Advertisement
E-Paper

‘সুপ্রিম কোর্ট যদি তাই মনে করে তবে, বেস্ট অব লাক’

সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিরা যা ভাল মনে করেন! তাঁরা যদি ভাবেন প্রাক্তন বিচারপতিদের হাতে বিসিসিআই-এর উন্নতি হবে, তা হলে ‘বেস্ট অব লাক’। শীর্ষ আদালতের নির্দেশে সোমবার বিসিসিআই-এর সর্বোচ্চ পদ থেকে অপসারিত হওয়ার পর বিবৃতি দিয়ে এমনটাই জানালেন সদ্য প্রাক্তন বোর্ড সভাপতি অনুরাগ ঠাকুর।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ০২ জানুয়ারি ২০১৭ ১৮:২৪
অনুরাগ ঠাকুর ও অজয় শিরকে। -ফাইল চিত্র।

অনুরাগ ঠাকুর ও অজয় শিরকে। -ফাইল চিত্র।

সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিরা যা ভাল মনে করেন! তাঁরা যদি ভাবেন প্রাক্তন বিচারপতিদের হাতে বিসিসিআই-এর উন্নতি হবে, তা হলে ‘বেস্ট অব লাক’। শীর্ষ আদালতের নির্দেশে সোমবার বিসিসিআই-এর সর্বোচ্চ পদ থেকে অপসারিত হওয়ার পর বিবৃতি দিয়ে এমনটাই জানালেন সদ্য প্রাক্তন বোর্ড সভাপতি অনুরাগ ঠাকুর। পাশাপাশি তিনি জানান, এটা কোনও ব্যক্তিগত লড়াই ছিল না। এ লড়াই আসলে ছিল ক্রীড়া সংস্থার স্বশাসনের পক্ষেই।

শীর্ষ আদালতের নির্দেশ নিয়ে সরাসরি মুখ খোলেননি অনুরাগ। ঐতিহাসিক ওই রায়ের প্রেক্ষিতে তিনি টুইট করেন। সেখানে তিনি লিখছেন, ‘‘ভারতের নাগরিক হিসেবে আমি সুপ্রিম কোর্টের রায়কে সম্মান করি। শীর্ষ আদালতের বিচারপতিরা যদি মনে করেন, অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতিদের হাতে বিসিসিআই ভাল কাজ করবে তা হলে তাঁদের জন্য শুভেচ্ছা রইল। আশা করি তাঁদের তত্ত্বাবধানে ভারতীয় ক্রিকেট আরও ভাল করবে।’’ পাশাপাশি ওই বিবৃতিতে তিনি জানিয়েছেন, এত দিন ভারতীয় ক্রিকেটের সেবা করতে পেরে তিনি গর্বিত। অনেক বছর ধরেই প্রশাসনিক এবং উন্নয়নের নিরিখে সব থেকে ভাল সময়ের সাক্ষী থেকেছে ভারতীয় ক্রিকেট। তাঁর মতে, দেশের ক্রীড়া সংস্থাগুলির মধ্যে সেরা বিসিসিআই। এ দেশে বিশ্বের সেরা ক্রিকেট পরিকাঠামো রয়েছে। ভারতের মতো কোনও দেশেই এত প্রতিভাবান খেলোয়াড় নেই। তিনি লিখছেন, ‘‘আমার জন্য এটা কোনও ব্যক্তিগত লড়াই ছিল না। ক্রীড়া সংস্থার স্বশাসনের জন্যই লড়েছি।’’ ওই বিবৃতির শেষে অনুরাগ লিখেছেন, ‘‘ভারতীয় ক্রিকেট এবং ক্রীড়া সংস্থার স্বশাসনের প্রতি ভবিষ্যতেও আমি অঙ্গীকারবদ্ধ থাকব।’’

অনুরাগ ঠাকুরের পাশাপাশি বিসিসিআই-এর সদ্য প্রাক্তন সচিব অজয় শিরকেও তাঁর মত জানিয়েছেন। তাঁকেও এ দিন সুপ্রিম কোর্ট অপসারিত করে। তিনি স্পষ্ট ভাবে জানিয়ে দিয়েছেন, নিজের কাজ নিয়ে তাঁর কোনও অপরাধ বোধ নেই। যা হয়েছে, তার সঙ্গে বিরোধও নেই কোনও। তবে অজয়ের একটাই আশা, যে উচ্চতায় ভারতীয় ক্রিকেট পৌঁছেছে তা যেন বজায় থাকে। তিনি বলেন, ‘‘বিসিসিআই-এ আমার কাজ শেষ। কোনও অপরাধবোধ নেই। কোনও ব্যক্তিগত চাহিদা ছিল না। সুপ্রিম কোর্ট যদি আমাকে সরে যেতে বলে, তা হলে কোনও সমস্যাও নেই। আমার বিশ্বাস, নতুন যাঁরা আসবেন তাঁরা ভালই চালাবেন।’’

বিসিসিআই কি এমন পরিস্থিতি এড়াতে পারত?

সরাসরি কিছু বলতে চাননি অজয়। তবে, বুঝিয়ে দিয়েছেন পুরো ব্যাপারটি অন্য ভাবেও সামনাতে পারত বিসিসিআই। তিনি বলেন, ‘‘দিনের শেষে একাধিক সদস্যদের নিয়ে গঠিত বিসিসিআই। এটা শুধু সভাপতি বা আমার ব্যাপার নয়। এটা তো সকল সদস্যেরই ব্যাপার।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘ইতিহাসে নাম লেখানোর কোনও ইচ্ছে আমার নেই। মানুষ সেটা বিচার করবে। এই পদের সঙ্গে আমার কোনও ব্যক্তিগত সম্পর্কও ছিল না। অতীতেও সরে দাঁড়িয়েছি। এ ছাড়া আরও অনেক কাজ রয়েছে। আমি বোর্ডে ফিরেছিলাম কারণ, ফাঁকা ছিল। আর আমি নির্বাচিত হয়েই এসেছিলাম।’’

আরও খবর: বোর্ড সভাপতির পদ থেকে অনুরাগ ঠাকুরকে অপসারণ করল সুপ্রিম কোর্ট

এই মুহূর্তে যে হেতু বিসিসিআই চালানোর মতো কেউ নেই, সে কারণে আদালত সাময়িক ভাবে সংস্থা চালানোর জন্য সহকারীদের উপর দায়িত্ব তুলে দিয়েছে। বিসিসিআই-এর সব থেকে প্রবীণ সহ-সভাপতি এই মুহূর্তে সভাপতির দায়িত্ব সামলাবেন এবং যুগ্ম সচিব সামলাবেন সচিবের দায়িত্ব। অন্য দিকে, অনুরাগ ঠাকুর ও অজয় শিরকেকে সরিয়ে দেওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই লোঢা কমিটির যাবতীয় সুপারিশ মেনে কাজ করার কথা জানিয়ে দিল অন্ধ্রপ্রদেশ ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন। অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি গোকারাজু গঙ্গা রাজু সোমবার তাঁদের এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন। তিনি বিসিসিআই-এর অন্যতম প্রবীণ সহ-সভাপতি। অন্তর্বর্তীকালীন সভাপতি হিসেবে তাঁর নামও উঠে আসছে। এ ছাড়া দিল্লি ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের সিকে খন্নার নাম নিয়েও জল্পনা শুরু হয়েছে। গঙ্গা রাজু বলেন, ‘‘এটা সাময়িক একটা পদ। যদি সেই দায়িত্বও আসে, তা হলে আমি আমার কাজ সততার সঙ্গেই করব।’’

এর পর কারা চালাবেন বিসিসিআই, আগামী ১৯ জানুয়ারি সেই নির্দেশ ঘোষণা করবে সুপ্রিম কোর্ট। অজয় শিরকে বলেন, ‘‘আশা করি নতুন যাঁরা আসবেন, তাঁরা বিসিসিআইকে একই ভাবে এগিয়ে নিয়ে যাবেন। বিশ্ব ক্রিকেটে ভারতের সম্মানটা বজায় থাকবে। আশা করি ভারতীয় দলও তিন ফর্ম্যাটের ক্রিকেটেই এখনকার উচ্চতা বজায় রাখবে।’’

প্রাক্তন ক্রিকেটার বিষেণ সিংহ বেদী অবশ্য সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন। এই রায়কে ‘ল্যান্ড মার্ক জাজমেন্ট’ হিসেবে ব্যাখ্যা করেছেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘ভারতীয় ক্রিকেটের জন্য দারুণ খবর। সুপ্রিম কোর্টকে ধন্যবাদ। ভারতীয় ক্রিকেট আবার নিজের রাস্তায় ফিরবে। ভারতীয় ক্রিকেটের পাশাপাশি এই রায় ভারতীয় স্পোর্টসের জন্যও ভাল। আইওএ-কে দেখেই বোঝা যাচ্ছে। লজ্জাজনক বিষয়। এখানেও কিছু করা উচিত।’’

Anurag Thakur Ajay Shirke BCCI Supreme Court
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy