Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
সাফ ফুটবল

জওয়ানদের ‘চক দে ইন্ডিয়া’ শুনে ফাইনালে নামছে ভারত

এক দিকে টুর্নামেন্টে একচ্ছত্র শাসনের পরম্পরা রক্ষার তাগিদ। অন্য দিকে চূড়ান্ত ধাপে প্রথম বার পা রেখেই দেশের পতাকা তোলার স্বপ্ন। পাহাড়ের কোলে বুধবার মেয়েদের সাফ ফুটবল ফাইনালের ক্যানভাস এটাই। ২০১০-এ শুরু হওয়া এই টুর্নামেন্টে আগের তিন বারই চ্যাম্পিয়ন ভারত।

শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতিতে ভারতীয় মহিলা ফুটবল টিম। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক

শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতিতে ভারতীয় মহিলা ফুটবল টিম। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক

সৌমিত্র কুণ্ডু
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০৪ জানুয়ারি ২০১৭ ০৩:২৪
Share: Save:

এক দিকে টুর্নামেন্টে একচ্ছত্র শাসনের পরম্পরা রক্ষার তাগিদ। অন্য দিকে চূড়ান্ত ধাপে প্রথম বার পা রেখেই দেশের পতাকা তোলার স্বপ্ন।

পাহাড়ের কোলে বুধবার মেয়েদের সাফ ফুটবল ফাইনালের ক্যানভাস এটাই।

২০১০-এ শুরু হওয়া এই টুর্নামেন্টে আগের তিন বারই চ্যাম্পিয়ন ভারত। বালা দেবীদের সামনে তাই কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়ামে আজ পূর্বসুরিদের তৈরি রেকর্ড অটুট রাখার চ্যালেঞ্জ। প্রতিপক্ষ বাংলাদেশের আবার এটাই প্রথম সাফ ফুটবল ফাইনাল। সাবিনা খাতুনদের সামনে তাই নতুন ইতিহাস গড়ার হাতছানি।

এই টুর্নামেন্টের আগে সাউথ এশিয়ান গেমসে মেয়েদের ফুটবলে ভারতের মুখোমুখি হয়ে ১-৫ গোলে হেরেছিল বাংলাদেশ। কিন্তু সেখান থেকে দারুণ ভাবে উঠে দাঁড়িয়ে চলতি সাফ ফুটবলের গ্রুপ ম্যাচে হটফেভারিট ভারতকে আটকে দেয়। ম্যাচ গোলশূন্য রেখে। সে দিন ভারতীয় মেয়েরা গোটা ম্যাচে যতই আধিপত্য দেখান না কেন, বাংলাদেশিদের আল়ট্রা ডিফেন্স ভেদ করতে পারেননি। অনেক বিশেষজ্ঞই যেটাকে ফাইনালের আগে ভারতের জন্য একটু হলেও অশনি সঙ্কেত দেখছেন।

ভারত অধিনায়ক বালা দেবী, ডংমেই গ্রেসরা অভিজ্ঞতায় এগিয়ে। কিন্তু বাংলাদেশের নবীন শক্তি যে চূড়ান্ত যুদ্ধে কড়া লড়াই ছুড়ে দেবে তা নিয়ে বোধহয় সন্দেহের অবকাশ নেই। তবে সিনিয়রদের আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে বাংলাদেশ দলে বেশ ক’জন অনূর্ধ্ব-১৬ ফুটবলার আছেন। বড় মঞ্চের চাপ তাঁরা কতটা সামলাতে পারবেন সেটাও অবশ্য একটা প্রশ্ন। যতই হোক, গ্রুপ লিগ আর ফাইনাল কখনও এক নয়।

বাংলাদেশ কোচ গোলাম রব্বানি বললেনও, ‘‘আমাদের টার্গেট ছিল ফাইনালে ওঠা। সেটা আমরা করতে পেরেছি। ভারত এই টুর্নামেন্টে সবচেয়ে শক্তিশালী দল। কমলা দেবী, বালা দেবী, ইন্দুমথি এবং অবশ্যই সস্মিতা মালিকের মতো ফুটবলাররা আছে ওদের। ফাইনালে আমাদের মেয়েরা নিজেদের সেরাটা দিয়েই চেষ্টা করবে। তার পরে ঈশ্বর আছেন।’’

ভারতীয় দলের কোচ সাজিদ ইউসুফ দর ফাইনালের আগের দিন রানিডাঙার প্র্যাক্টিস মাঠে তাঁর মেয়েদের ‘রিকভারি সেশনে’ই জোর দিলেন বেশি। গ্রুপ ম্যাচে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে কমলা দেবীর মতো তারকা ফুটবলারকে শুরু থেকে খেলাননি তিনি। নিজের সেই ভুল শুধরে সেমিফাইনালে শুরু থেকেই কমলাকে নামান। কমলা গোলও করেন। অপর স্ট্রাইকার বালা দেবীর পাশপাশি সস্মিতা, গ্রেস দুরন্ত ফর্মে আছেন। ভারতীয় দলের অনুশীলন শেষে এসএসবি-র জওয়ানরা রানিডাঙার মাঠের একধারে তাঁদের ক্যাম্পের ক্লাবহাউসে ব্যান্ড বাজিয়ে বালা দেবীদের ‘চক দে ইন্ডিয়া’ শুনিয়ে উদ্বুদ্ধ করেন।

বালাদের কোচ বললেন, ‘‘আমাদের সঙ্গে আগের ম্যাচে ডিফেন্সিভ খেলে নিজেদের গোল বাঁচিয়েছিল বাংলাদেশ। ফাইনালে ওদের ওই ডিফেন্সিভ নীতি বদলানো উচিত। তা হলে খেলাটা ভাল হবে। এটা তো নক আউট ম্যাচ। তবে বাংলাদেশের সঙ্গে গ্রুপ ম্যাচ থেকে আমরাও শিক্ষা নিয়েছি। সেই মতো ফাইনালে প্রয়োজনীয় পরিকল্পনা নেওয়া হবে।’’

অধিনায়ক বালা দেবী বললেন, ‘‘বেমবেম দেবী অবসর নেওয়ায় তাঁকে ছাড়াই লড়ছি আমরা। এই টুর্নামেন্টের আগে কন্ডিশনিং ক্যাম্পে থেকে উনি আমাদের দলকে অনুপ্রেরণা দিয়েছেন। অন্যান্য বারের মতো এ বারও চ্যাম্পিয়ন হয়ে ওঁর প্রেরণাকে সম্মান জানাবই আমরা।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE