Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪
International News

১১৫ কোটির মার্কিন অনুদান হারাল পাকিস্তান

পাক ভূখণ্ডে দীর্ঘ দিন ধরে ঘাঁটি গেড়ে থাকা সন্ত্রাসবাদীদের বিরুদ্ধে ইসলামাবাদ বিশ্বাসযোগ্য ভাবে কোনও ব্যবস্থা নিতে না পারলে আমেরিকার দিক থেকে সব ‘আলো’ নিভে যাবে পাকিস্তানের। বন্ধ হয়ে যাবে ইসলামাবাদের ‘স্যাম চাচা’র গান শোনা, চিরতরে!

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: সংগৃহীত।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: সংগৃহীত।

সংবাদ সংস্থা
ওয়াশিংটন শেষ আপডেট: ০৫ জানুয়ারি ২০১৮ ১৬:১২
Share: Save:

সন্ত্রাসবাদকে রোখার প্রশ্নে আমেরিকার সুরে সুর মিলিয়ে না চললে ‘আঙ্কল স্যাম’-এর গান আর শুনতে পারবে না পাকিস্তান। ইসলামাবাদের নিরাপত্তা নিয়ে বিন্দুমাত্র ভাববে না ওয়াশিংটন।

নিছক কোনও হুমকি বা হুঁশিয়ারি নয়। নিরাপত্তা খাতে ইসলামাবাদকে যে ১১৫ কোটি মার্কিন ডলারেরও বেশি অনুদান দেওয়ার কথা ছিল, তার পুরোটাই এক ধাক্কায় আটকে দিল ট্রাম্প প্রশাসন

বুঝিয়ে দিল, পাক ভূখণ্ডে দীর্ঘ দিন ধরে ঘাঁটি গেড়ে থাকা সন্ত্রাসবাদীদের বিরুদ্ধে ইসলামাবাদ বিশ্বাসযোগ্য ভাবে কোনও ব্যবস্থা নিতে না পারলে আমেরিকার দিক থেকে সব ‘আলো’ নিভে যাবে পাকিস্তানের। বন্ধ হয়ে যাবে ইসলামাবাদের ‘স্যাম চাচা’র গান শোনা, চিরতরে!

পাকিস্তানকে নিরাপত্তা অনুদান পুরোপুরি বন্ধ রাখার কথা বৃহস্পতিবার মার্কিন বিদেশ মন্ত্রকের তরফে আনুষ্ঠানিক ভাবে জানানো হয়েছে। এও বলা হয়েছে, এই সিদ্ধান্ত অপরিবর্তনীয় নয়।সিদ্ধান্ত বদলাবে বা তা শিথিল হবে কি না, তা নির্ভর করছে সন্ত্রাসবাদ রোখার প্রশ্নে ইসলামাবাদ আমেরিকার সুরে সুর মিলিয়ে চলেছে কি না, তার ওপর।

বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র হিদার নয়্যার্ট বলেছেন, ‘‘আমরা (আমেরিকা) চাইছি, পাকিস্তানে যাতে একেবারেই ঘাঁটি গেড়ে থাকতে না পারে সন্ত্রাসবাদীরা। তাদের ঘাঁটিগুলি পুরোপুরি নির্মূল করতে হবে ইসলামাবাদকে। বন্ধ করতে হবে গোপনে জঙ্গিদের মদত দেওয়া, অর্থসাহায্য। আফগানিস্তানের তালিবান জঙ্গি ও সন্ত্রাসবাদীদের হাক্কানি নেটওয়ার্কের বিরুদ্ধে নিতে হবে অত্যন্ত কড়া ব্যবস্থা। আর সে ব্যাপারে পাকিস্তান যে আন্তরিক, তার খুঁটিনাটি প্রমাণ দিতে হবে। ইসলামাবাদ তা করে দেখাতে পারলে মার্কিন নিরাপত্তা অনুদান বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত বদলাতে বা শিথিল হতে সময় লাগবে না।’’

আরও পড়ুন- নিশানায় এ বার সন্ত্রাসের আঁতুড়ঘর​

আরও পড়ুন- আমেরিকাকে বিশ্বাস করে সবচেয়ে বড় ভুল করেছি: সুর চড়াচ্ছে পাকিস্তান​

আমেরিকা যে নিরাপত্তা অনুদান শুধুই পাকিস্তানকে দেয়, তা নয়। অন্যান্য দেশকেও দেয়।কিন্তু শুধু পাকিস্তানকেই নিরাপত্তা অনুদান বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন।

কোন কোন খাতে পাকিস্তানকে নিরাপত্তা অনুদান দেওয়ার কথা ছিল আমেরিকার?

মার্কিন বিদেশ মন্ত্রকের একটি সূত্র বলছে, ১১৫ কোটি মার্কিন ডলারেরও বেশি নিরাপত্তা অনুদানের প্যাকেজের দু’টি অংশ ছিল। একটি, কোয়ালিশন সাপোর্ট ফান্ড (সিএসএফ) খাতে ৯০ কোটি মার্কিন ডলার। দ্বিতীয় অংশটি, ২৫ কোটি ৫০ লক্ষ ডলার মূল্যের অস্ত্রশস্ত্র ও তার প্রযুক্তি সরবরাহ।

পাকিস্তানকে অস্ত্রশস্ত্র ও তার প্রযুক্তি সরবরাহ বাবদ মার্কিন অনুদান নতুন বছরে পা দিয়েই বন্ধ করেছিল ট্রাম্প প্রশাসন। এ বার কোয়ালিশন সাপোর্ট ফান্ড খাতেও বন্ধ হল মার্কিন অনুদান।

যদিও পাকিস্তান মনে করে কোয়ালিশন সাপোর্ট ফান্ডে আমেরিকা তাকে যে পরিমাণে অর্থ দেয়, তা আদৌ সাহায্য নয়। নিরাপত্তা রক্ষা ও অত্যন্ত জরুরি গোয়েন্দা-তথ্য পাওয়ার জন্য মার্কিন সেনাবাহিনীর সহায়তা নেওয়া ও তাদের পরিবহণের জন্য পাকিস্তান যে পরিমাণে অর্থ ব্যয় করে, কোয়ালিশন সাপোর্ট ফান্ড মারফত সেই খরচটাই ইসলামাবাদকে মিটিয়ে দেয় ওয়াশিংটন।

তবে পাকিস্তান যে ভাবে সেই অর্থ দাবি করে, সেই অর্থ পাওয়ার জন্য ইসলামাবাদ যে হিসাব দেখায়, তা নিয়ে এর আগেও বহু বার ওয়াশিংটনের তরফে তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করা হয়েছে।

পেন্টাগনের সন্দেহ, ওই কোয়ালিশন সাপোর্ট ফান্ডের অর্থ দিয়েই এত দিন তালিবান, হাক্কানি নেটওয়ার্ক ও পাক ভূখণ্ডে ঘাঁটি গেড়ে থাকা সন্ত্রাসবাদীদের মদত দিয়ে এসেছে এবং মদত দিয়ে চলেছে পাকিস্তান।

তবে পাকিস্তানকে মার্কিন নিরাপত্তা অনুদান বন্ধের সিদ্ধান্তের সঙ্গে মুম্বই হামলার মাস্টার মাইন্ড হাফিজ সইদের ঘটনার কোনও যোগসাজশ রয়েছে বলে মনে করেন না নয়্যার্ট।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE