অনুশীলনে মোহনবাগান। -ফাইল চিত্র।
এক জন বল নিয়ে দৌড় শুরু করছেন বক্সের বাইরে থেকে। অন্য জন তাঁর থেকে বল কেড়ে নেওয়ার চেষ্টায়। কাটিয়ে গোল করতে পারলে উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়ছে বাগান জনতা। উল্টোদিকের প্লেয়ার বল কেড়ে বাইরে পাঠালেও উচ্ছ্বাস। শেষ বেলায় এমনই অনুশীলন দেখা গেল সঞ্জয় সেনের শিবিরে। কখনও বল নিয়ে গোলমুখী দৌড় শুরু করা জেজে লালপেখলুয়ার পা থেকে বল কাড়ছেন সৌভিক ঘোষ তো কখনও সনির পিছনে লাগিয়ে দেওয়া হচ্ছে এডুকে। কেউ গোল করতে পারছেন তো কেউ বাইরে মারছেন। কখনও আটকে দিচ্ছেন স্বয়ং গোলকিপার। ডার্বির আগে দলের সব পজিশনকে দেখে নিলেন সঞ্জয়। এই অনুশীলন দারুণ উপভোগ করলেন ফুটবলাররাও। কোচ সঞ্জয় সেনের কাছে ডার্বি আই লিগের স্রেফ আর একটি ম্যাচ। অনুশীলন শেষে সাংবাদিকদের ফোন করে বিরক্ত না করার অনুরোধ জানানোর পাশাপাশি বলে দিলেন, ‘‘ডার্বির একটা গুরুত্ব আছে ঠিকই। কিন্তু আই লিগের ফলাফল এর উপর নির্ভর করে না। যে ভাবে সব ম্যাচই আমরা জেতার জন্য নামি, সে ভাবে এই ম্যাচও জেতার জন্যই নামব।’’
আরও খবর: ডার্বির আগে প্রতিপক্ষকে সমীহ করেই জয়ের হুঙ্কার দিয়ে রাখলেন মর্গ্যান
কোচের নির্দেশের অপেক্ষায় কাটসুমি-সনিরা। মোহনবাগান মাঠে।
আজ মোহনবাগান অনুশীলনের চিত্র অনেকটা এই রকম- আনাস প্র্যাকটিস করলেন না, চোট সারিয়ে অনুশীলনে নামলেন এডু, রাজু-কিংশুক এখনও চোটের তালিকায়, সনি ফিরেছেন গত ম্যাচেই, তবে অনুশীলনে কিছুটা মন্থর দেখাল। যদিও তুরুপের তাসকে লুকিয়ে রাখার স্ট্র্যাটেজিও হতে পারে। ডার্বির আগে এই সব নিয়ে মোহনবাগান শিবিরে এখন মিশ্র অনুভূতি। যদিও কোচ সঞ্জয় সেন নিজের ছন্দেই। অনুশীলনে কখনও স্ট্রাইকারের পিছনে লাগিয়ে দিলেন ডিফেন্ডারদের। বললেন, ‘‘এটা ডিফেন্ডারদের রানিং প্র্যাকটিস। বাকিটা আপনারা বুঝে নিন। আমি তো আর ক্লোজড ডোর প্র্যাকটিস করিনি।’’
শক্তির বিচারে এমনিতেই বাগান রক্ষণ কিছুটা পিছিয়ে। গোল যেমন করেছে দলের ফরোয়ার্ড লাইন, গোল হজমও করতে হয়েছে সঞ্জয় সেনের রক্ষণকে। সেটা মাথায় রেখেই নিজের রক্ষণ সামলাচ্ছেন বাগান কোচ। আনাসের দু’দিন আগে অনুশীলন না করে পায়ে বরফ লাগিয়ে বসে থাকা যে শুধুই বিশ্রাম সেটা জানিয়ে দিলেন দু’জনেই। কিংশুক, রাজুদের অবর্তমানে রক্ষণের অনেকটা ব়ড় দায়িত্ব থাকবে তাঁরই ওপর।। যদিও বাগান কোচের হিসেব বলছে, ‘‘ইস্টবেঙ্গলও তিন গোল হজম করেছে। আমরাও। ওরা আমাদের থেকে বেশি গোল করেছে। আমরা একটা ম্যাচ কম খেলেছি এএফসি কাপের জন্য।’’ যদিও ইস্টবেঙ্গলের প্রশংসাই শোনা গেল সঞ্জয় সেনের মুখে, ‘‘গতবারের তুলনায় অনেক ভাল দল ইস্টবেঙ্গল। সবাই ভাল খেলছে।’’
গার্সিয়ার ফিটনেস ট্রেনিংসে মোহনবাগান দল।
মোহনবাগান, ইস্টবেঙ্গল দুই দলই এখনও এই আই লিগে কোনও ম্যাচ হারেনি। একটি করে ড্র রয়েছে শুধু। যদিও সঞ্জয় সেনের মতে, আই লিগের ১০টি দলই ভাল। যে কোনও দল যে কোনও দলের বাধা হয়ে উঠতে পারে। তবে ডার্বির প্রতিপক্ষকেই তিনি এই টুর্নামেন্টের সেরা টিম বলছেন। ‘‘আই লিগের সব থেকে শক্তিশালী দল ইস্টবেঙ্গল। আর তা ছাড়া মর্গ্যানের কোচিংয়ের প্রতি আমার আলাদা শ্রদ্ধা রয়েছে’’- বলে দিলেন বাগান কোচ।
এডুর ফেরা নিয়ে ডার্বির দু’দিন আগেও নিশ্চয়তা দিতে পারলেন না তিনি। মাঠ সমস্যা, টিকিট সমস্যাকে পিছনে ফেলে টিম সঞ্জয় সেন এখন পাখির চোখ করেছেন ডার্বিকেই। যদি ক্লাবের পক্ষ থেকে বলে দেওয়া হল, টিকিটে যে ভাবে মোহনবাগানের নামের জায়গায় এমএমবি লেখা হয়েছে তার জন্য তারা ফেডারেশনকে চিঠি দিচ্ছে। এদিকে, শিলিগুড়ির মাঠ নিয়ে গতবার নানা প্রশ্ন উঠেছিল। সেই প্রশ্ন তুলেছিলেন খোদ প্লেয়াররাই। কিন্তু কোচ জানিয়ে দিলেন তাঁর মাঠ নিয়ে কোনও সমস্যা নেই। সে ন্যাড়া মাঠ দিলেও খেলে দেবে মোহনাগান। তবে দলের অনেক কিছু প্রমাণ করার রয়েছে বলেই মনে করেন তিনি। বলেন, ‘‘ইস্টবেঙ্গলের অনেক কিছু প্রমাণ করা হয়ে গিয়েছে।ওদের বিদেশি নির্বাচন ভাল হয়েছে। জিতছে। আমাদের এখনও অনেক কিছু প্রমাণ করার আছে।’’ তবে সেই প্রমাণের জন্য কোনও এক জনের ওপর নির্ভর করতে নারাজ তিনি। তেমনটা কখনওই করেন না। তাই সনি নিয়ে প্রশ্ন তুললে তাঁর একটাই বক্তব্য, ‘‘টিম জেতা দিয়ে কথা। তাতে সনি গোল করল না শুভাশিস, আমার মাথাব্যথা নেই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy