Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

ট্রাম্পকে ‘বিশ্বাসঘাতক’ স্নোডেন ‘উপহার’ মস্কোর!

নেতা হিসেবে বারাক ওবামার চেয়েও রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে বেশি নম্বর দিয়েছিলেন তিনি। পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছিলেন জঙ্গি দমনে। একাধিক প্রচারসভায় রাশিয়ার সঙ্গে ব্যবসা বাড়ানোর প্রস্তাবও পেড়েছিলেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তাই তাঁর জয় ঘোষণা হতেই শুভেচ্ছা জানিয়ে ফোন আসে রাশিয়ার।

সংবাদ সংস্থা
ওয়াশিংটন শেষ আপডেট: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০২:২৭
Share: Save:

নেতা হিসেবে বারাক ওবামার চেয়েও রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে বেশি নম্বর দিয়েছিলেন তিনি। পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছিলেন জঙ্গি দমনে। একাধিক প্রচারসভায় রাশিয়ার সঙ্গে ব্যবসা বাড়ানোর প্রস্তাবও পেড়েছিলেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তাই তাঁর জয় ঘোষণা হতেই শুভেচ্ছা জানিয়ে ফোন আসে রাশিয়ার। আর এ বার আসছে ‘উপহার’! ওবামা প্রশাসনের দাগী ‘বিশ্বাসঘাতক’ এডওয়ার্ড স্নোডেনকে ডোনাল্ড ট্রাম্পের হাতে তুলে দিতে চলেছে রাশিয়া। মস্কো এ নিয়ে মুখ না খুললেও মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ এবং এফবিআই সূত্রে এমনটাই আভাস মিলেছে। স্নোডেন নিজেও আজ টুইটারে লেখেন, ‘‘অবশেষে প্রমাণিত হল— আমি কোনও দিন রুশ গোয়েন্দা বিভাগের হয়ে কাজ করিনি। আমি নির্দোষ।’’

আমেরিকার জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থার (এনএসএ) হয়ে কাজ করতেন স্নোডেন। ২০১৩-য় আবার এই সংস্থারই নানাবিধ গোপন তথ্য ফাঁস করে দিয়ে শিরোনামে আসেন। ব্রিটেন ও আমেরিকার দু’টি সংবাদপত্রের মাধ্যমে স্নোডেন জানিয়ে দেন, কী ভাবে প্রত্যেকের ব্যক্তিগত ফোনালাপ গোপনে রেকর্ড করে চলেছে এনএসএ। এমনকী যাঁদের করের টাকায় সরকার চলে, তাঁদেরও যাবতীয় গতিবিধির উপর নজরদারি চালাচ্ছে মার্কিন প্রশাসন। আর তার জেরেই হোয়াইট হাউসের চোখে স্নোডেন রাতারাতি হয়ে ওঠেন ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’। তাঁর বিরুদ্ধে জারি হয় আন্তর্জাতিক হুলিয়াও।

আর অভিযোগ, তখন থেকেই স্নোডেনকে ‘আশ্রয়’ দিয়ে আসছে রাশিয়া। আমেরিকা একাধিক বার তাঁকে ফেরানোর কথা বললেও পাত্তা দেয়নি মস্কো। বরং শোনা গিয়েছিল, তাঁকে থাকতে দেওয়ার মেয়াদ সম্প্রতি আরও তিন বছর বাড়িয়েছে রাশিয়া। স্নোডেন কি তা হলে রাশিয়ার গোয়েন্দা বিভাগের হয়েই কাজ করতেন— প্রচারে বেরিয়ে প্রশ্ন তোলেন ট্রাম্পও। সূত্রের খবর, বিতর্ক সরিয়ে রেখে এ বার সেই স্নোডেনকেই আমেরিকার হাতে তুলে দিতে চাইছে রাশিয়া।

স্নোডেনের মার্কিন আইনজীবী বেন উইনজার অবশ্য এ নিয়ে নিশ্চিত হতে পারছেন না। তাঁর দাবি, রাশিয়া এখনও তাঁকে কিছুই জানায়নি। ধোঁয়াশা কাটছে না স্নোডেনের রুশ আইনজীবী আনাতোলি কুচেরেনা-রও। তাঁর কথায়, ‘‘এ সবই জল্পনা। আদতে, স্নোডেনকে আমেরিকার হাতে তুলে দেওয়ার মতো আইনি ভিত্তিই নেই রাশিয়ার। আমার মক্কেল তো এখানে সম্পূর্ণ আইনি ভাবে রয়েছেন!’’

এমন একটা জল্পনা কিংবা সম্ভাবনার কথা কিন্তু গত বছর ডিসেম্বরেও বেশ সাড়া ফেলেছিল। কিন্তু কেন তাঁকে ছাড়তে চাইছে রাশিয়া? এক টিভি-সাক্ষাৎকারে স্নোডেন বলেছিলেন, ‘‘এটাই তো স্বাভাবিক। আমি রাশিয়ার কেউ নই। ওদের কাছে আমি বরং একটা দায়-এর মতো। বরাবর আমেরিকার হয়েই কাজ করে এসেছি।’’ তা ছাড়া ক্রেমলিনের মানবাধিকার লঙ্ঘন নিয়েও সম্প্রতি মুখ খুলেছিলেন স্নোডেন। তাঁকে ফেরত পাঠাতে চাওয়ার পিছনে এটাও একটা কারণ হতে পারে বলে সে বার মন্তব্য করেছিলেন তিনি।

মার্কিন কূটনৈতিক মহলের একাংশ যদিও এর মধ্যে অন্য সমীকরণ দেখছেন। তাঁদের মতে, সম্প্রতি ট্রাম্প-পুতিন দু’জনেই যে ভাবে পরস্পরের কাছে আসার ইঙ্গিত দিয়েছেন, এ তারই অংশ। ওবামা শিবিরের একাংশ তো এখনও বলে চলেছে— ডেমোক্র্যাটদের সার্ভারে ব্যাপক হ্যাকিং করে ওই পুতিনই হোয়াইট হাউসে এনেছেন ট্রাম্পকে।

স্নোডেনকে ফেরানো নিয়ে নির্বাচনী প্রচারে একাধিক বার মুখ খুলেছিলেন ট্রাম্প। আজ যদিও তাঁর প্রতিক্রিয়া মেলেনি।
কোর্টে আটকে গেলেও তিনি ব্যস্ত অভিবাসী ঠেকাতেই। আগামী সপ্তাহে এ নিয়ে ফের একটি প্রশাসনিক নি‌র্দেশে সই করতে চলেছেন তিনি। শুক্রবার ফ্লোরিডা যাওয়ার পথে সাংবাদিকদের এমন ইঙ্গিত দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট নিজেই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Edward Snowden Vladimir Putin Donald Trump
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE