ডবল সেঞ্চুরি করার পর বিরাট কোহালি। ছবি: এএফপি।
ভারতের জয়ের ধারায় এখনও বাঁধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি কোনও দলই। সামনে এ বার অস্ট্রেলিয়া। তাঁর আগে টানা ১৯টি টেস্ট অপরাজিত থাকার রেকর্ড করে ফেলল কোহালি অ্যান্ড কোং। আর একটি অপরাজিত থাকলেই ছুঁয়ে ফেলবে ২০১২ সালে ঘরের মাঠে ২০টি ম্যাচে অপরাজিত রেকর্ড। ঘরের মাটিতে বাংলাদেশকে হারানোর সঙ্গেই নিউজিল্যান্ড, ইংল্যান্ডের পর তৃতীয় টিমকেও হারিয়ে ১৯তম জয় তুলে নিল ভারত। আর যাঁর অধিনায়কত্বে এই কৃতিত্ব সেই বিরাট কোহালি এই ম্যাচে ডবল সেঞ্চুরি করে তুলে নিলেন ম্যাচের সেরার ট্রফি। তিনিই সেরা। সবার থেকে আলাদা চিন্তা-ভাবনা নিয়েই দলকে পরিচালনা করেন তিনি। না হলে যখন অধিনায়কত্বের চাপে সবার স্বাভাবিক খেলা হারিয়ে যায় তখন অধিনায়কত্ব কাঁধে নিয়েই সেরা ফর্মে বিরাট। নিজেই সেই কথা জানিয়েছিলেন। অধিনায়কত্বের দায়িত্ব যে তাঁর ব্যাটিংকে সমৃদ্ধ করেছে সেটা স্বীকার করে নিয়েছেন।
আরও খবর: বাংলাদেশকে হারিয়েই অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে টেস্ট খেলতে নামছে ভারত
সোমবার হায়দরাবাদে বাংলাদেশকে একম্যাচের টেস্ট সিরিজে হারিয়ে বিরাট কোহালি বলেন, ‘‘ব্যাট করার জন্য খুব ভাল উইকেট এটি। টস জেতাটাও আমাদের কাজে লেগেছে। যে কারণে আমরা অত বড় রানের লক্ষ্যমাত্রা রাখতে পেরেছিলাম।’’ শুধু নিজেদের ব্যাটিং নয় বাংলাদেশের ব্যাটিংয়েরও প্রশংসা শোনা গেল বিরাটের গলায়। তিনি বলেন, ‘‘প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশ খুব ভাল ব্যাট করেছে। কিন্তু আমরা পরিকল্পনা মাফিক খেলতে পেরেছি। যেটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। বোলাররাও তাঁদের ছন্দে রয়েছে। আর সব মিলিয়ে খুব ভাল গেম ছিল এটা আমাদের জন্য। সামনে বড় সিরিজ রয়েছে। যখন ব্যাটসম্যানরা পারে না তখন বোলাররা দলের হাল ধরে। এটাই আমাদের দলের সাফল্যের মূল জায়গা।’’
ইশান্ত শর্মা ও রবিচন্দ্রন অশ্বিন।
ভাল ব্যাট করেও হার মানতে কষ্ট হচ্ছে বাংলাদেশ অধিনায়ক মুশফিকুর রহিমের। সঠিক সময়ে ভারতকে আটকাতে না পারার আফসোস তো রয়েছেই। সঙ্গে দুই ইনিংসে দুটো সেঞ্চুরি আসা সত্ত্বেও জয়ের ধারে কাছেল পৌঁছতে না পারার হতাশা রয়েছে। বাংলাদেশ অধিনায়ক বলেন, ‘‘বোলিংয়ে আমরা অনেক সুযোগ তৈরি করেছিলাম। ভারতকে যদি আমরা ৫৫০-৬০০র মধ্যে আটকে দিতে পারতাম তা হলে আমাদের সুযোগ ছিল। ভারতীয় বোলিংয়ের সামনে ব্যাট করাটা সহজ ছিল না। স্পিনাররা তো আছেই সঙ্গে দলের ফাস্ট বোলাররাও ওদের খুব ভাল। কিন্তু এই সিরিজ থেকে হেরে গেলেও অনেক কিছু শিখেছি। যেটা আমাদের ভাল খেলতে সাহায্য করবে। ছেলেদের খেলায় আমি খুশি। কিন্তু বুঝতে পেরেছি আরও উন্নতি করতে হবে।’’ বিরাট কোহালি মনে করেন ইশান্ত শর্মা দারুণ বল করেছেন। ‘‘ইশান্ত দারুণ বল করেছে। কোনও দলে যদি বিশ্বমানের স্পিনাররা থাকে তা হলে তুমি তোমার পেসারদের বলতে পার আক্রমণাত্মক বল করতে। আমার কাছে সব খেলাই নতুন। আক্রমণাত্মক ক্রিকেটটাই খেলার চেষ্টা করি। যদি সেটা মাত্রা ছাড়িয়ে যায় না। আমি যেখানেই ব্যাট করি না কেন সেখানেই স্বচ্ছন্দ বোধ করি।’’
এর মধ্যে অবশ্য মজা করে গেলেন চেতেশ্বর পূজারা। আজ তাঁর বিবাহ বার্ষিকী তাই দ্রুত খেলা শেষ করে ফেলায় খুশি তিনি। বলেন, ‘‘আজ আমার বিবাহ বার্ষিকী। সকলে মিলে খেলাটা আগে শেষ করে দিয়েছে তাতে আমি খুব খুশি। আমার প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি হয়েছিল এই মাঠেই। এর পর অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ডবল সেঞ্চুরি। প্রথম ইনিংসে অল্পের জন্য সেঞ্চুরি মিস করলাম। দ্বিতীয় ইনিংসেও ভাল ব্যাট করলাম। কিন্তু কাছে গিয়ে সেঞ্চুরি মিস করলে রাতে ঘুমনো যায় না। এখন পর পর আমি ৭০-৮০র ঘরে আউট হচ্ছি। কিন্তু আমি ফর্মে আছি।’’ মেনে নিলেন দলীপ ট্রফি থেকেই তিনি ফর্মে ফিরেছেন। বিরাট কোহালির মুখে অবশ্য ইংল্যান্ড সিরিজের কথা শোনা গেল। তিনি বলেন, ‘‘আমার মনে হয় ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ৪-০ টেস্ট সিরিজ জয়টা বড় ব্যাপার ছিল দলের জন্য। আমরা মানসিকভাবে ওই সিরিজের মধ্যে ঢুকে গিয়েছিলাম। যেটা অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধেও আমরা বয়ে নিয়ে যাব।’’
সাংবাদিক সম্মেলনে বাংলাদেশ অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম।
হায়দরাবাদে এই পাঁচ দিন যে সমর্থন পেয়েছে ভারত তারও প্রশংসা শোনা গেল বিরাটের মুখে। ভারতে খেলার এই অভিজ্ঞতা নিয়েই শ্রীলঙ্কায় বাজিমাত করার প্রস্তুতি নিতে চাইছে বাংলাদেশ দল। মুশফিকুর বলেন, ‘‘সামনে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে খেলা রয়েছে আমাদের। আশা করছি ওখানে আমরা এই অভিজ্ঞতা কাজে লাগাতে পারব। এখানে আমরা দুই ইনিংসেই ১০০ ওভারের বেশি ব্যাট করেছি। মেহেদি ব্যাটে, বলে দারুণ করেছে। তাইজুল ভাল বল করেছে। কিন্তু আমাদের ফিল্ডিং সমস্যায় ফেলেছে দলকে। যদি আমরা পাঁচদিন পর্যন্ত লড়াই চালাতে পারি তা হলে আরও বড় চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে পারব।’’ তবে যাই হোক না কেন ভারত থেকে ভাল স্মৃতি নিয়েই ফিরছে বাংলাদেশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy