প্রশ্ন: কোটলায় যে পিচে খেলা হচ্ছে তাতে তো নিশ্চয়ই দক্ষিণ আফ্রিকার অভিযোগ করার মতো কিছু নেই?
ওয়াড়েকর: এখানেও বল প্রথম থেকে ঘুরছে। তবে ভারতীয় পিচে ওইটুকু তো হবেই।
প্র: আপনার বন্ধু বিষেণ বেদী বলেছেন ভারতের এই সিরিজ জেতাটা বডিলাইন সিরিজ ইংল্যান্ডের জেতার মতো অনৈতিক। কোহলিকে তুলনা করেছেন ডগলাস জার্ডিনের সঙ্গে। বন্ধুর সঙ্গে একমত?
ওয়াড়েকর: কে বন্ধু, বিষেণ? হা হা।
প্র: কেন বিষেণ আপনার বন্ধু নন?
ওয়াড়েকর: ভীষণ বন্ধু (হাসি)... ব্যাটাচ্ছেলে কী যে সব বলে না— বডিলাইন (হা হা)। তবে ওর কথার মূল স্পিরিটের সঙ্গে কিন্তু আমি একমত। উইকেটটা একটু বেশিই ঘূর্ণি হয়েছে।
প্র: আপনি বলছেন? এই স্ট্র্যাটেজির বকলমে জনক তো আপনিই। তিরানব্বইয়ের ইংল্যান্ড সিরিজে নিয়মিত আপনার ছবি বেরোত মাঠকর্মীর সঙ্গে একান্তে কথা বলছেন।
ওয়াড়েকর: আরে সে তো আমি ওদের কুশল জিজ্ঞেস করতাম। পরিবারের সবাই কেমন আছে সেটা জানতে চাইতাম (প্রাণখোলা হাসি)।
প্র: রবি শাস্ত্রীও তো তাই করেছেন। সুধীর নায়েকের বাড়ির খবরাখবর নিয়েছেন।
ওয়াড়েকর: তফাত হল আমার আমলে কিউরেটরের বাড়ির খবর নেওয়ার পরেও ব্যাটসম্যানরা রান-টান করত। যে সিরিজের কথা আপনি তুলছেন তাতে আজহার ইডেনে কী অসামান্য একটা সেঞ্চুরি করেছিল। সচিন রান করেছিল। গুচ করেছিল। এমনকী কাম্বলীও। এই সিরিজে রাহানের হান্ড্রেডের আগে রান হল কোথায়? কোহলি এত পপুলার। কত ফ্যান আছে যারা ওর ব্যাটিং দেখতে চায়। সেই সুযোগই তো হল না।
প্র: মানে আপনি বন্ধু বিষেণের পক্ষে।
ওয়াড়েকর: এক দিক থেকে ইয়েস। আমার মনে হয় মোহালি আর নাগপুরের পিচের মতো ঘূর্ণি সারফেস আমার আমলে বানানো হয়নি। আমরা তিন দিনে সেখানে জিততাম না। বরঞ্চ তিন দিন থেকে বল ঘুরত।
প্র: সিরিজ জেতানোর জন্য তা হলে আপনি ভারতীয় স্পিনারদের প্রশংসা করতে রাজি নন?
ওয়াড়েকর: না এতটা বলছি না। অশ্বিনকে তো আমার দুর্ধর্ষ লেগেছে। ওকে সাউথ আফ্রিকা বুঝতেই পারেনি। কোন বলটা ভেতরে যাবে। কোনটা বাইরে যাবে। ছেলেটা সত্যি পরের পর টেস্ট জেতাচ্ছে।
প্র: আপনার দেখা ভারতীয় অফ স্পিনারদের মধ্যে অশ্বিনকে কোথায় রাখবেন?
ওয়াড়েকর: বেঙ্কটের আগে। আমার মনে হয় এ ভাবে চললে ভাজ্জিকেও ও ছাড়িয়ে যাবে। নাহ, এই মুহূর্তে ওর সামনে আমি একমাত্র প্রসন্নকেই দেখছি যে কি না বিদেশেও ম্যাচ জেতাতে পারত। অশ্বিনকে এ বার বিদেশের পিচে নিজেকে প্রমাণ করতে হবে।
প্র: আপনি বলছেন অশ্বিন দারুণ। আবার বলছেন পিচ বেশি ঘূর্ণি দেওয়া হয়েছে। দুটো কি কন্ট্র্যাডিকটরি নয়?
ওয়াড়েকর: নয়। আমার কথা হল, রবিরা একটু বাড়াবাড়ি করেছে। উইকেটের স্ট্র্যাটেজিটা এত খুলে আম দেখানো উচিত ছিল না। এই যা বিদেশি টিমের ছিরি, উইকেটের ওপর অল্প কাজ করলেই চলত। তাতে বিতর্কও হত না। আবার সিরিজটাও সেই পকেটে থাকত।
প্র: কিন্তু শুক্রবারের কোটলা কি সাক্ষাৎ প্রমাণ নয় যে, পিচ নিয়ে এত বাজার সরগরম করাটা বাড়াবাড়ি ছিল?
ওয়াড়েকর: আমি তো বলব বাড়াবাড়ি হয়েছে এই টিমকে বিশ্ব র্যাঙ্কিংয়ে এক নম্বর বলা। এরা স্পিন খেলার পক্ষে বুরবক বললেও কিছু বলা হয় না। আমার কথা হল, এটা কী ধরনের র্যাঙ্কিং যে উপমহাদেশে সফল হল কি না তার আগেই তুমি দিয়ে দিচ্ছ? দুটো বিভিন্ন সারফেসে খেলিয়ে পয়েন্ট ক্যালকুলেট করো। তার পর না হয় বিশ্বসেরা বলবে।
প্র: না করা গেলে?
ওয়াড়েকর: না করা গেলে দুটো আলাদা র্যাঙ্কিং করো। একটা উপমহাদেশের এক নম্বর। একটা তার বাইরে সিমিং উইকেটের এক নম্বর।
গাওস্করের তোপ
সংবাদ সংস্থা • নয়াদিল্লি
চলতি ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজে পিচ নিয়ে যতই সমালোচনা হোক, এক মত নন সুনীল গাওস্কর। কিংবদন্তি ওপেনারের মতে, দোষ দক্ষিণ আফ্রিকান ব্যাটসম্যানদেরই। নিজেদের প্রয়োগ করা, টেকনিকে এবং মানসিকতাতে সমস্যা রয়েছে বলে মনে করেন তিনি।
ঘূর্ণি উইকেটে মোহালিতে প্রথম ও নাগপুরে তৃতীয় টেস্টে তিন দিনের মধ্যেই ভারত জিতেছে। যার পর পিচ নিয়ে প্রবল সমালোচনা হয়। বলা হচ্ছে, তুলনায় কোটলার পিচ অনেক ভাল। তবুও ভারতের ৩৩৪ রানের জবাবে শুক্রবার দক্ষিণ আফ্রিকা ১২১ রানে অলআউট হওয়ার পর গাওস্কর বলছেন, ‘‘নাগপুরেও পিচেও কিছু ছিল না। একটু বল ঘুরছিল এই যা। যদি কেউ পিচে পড়ে বল সোজা ব্যাটে আসার আশায় থাকে তা হলে সত্যি বলতে তাঁকে রাস্তায় খেলতে হবে। এক মাত্র রাস্তাতেই বল সোজা ব্যাটে আসতে পারে।’’ সঙ্গে তিনি যোগ করেন, ‘‘ভিন্ন দেশে ভিন্ন কন্ডিশন থাকে। দক্ষিণ আফ্রিকার নিজেদের প্রয়োগ, টেকনিক আর টেম্পারামেন্টে অভাব রয়েছে।’’
ছবি: প্রেম সিংহ
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy