Advertisement
E-Paper

এটাই কি ভারতীয় কিপারের সর্বসেরা ক্যাচ? তুলনায় মার্শের কীর্তি

ছোটবেলায় যে ছবিটা দেখে আমার উইকেটকিপিংয়ে আসার স্বপ্ন শুরু হয়েছিল, বৃহস্পতিবার পুণে টেস্ট ম্যাচে সেটা ফের মনে পড়ে গেল।

দীপ দাশগুপ্ত

শেষ আপডেট: ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০৩:৫৩
বাজপাখির মতো ছোঁ মেরে ঋদ্ধিমানের অবিশ্বাস্য ক্যাচ! ছবি: সংগৃহীত।

বাজপাখির মতো ছোঁ মেরে ঋদ্ধিমানের অবিশ্বাস্য ক্যাচ! ছবি: সংগৃহীত।

ছোটবেলায় যে ছবিটা দেখে আমার উইকেটকিপিংয়ে আসার স্বপ্ন শুরু হয়েছিল, বৃহস্পতিবার পুণে টেস্ট ম্যাচে সেটা ফের মনে পড়ে গেল।

ছবিটা অস্ট্রেলিয়ার কিংবদন্তি উইকেটকিপার রডনি মার্শের দুর্ধর্ষ একটা ক্যাচের। ১৯৭৫ বিশ্বকাপ সেমিফাইনালে গ্যারি গিলমোরের বোলিংয়ে রড মার্শ যে ক্যাচ নিয়ে আউট করেছিল টনি গ্রেগকে। টনি গ্রেগ খুব জোরে স্ল্যাশ করেছিলেন বলটা। ব্যাটে লেগে প্রথম স্লিপের দিকে যাওয়া বল মার্শ ডান দিকে অনেকটা ঝাঁপিয়ে তুলে নেন। মার্শ যখন বলটা তালুবন্দি করছেন, তাঁর গোটা শরীরটা হাওয়ায় আর ঠিক মাঠের সমান্তরালে শূন্যে ভাসছে পা দু’টো।

যে কেনও উইকেটকিপারের কাছে এ রকম ক্যাচ স্বপ্নের মতো।

আরও পড়ুন: পিচ মোটেই খলনায়ক নয়, বুঝিয়ে দিলেন উমেশ

অবিশ্বাস্য লাগছিল কারণ, এটা ভারতের পিচ। অস্ট্রেলিয়া বা দক্ষিণ আফ্রিকার নয়। যেখানে বল ক্যারি করবে। উইকেটকিপার অনেকটা দূরে দাঁড়ানোর সুবিধে পাবে। উপমহাদেশের উইকেটে অস্ট্রেলিয়া বা দক্ষিণ আফ্রিকার মাঠের চেয়ে অনেকটা সামনে এসে দাঁড়াতে হয় উইকেটকিপারকে। বাউন্স সে ভাবে থাকে না বলে বোলার বলতেই থাকে আগে এসো, আরও আগে এসো। তাই ঋদ্ধির জন্য ক্যাচটা নেওয়া কত কঠিন ছিল বোঝা যাচ্ছে।

সুপারম্যান ঋদ্ধিমান

অবিশ্বাস্য লাগছিল, কারণ উমেশের বলটা ওকিফ ব্যাকফুটে স্ল্যাশ করেছিল খুব জোরে। ব্যাকফুটে আসা মানে ঋদ্ধির সঙ্গে ও’কিফের দূরত্ব আরও এক গজ কম ছিল শটটা মারার সময়। মানে বলটা ব্যাটে লাগার পরে আরও তাড়াতাড়ি এসেছে ঋদ্ধির কাছে। মানে বোঝাই যাচ্ছে ব্যাটে লাগার পর ঋদ্ধির কাছে সময় কত কম ছিল।

শুধু তাই নয়, বলটার গতিও কিন্তু তখন প্রচণ্ড ছিল। ক্যাচটা যখন ঋদ্ধি ধরছে, বলটার গতিপথ ছিল মাটি থেকে উপরের দিকে। মাটির দিকে নয়। আমার তো মনে হয় ঋদ্ধি বলটা ক্যাচ না নিলে দু’টো ড্রপে বাউন্ডারি হয়ে যেত। নিজে উইকেটকিপার বলে জানি, এ রকম গতিতে আসা বল ডাইভ দিয়ে ধরা ভীষণ শক্ত।

দেখুন সেই ভিডিও

নিজের অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, মাঠে এক জন উইকেটকিপারের কাজ কতটা কঠিন। একটা ভালো ক্যাচ নিলে লোকে বলবে, ওটা তো উইকেটকিপারের কাজই। কিন্তু একটু ভুলচুক হলেই সমালোচনার ঝড় বয়ে যাবে। তাই উইকেটকিপার সবসময় চায় তাঁকে নিয়ে যেন দিনের শেষে কোনও কথা না হয়। কথা না হলেই বুঝতে হবে উইকেটকিপারের পারফরম্যান্স ভাল হয়েছে সে দিন। সেখানে একটা দুর্ধর্ষ ক্যাচ নিয়ে একবারে হইহই ফেলে দিয়েছে ঋদ্ধি।

১৯৭৫ বিশ্বকাপ সেমিফাইনালে টনি গ্রেগকে ফেরানো মার্শের সেই ক্যাচ।

শুধু অবিশ্বাস্য ক্যাচটা নেওয়াই তো নয়, গোটা দিন ধরে ঋদ্ধি কী রকম কিপিং করেছে সেটা আর একটা জিনিস দেখলে বোঝা যাবে। এ রকম একটা পিচ যেখানে বল প্রথম দিন থেকেই ঘুরছে, সেখানে ৯৪ ওভার বল করার পরেও ঋদ্ধি একটাও বাই রান দেয়নি, অতিরিক্ত ১৫ রান এই ইনিংসে দিয়েছে ভারত শুধু লেগ বাই আর নো বলে।

এর পর আর বলার কী বাকি থাকে!

Rodney Marsh Wriddhiman Saha Indian wicket keeper
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy