বিতর্কিত দ্বীপের খুব কাছে অবস্থিত ব্রুনেইতে ভারতীয় নৌসেনার প্রবেশ মোটামুটি অবাধ হয়ে গেল। ফলে চাপে পড়ে গেল চিন।

আরও পড়ুন:

সিয়াচেনে ভয়াবহ তুষারধস! ১০ জওয়ানের এখনও হদিশ নেই

ভিয়েতনামে ভারতের নৌঘাঁটি তৈরি হয়েছে বেশ কয়েক বছর আগেই। ভারতের সঙ্গে সামরিক চুক্তি করেছে দক্ষিণ চিন সাগরের আরও এক দেশ ফিলিপিন্স। সে দেশের নৌসেনাকে যুদ্ধজাহাজ এবং অস্ত্রশস্ত্র সরবরাহের ব্যবস্থা এবং প্রশিক্ষণ দেওয়ার সুবাদে ফিলিপিন্সের বন্দর এবং উপকূলেও ভারতীয় নৌসেনার অবাধ যাতায়াত। দক্ষিণ চিন সাগরের বুকে ভারতের এমন একাধিক মজবুত ঘাঁটি তৈরি হতে থাকায় আগেই অশনিসঙ্কেত দেখতে শুরু করেছিল চিন। ভারতের সঙ্গে ভিয়েতনাম এবং ফিলিপিন্সের নৈকট্য নিয়ে কড়া মন্তব্যও করেছে বেজিং। কিন্তু ভারত সরকারের বর্তমান নীতিই হল চিনের হুমকিকে পাত্তা না দিয়ে ভারত মহাসাগর এবং দক্ষিণ চিন সাগরের বিভিন্ন অঞ্চলে নিজেদের ঘাঁটি ক্রমশ বাড়িয়ে চলা। সেই লক্ষ্যে বুধবার খুব বড় সাফল্য পেয়েছে ভারত।

ভারতের সঙ্গে মার্কিন বাহিনীর কৌশলগত সমঝোতা এখন বেশ মজবুত। ফলে মার্কিন নৌসেনার প্রধান অ্যাডমিরাল জন রিচার্ডসন মনে করছেন, দক্ষিণ চিন সাগর এবং ভারত মহাসাগরের বিভিন্ন এলাকায় নয়াদিল্লির এমন মজবুত ঘাঁটি তৈরি হওয়া আমেরিকার পক্ষে যথেষ্ট স্বস্তির কারণ। তাই রিচার্ডসন আরও বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা যৌথভাবে যে কৌশলগত সমঝোতার রূপরেখা স্থির করেছেন, সেই অনুযায়ী প্রশান্ত মহাসাগর থেকে ভারত মহাগাসর পর্যন্ত বিস্তৃত বিশাল আন্তর্জাতিক জলভাগের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে ভারতের সঙ্গে সহযোগিতা আরও বাড়াবে আমেরিকা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE