Advertisement
E-Paper

জোড়া গোল ঈশ্বরকে উৎসর্গ করলেন ডং

পাশে বসে থাকা তাঁর কোচের দিকে আড়চোখে তাকালেন শনিবারের বড় ম্যাচের মহানায়ক। তার পর শুধু একটা শব্দে জবাব এল— ‘‘ঈশ্বরকে।’’

রতন চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ০৩ এপ্রিল ২০১৬ ০৪:০৭
সৌজন্য। কাতসুমির বুকে ডং। শনিবার ডার্বিতে। -উৎপল সরকার

সৌজন্য। কাতসুমির বুকে ডং। শনিবার ডার্বিতে। -উৎপল সরকার

কাকে উৎসর্গ করছেন ডার্বিতে ফের জোড়া গোল?

পাশে বসে থাকা তাঁর কোচের দিকে আড়চোখে তাকালেন শনিবারের বড় ম্যাচের মহানায়ক। তার পর শুধু একটা শব্দে জবাব এল— ‘‘ঈশ্বরকে।’’

ভাঙা ভাঙা ইংরেজি। তা দিয়েই লাল-হলুদের কোরিয়ান মিডিও আপ্রাণ চেষ্টা করছিলেন মিডিয়ার একের পর এক প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার। পেনাল্টিটা যখন মারতে যাচ্ছিলেন ভয় হচ্ছিল না? কতটা চাপ ছিল? ডং বললেন, ‘‘র‌্যান্টি, মেন্ডিরা বলল কিকটা মারতে। তখন শুধু ভাবছিলাম, পেনাল্টি থেকে গোল করতেই হবে। কোনও চাপ ছিল না।’’

একটু থামলেন ভারতীয় ক্লাব ফুটবলের ফ্রি-কিক মাস্টার। পাশ দিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছিলেন কাতসুমি-গ্লেনরা। রেফারিং নিয়ে একগাদা ক্ষোভ উগরে দিতে দিতে। আর তখনই ডংয়ের উচ্ছ্বসিত গলা থেকে বেরোল, ‘‘আমি ফ্রি-কিকটা ভাল মারি। কিন্তু ফিল্ড গোলও করতে পারি। সেটা প্রমাণ হয়ে গিয়েছে আজ।’’

এ মরসুমে কলকাতা ডার্বি মানেই কি ডংয়ের জোড়া গোল। আপনি তো আসল সফল বড় ম্যাচেই? ঠোটের কোণে হাসি ছড়িয়ে বললেন, ‘‘অন্য অনেক ম্যাচেও কিন্তু আমার গোল আছে। তবে আজ ফর্ম ফিরে পাওয়ায় আমি খুশি।’’ উত্তর দেওয়ার সময় পাশে বসে থাকা কোচ বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্যের সঙ্গে মাঝেমধ্যে আলোচনা করছিলেন বাধ্য শিষ্যের মতো। কে বলবে এ ছেলেই কিছু দিন আগে কোচের বিরুদ্ধে ক্ষোভে রিজার্ভ বেঞ্চে এসে জার্সি ছুড়ে ফেলেছিলেন। বসিয়ে দেওয়ায় ড্রেসিংরুমে ফিরে লাথি মেরেছিলেন চেয়ারে। সাফল্য যে কত কিছুই বদলে দেয়। কত দূরকে নিকট করে দেয় যে!

বহু দিন পর ডংকে একটু ছোঁয়ার জন্য অসংখ্য হাত ফের হাজির। ফিরে এসেছে কর্তাদের আদরও। আর তিনি— ডং পুরো ব্যাপারটা তারিয়ে তারিয়ে উপভোগ করছেন বলেই মনে হল। যে পেনাল্টি থেকে গোল করলেন সেটা কি আদৌ পেনাল্টি ছিল? এ বার ডংয়ের হয়ে ব্যাট ধরলেন তাঁর কোচ। ‘‘রেফারির সিদ্ধান্ত সঠিক। ওটা পেনাল্টিই ছিল। আমাদের ছেলেরা এ বার পাওয়া সুযোগটা হাতছাড়া করেনি। এ বার আমরা ম্যাচ-বাই-ম্যাচ এগোব। আই লিগ জিততে গেলে বাকি সব ক’টা ম্যাচ আমাদের জিততেই হবে,’’ বললেন ইস্টবেঙ্গল কোচ বিশ্বজিৎ।

পরপর হার। তার পরে জোড়া জয়ে ফের খেতাবের লড়াইতে ঢুকে পড়া। অন্ধকার সরিয়ে হঠাৎ-ই পড়শি তাঁবুতে বসন্ত হাজির। কিন্তু তাতেও ভেঙে পড়তে রাজি নন বাগান কোচ সঞ্জয় সেন। দমছেনও না। উল্টে টিম হোটেলে ফিরে তীব্র ক্ষোভে ফেটে পড়েন তিনি। রেফারির নাম না করে সঞ্জয়ের মন্তব্য, ‘‘আমাদের জোর করে হারিয়ে দেওয়া হয়েছে। ওটা পেনাল্টি? বল তো লেগেছিল র‌্যান্টিরই হাতে। রেফারির সিদ্ধান্ত গেল লুসিয়ানোর বিরুদ্ধে।’’

বেঙ্গালুরু এ দিন জিতে যাওয়ার পর বাগানের সঙ্গে পয়েন্ট সমান করে ফেলেছে। একটা ম্যাচ কম খেলেই। তা সত্ত্বেও সঞ্জয় বলে দিলেন, ‘‘আমরা ট্রফির দৌড় থেকে ছিটকে যাইনি। খেতাব আমরা জিতবই। দেখে নেবেন শিলিগুড়িতেই বেঙ্গালুরুকে (২৩ এপ্রিল) হারিয়ে আমরা লিগ জিতব। আজ আমাদের জোর করে হারিয়ে দেওয়ার জবাব দেব।’’

কিন্তু জেজে কেন পেনাল্টি মারতে গেলেন? বাগান কোচের মন্তব্য, ‘‘আমি তো লুসিয়ানো আর কাতসুমিকে পেনাল্টি মারার জন্য তৈরি করেছি। ওরা হোটেলে ফিরে বলল, জেজে-নিজেই পেনাল্টি মারতে চেয়েছিল। তাই আর ওরা কিছু বলেনি তখন।’’ এ দিন ইস্টবেঙ্গলের পক্ষে পেনাল্টি দিতে মাঠে রেফারি সন্তোষ কুমারকে ঘিরে ধরেছিলেন কর্নেল গ্লেন-লুসিয়ানোরা। হাফটাইমেও তাঁদের ক্ষোভ ছিল অব্যাহত। এর সঙ্গে আবার টিম হোটেলে ফিরে অত্যন্ত স্পর্শকাতর একটা টুইট করেছেন গ্লেন। যাতে লিখেছেন, ‘ইস্টবেঙ্গলের অর্ণব মণ্ডল আমাকে বর্ণবিদ্বেষমূলক কথা বলেছে। ফেডারেশন যেমন আমাদের কোচের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে, চাইব সে রকমই ওর বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিক।’

ইস্টবেঙ্গল রবিবারই ফিরে যাচ্ছে কলকাতায়। মোহনবাগান এখান থেকেই সোজা যাচ্ছে শিলং। দু’দলেরই পরের ম্যাচ একই দিনে। মঙ্গলবার। দারুণ জমে ওঠা লিগে খেতাব জয়ের শেষ ল্যাপে অবশ্য এক্স ফ্যাক্টর হয়ে উঠছে বেঙ্গালুরু। তবে বহু দিন পর দুই প্রধানের সামনেই কিন্তু ভারতসেরা হওয়ার হাতছানি!

derby east bengal mohun began
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy