যে পিচে চতুর্থ দিনেও আগুন ছোটালেন শামিরা। ছবি: শঙ্কর নাগ দাস
ক্রিকেট বিশ্বের শিখরে এখন শুধুই ভারত!
ইডেনে জেতায় টেস্ট ক্রিকেটে এক নম্বরের সিংহাসনটা পাকিস্তানের সঙ্গে আর ভাগাভাগি করে নিতে হচ্ছে না বিরাট কোহালিদের। আইসিসি-র টেস্ট র্যাঙ্কিংয়ে একক এক নম্বর হওয়ার সঙ্গে সিরিজও ২-০ মুঠোয় পুরে ফেলেছে ভারত।
ইডেনে বিরাটের ছেলেরা অসাধারণ ক্রিকেট খেলল। সব বিভাগে দাপট দেখিয়ে যোগ্য দল হিসাবেই জিতেছে ওরা। তা-ও আবার এমন একটা সারফেসে যেটাকে কোনও ভাবেই মার্কামারা উপমহাদেশের উইকেট বলা চলে না।
উপমহাদেশের উইকেট বললেই লোকে বোঝে এমন সারফেস যেখানে বল ম্যাচের প্রায় শুরু থেকেই ঘুরবে। ইডেনে কিন্তু তেমন হয়নি। বরং এটা ছিল একেবারে মরসুমের আনকোরা পিচ। টানা বর্ষার সঙ্গে লড়াই চালিয়ে যেটা সময়ে ম্যাচ রেডি করে তুলতে কিউরেটর এবং ওঁর টিমকে প্রচণ্ড খাটতে হয়। তার পরেও ওঁরা এমন পিচ তৈরিতে সফল যা ব্যাটসম্যান এবং বোলার দু’পক্ষকেই পরীক্ষার মুখে ফেলল। টেস্টের চতুর্থ দিনেও পিচের বাউন্স পেসারদের মুখে হাসি ফুটিয়েছে। অন্য দিকে স্পিনাররাও অভিযোগ করতে পারেনি যে, পিচ থেকে কোনও সাহায্য পাচ্ছে না। গত দু’মাসের জঘন্য আবহাওয়া আর টানা বৃষ্টি সত্ত্বেও এমন দারুণ একটা পিচ উপহার দেওয়ার জন্য ইডেনের কিউরেটরের পিঠ চাপড়ে দিতেই হচ্ছে।
কিছু কিছু ক্ষেত্রে বল পড়ে নিচু হয়েছে ঠিকই। কিন্তু এই পিচে এক বার সেট হয়ে যাওয়ার পর ব্যাটসম্যানরা স্বচ্ছন্দে শট খেলেছে। রানও পেয়েছে। আসলে এই পিচটা ক্রিকেটারদের দক্ষতার পাশাপাশি মানসিকতাকেও পরীক্ষার মুখে ফেলল। যেখানে দিনের শেষে যে টিমটার দক্ষতা বেশি ছিল, তারাই বাজিমাত করে দেখাল।
ভারতীয় টিম আরও বেশি খুশি হবে এটা দেখে যে, শুধু স্পিনাররা নয়, গোটা বোলিং আক্রমণই টিমকে জেতানোর বড় ভূমিকা নিয়েছে। আমি মনে করি এই ধরনের উইকেটে খেললে এই টিমটা আরও বেশি শক্তিশালী হয়ে উঠবে। বিদেশের মাঠে অ্যাওয়ে সিরিজে নামার সময়ও আমাদের ছেলেরা অনেক বেশি তৈরি থাকবে।
ভারতীয় টিমের কাছে ইডেন টেস্টটা কিন্তু শুধু সিরিজ জেতার ম্যাচ নয়। এটা এমন একটা ম্যাচ যেটা দলগত চেষ্টায় জিতেছে ওরা। যে জয়ে টিমের প্রত্যেকের ভূমিকা আছে। দরকারের সময় ঠিক কেউ না কেউ জ্বলে উঠেছে। প্রথম ইনিংসে যেমন শুরুতেই পর পর উইকেট হারিয়ে চাপে পড়া ব্যাটিং বিভাগকে সামলে দেয় পূজারা, রাহানে, ঋদ্ধিমানরা। উইকেটে মাটি কামড়ে পড়ে থেকে ল্যুজ বলের অপেক্ষা করেছিল ওরা আর রান তোলার কোনও সুযোগ হাতছাড়া করেনি। দ্বিতীয় ইনিংসে আবার বিরাট, রোহিত, ঋদ্ধি রান করেছে। পাশাপাশি বাকিরাও টিমকে চাপে পড়তে দেয়নি। বোলিংয়ে ভুবনেশ্বর, শামির দাপটের পাশে প্রয়োজনের সময় অশ্বিন-জাডেজারা উইকেট তুলে নিয়ে নিউজিল্যান্ডকে পাল্টা আঘাত করার সুযোগ দেয়নি।
নিউজিল্যান্ড তাই শুধু ক্রিকেট দক্ষতায় ভারতীয়দের থেকে পিছিয়ে থেকেই হারেনি। হেরেছে নিটোল একটা টিম এফর্টের কাছে। এই টেস্টে কেন উইলিয়ামসনকে না পাওয়াটা ওদের বড় সমস্যা হয়ে ওঠে। ওর অনুপস্থিতিতে ব্ল্যাক ক্যাপদের হয়ে চ্যালেঞ্জটা নেওয়ার আর কেউ ছিল না। ভারতকে ভারতে হারানো সব সময়েই খুব কঠিন কাজ। তার উপর প্রতিপক্ষ যদি টিম এফর্টেও পিছিয়ে থাকে তা হলে তারা তো চার দিনে হারবেই!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy